শিরোনামঃ-

» পরিকল্পনা করেই স্ত্রীকে হত্যা করেছেন এসপি বাবুল আক্তার!

প্রকাশিত: ২৬. জুন. ২০১৬ | রবিবার

সিলেট বাংলা নিউজ ডেস্কঃ এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে হত্যার পরিকল্পনার ছক এসপি নিজেই কেটেছিলেন। পুলিশের হাতে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে বাবুল এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন বলে গোয়েন্দা পুলিশের সূত্রে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। শনিবার বিভিন্ন অনলাইন গণমাধ্যম এমন খবর প্রচার করেছে।

সূত্র জানিয়েছে, পারিবারিক কলহের জের ধরে নিজেই পরিকল্পনা করে স্ত্রীকে হত্যা করিয়েছেন বাবুল আক্তার। চট্টগ্রামের দামপাড়ার এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে তার স্ত্রীর সম্পর্ক ছিল, যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় বলে জিজ্ঞাসাবাদে বাবুল জানিয়েছেন বলেও নিশ্চিত করে সূত্র। কঠোর গোপনীয়তায় বাবুল আক্তারের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

শুক্রবার দিবাগত রাত থেকেই বাবুল আক্তারকে নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। তিনি এখন কোথায় আছেন তার সঠিক অবস্থান বলছেন না কেউ। এছাড়া তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন নাকি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তাকে নিয়ে গেছে সে ব্যাপারে স্পষ্ট করে কোন কথা বলছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

তবে শনিবার সকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল গণমাধ্যমকে বলেছেন, বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন কি না সে বিষয়ে মন্ত্রী কিছুই বলেননি। এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাত পৌনে ২টার সময়ে রামপুরার বনশ্রীর শ্বশুরের বাসা থেকে বাবুল আক্তারকে নিয়ে যায় পুলিশ।

বাবুল আক্তারের শ্বশুর পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত পরিদর্শক মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঈনুল ইসলাম ও মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন আমার বাসায় এসে আইজিপি স্যার ডেকেছেন এমন কথা বলে বাবুল আক্তারকে নিয়ে যান।

তিনি আরও বলেন, এর আগেও ২ বার পুলিশ বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে গেছে। তবে তখন সে তার ফোন রিসিভ করে কথা বলত কিন্তু গতকাল রাত থেকে বাবুল আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। একাধিক বার ফোন করলেও কেউ রিসিভ করছেন না।’ বাবাকে না দেখে বাবুল আক্তারের ২ সন্তানই কান্নাকাটি করছে বলে জানান মোশাররফ হোসেন।

এদিকে রাত থেকেই বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্রে জানা যাচ্ছে আরও কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। যা জঙ্গি, সোনা চোরাচালানি, ইয়াবা ব্যবসায়ীদের দিক থেকে সন্দেহের তীর ঘুরিয়ে দিচ্ছে খোদ বাবুল আক্তারের দিকেই। তবে এখনও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ খোলেনি সংশ্লিষ্ট কেউই।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার (দক্ষিণ) মো. কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।

তবে নগর পুলিশের দুজন শীর্ষ কর্মকর্তা এবং তদন্ত সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে মিতু হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া ৪ জনের প্রত্যেককে আটক করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। আটক ৪ জনের মধ্যে ২ জনই বাবুল আক্তারের সোর্স।

সূত্র জানায়, আটকের পর ৪ জনের আলাদা আলাদা করে জবানবন্দিও নিয়েছে। এতে তারা হত্যার দায় স্বীকার করেছে। এছাড়া খুনের নির্দেশ দাতাকে নিয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্যও তারা প্রকাশ করেছে। মূলত এরপরই পুলিশ বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে।

উল্লেখ্য, গত ৫ জুন চট্টগ্রামের জিইসি মোড়ে শিশু সন্তানের সামনে কুপিয়ে ও গুলি করে পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে হত্যা করা হয়। পরের দিন ভোরে নগরীর বাদুরতলা বড় গ্যারেজ এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা মোটরসাইকেল উদ্ধার করে পুলিশ।

ঘটনার পর পুলিশ দাবি করে বাবুল আক্তারের জঙ্গিবিরোধী ভূমিকার কারণেই তার স্ত্রীকে হত্যা করা হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে সারাদেশে শুরু হয় জঙ্গিদের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কথিত ক্রসফায়ারে নিহত হয় কমপক্ষে ৬ জঙ্গি।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৪৫৯ বার

Share Button

Callender

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930