শিরোনামঃ-

» বৃদ্ধ বাবা ও ছেলেকে কান ধরে উঠ-বস করে শাস্তি দিয়েছে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও পুলিশ

প্রকাশিত: ১৮. জুন. ২০১৬ | শনিবার

সিলেট বাংলা নিউজ ডেস্কঃ মোবাইল চুরির অভিযোগ তুলে রাজশাহীর তানোরের একটি গ্রামে শালিসি বৈঠকে বৃদ্ধ বাবা ও ছেলেকে চড়-থাপ্পড়ের পর কান ধরে উঠ-বস করিয়ে শাস্তি দেয়া হয়েছে।

গত মঙ্গলবার সকালে উপজেলার পারিশো-দুর্গাপুর এলাকায় স্থানীয় কামরাগাঁ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, এক নারী মেম্বার ও থানা পুলিশের উপস্থিতিতেই এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

শাস্তির শিকার উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা সাবেক মেম্বার বৃদ্ধ ওসমান আলী ও তার ছেলে মতিউর রহমান। বৃহস্পতিবার বাবা ও ছেলের একসঙ্গে কান ধরে উঠ-বস করানোর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে এনিয়ে তোলপাড় শুরু হয়।

তবে সাবেক ওই মেম্বার অভিযোগ করেন তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। তিনি কান ধরেননি বলে অস্বীকার করলেও ছেলেকে কান ধরানো হয়েছে বলে দাবি করেন। যদিও ফেসবুকের ছবিতে বাবা ছেলের কান ধরার ছবি প্রকাশ করা হয়েছে।

তবে এ ঘটনা পুরোপুরি এড়িয়ে যান তানোরের কামারগা ইউপি চেয়ারম্যান মোসলেম উদ্দিন ও তানোর থানার  ওসি আব্দুর রাজ্জাক। চেয়ারম্যান মোসলেম উদ্দিন বলেন, এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। কোথাও ঘটে থাকলেও তিনি উপস্থিত ছিলেন না। পরে শুনেছেন স্থানীয়রা এ কাণ্ড ঘটিয়েছে।

তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাকও এ ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনার খবর তিনি পাননি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলার তালন্দ ইউপির সাবেক মেম্বার ওসমান আলী ও তার ছেলে মতিউর রহমান মসজিদের জন্য অর্থ আদায় করতে মঙ্গলবার সকালে বের হন। তারা উপজেলার পারিশো গ্রামের শফু মন্ডলের বাড়িতে গিয়ে দেখেন বাড়িতে কেউ নেই।

কিছুক্ষণ পরেই বাড়ির লোকজন এসে তাদের মোবাইল চুরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে আটক করে। এরপর চুরির অভিযোগ তুলে আশেপাশের আরো লোক জড়ো করেন শফুর পরিবারের সদস্যরা। এসময় বাপ-ছেলেকে ধরে মারপিটও করা হয়।

একপর্যায়ে সেখানে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ওই ওয়ার্ডের নারী মেম্বার আসেন। পরে চেয়ারম্যান মোসলেম উদ্দিনের উপস্থিতিতে সালিশ বৈঠক বসে। শালিসে ওসমান আলী ও তার ছেলে মতিউর রহমানের নিকট থেকে জোর করে চুরির স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়। পরে তাদের চর-থাপ্পড় শেষে ১০ বার কান ধরে উঠ-বস করানো হয়।

কামারগাঁ ইউপি চেয়ারম্যান মোসলেম উদ্দিন জানান, তিনি সেখানে ছিলেন না। খবর পেয়ে পুলিশকে জানিয়েছিলেন। থানা পুলিশ আসার আগেই স্থানীয় লোকজন তাদের কান ধরিয়ে উঠবস করিয়ে ছেড়ে দেয়। তবে থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সামশুল হক জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই স্থানীয় চেয়ারম্যান বিচার শেষ করেন।

এদিকে এ নিয়ে কেউ কোনো অভিযোগ না করলেও ফেসবুকে বাবা ছেলের একসঙ্গে কানধরা ছবি আপলোড করায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনও নড়েচড়ে বসেছে। ওসি জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৭০৬ বার

Share Button

Callender

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930