শিরোনামঃ-

» ভিসির পদত্যাগের দাবি থেকে সরে এসেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ

প্রকাশিত: ০১. জুলাই. ২০১৬ | শুক্রবার

সিলেট বাংলা নিউজ ডেস্কঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবি থেকে সরে এসেছে ছাত্রলীগ।

ছাত্রলীগের দাবি, তারা ভিসির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেননি। তাদের আন্দোলন ছিল ইতিহাস বিকৃতিকারীদের বিরুদ্ধে।

শুক্রবার রাত সোয়া ৯টায় উপাচার্যের বাসভবন থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন।

তিনি বলেন, আমাদের আন্দোলন ভিসি স্যারের বিরুদ্ধে ছিল না। ভুল তথ্য দেওয়ার প্রতিবাদে আমরা আমাদের আদর্শের জায়গা থেকে আন্দোলন করেছি। আমাদের কর্মসূচি এখানেই শেষ।

তিনি আরো বলেন, জড়িতদের ১ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধেও তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এর আগে রাত সোয়া ৮টার দিকে ভিসির বাসায় যান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে শুক্রবার প্রকাশিত স্মরণিকায় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৯৫ বছর উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব সৈয়দ রেজাউর রহমান ‘স্মৃতি অম্লান’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ লেখেন।

এতে তিনি মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের পরিচিতি তুলে ধরতে গিয়ে লেখেন, ‘জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি, সাবেক সেনাপ্রধান ও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।’

সেই সঙ্গে স্মরণিকার ১৩ নম্বর পৃষ্ঠায় জগন্নাথ হলের বর্ণনা দিতে গিয়ে লেখা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যালঘু তথা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান সম্প্রদায় এবং উপজাতি ছাত্রদের জন্য এই হল প্রতিষ্ঠিত হয়।

দুপুরে টিএসসিতে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের আলোচনা সভা চলাকালে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রেজাউর রহমানের লেখাটি ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার দৃষ্টিতে আসে।

এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ছাত্রলীগ নেতা ও শিক্ষকরা প্রতিবাদ জানান। উপাচার্য তাৎক্ষণিক ওই স্মরণিকা বাজেয়াপ্ত ও স্মরণিকা কমিটি বাতিল ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানান।

সভা শেষে দুপুর ১২টা থেকে পৌনে ১টা পর্যন্ত ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রেজাউর রহমানকে তার কার্যালয়ে তালাবন্দি করে রাখেন।

তারা স্মরণিকায় আগুন ধরিয়ে দেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আমজাদ আলী ঘটনাস্থলে গিয়ে রেজাউর রহমানকে মুক্ত করে নিয়ে যান।

ওই নিবন্ধের প্রতিবাদে আজ জুমার নামাজের পর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা মধুর ক্যান্টিন থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।

তারা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে তার বিরুদ্ধে নানা ধরনের শ্লোগান দিতে থাকেন এবং তার পদত্যাগ দাবি করেন। দুপুর আড়াইটার দিকে উপাচার্য আরেফিন সিদ্দিক গাড়িতে করে তার বাসভবনের সামনে এলে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা হামলা চালিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করেন।

একপর্যায়ে তারা উপাচার্যের গাড়িতে কিল-ঘুষি দেন এবং জুতা দিয়ে আঘাত করেন। এ সময় উপাচার্যের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশের এক উপ-পরিদর্শক (এসআই) তাকে রক্ষার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাকে মারধর করেন। উপাচার্য গাড়ির মধ্যে বসে থাকায় তিনি আহত হননি।

বিকেল ৫টার দিকে ভিসি তার বাসভবনের ভেতরে খোলা মাঠে সাংবাদিকদের বলেন, স্মরণিকার প্রকাশের দায়-দায়িত্ব ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ রেজাউর রহমানের।

এ ঘটনার জেরে স্মরণিকার প্রকাশক ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ রেজাউর রহমানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়ার ঘোষণা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৪৯৬ বার

Share Button

Callender

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930