শিরোনামঃ-

» তুরস্কে সেনা অভ্যুত্থানচেষ্টা, নিহত ২০০

প্রকাশিত: ১৭. জুলাই. ২০১৬ | রবিবার

সিলেট বাংলা নিউজ ডেস্কঃ তুরস্কের সেনাবাহিনীর একটি অংশ দেশটির ক্ষমতা দখলের ঘোষণা দিয়েছে। সরকারি টেলিভিশন স্টেশন, পার্লামেন্ট ভবনসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে নিয়েছে তারা।

এদিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে বিদ্রোহীদের সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে ২০০ জন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

তবে অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা ব্যর্থ করে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। শুক্রবার অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করা হলে ছুটিতে থাকা এরদোগান রাতেই ইস্তাম্বুলে ফিরে আসেন।

প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিমের বরাত দিয়ে তুরস্কের টেলিভিশন চ্যানেল সিএনএন-তুর্ক জানিয়েছে, ফাস্ট আর্মি ডিভিশনের কমান্ডার জেনারেল উমিত দানদারকে ভারপ্রাপ্ত সেনা প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া দেশটির সরকারি বার্তা সংস্থা আনাদুলু জানিয়েছে, প্রায় দুই হাজার বিদ্রোহী সেনা সরকারি বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।

বিদ্রোহের চেষ্টায় জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচজন জেনারেল ও ২৯ জন কর্নেল পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছেন প্রেসিডেন্ট এরদোগান। আনাতোলিয়া বার্তা সংস্থা জানায়, সেনাপ্রধান জেনারেল হুলুসি আকারকে আঙ্কারার কাছেই বিমানঘাঁটি থেকে বন্দি অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।

এদিকে প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সংঘর্ষে ১৯৪ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে ৪১ জন পুলিশ, ৪৭ জন বেসামরিক নাগরিক, ২ সেনা কর্মকর্তা এবং অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ১০৪ জন সেনা সদস্য রয়েছে।

এর আগে অভ্যুত্থানকারী সেনারা পুলিশের স্পেশাল ফোর্সের সদর দপ্তরে হেলিকপ্টার দিয়ে হামলা চালালে নিহত হয়েছেন ১৭ পুলিশ কর্মকর্তা। তবে ওই হেলিকপ্টারটিকে ভূপাতিত করা হয়েছে বলে প্রেসিডেন্টের সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে। শনিবার দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে বিপথগামী সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে ১ হাজার ১৫৪ জন আহত হয়েছে বলে আনাদুলু নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম বলেছেন, পরিস্থিতি এখন সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। রাজধানী আঙ্কারার আকাশে বিমান উড্ডয়ন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিদ্রোহীরা যেসব হেলিকপ্টার ব্যবহার করছে, সেনাবাহিনীকে সেগুলো ভূপাতিতের নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।

অভ্যুত্থানকে দেশদ্রোহিতা আখ্যা দিয়ে এরদোগান বলেছেন, এর পরিকল্পনাকারীদের চড়া মূল্য দিতে হবে।

এর আগে এরদোগানের আহ্বানে হাজার হাজার সমর্থক রাস্তায় নেমে আসেন। বিক্ষোভের মুখে সেনাবাহিনীর বিদ্রোহী অংশ ইস্তাম্বুল বিমানবন্দর থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়।

শুক্রবার রাতে সেনাবাহিনীর একটি অংশ রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম টিআরটি দখল করে। সেখান থেকে এক ঘোষক বিদ্রোহীদের দেওয়া বিবৃতি পাঠ করেন।

এতে বলা হয়, বর্তমান সরকার গণতান্ত্রিক ও সেক্যুলার শাসনের অবসান ঘোষণা করছে। শিগগিরই নতুন সংবিধান করা হবে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ভবনের একটি সূত্র জানিয়েছে, সেনাবাহিনীর হাইকমান্ড থেকে এ বিবৃতি অনুমোদন দেওয়া হয়নি।

এ ছাড়া বিদ্রোহী অংশ সেনা সদর দপ্তরে যেসব কর্মকর্তাকে জিম্মি করে রেখেছে, তাদের মধ্যে সেনাপ্রধান জেনারেল হুলুসি আকারও রয়েছেন। রাতেই বিদ্রোহীরা ইস্তাম্বুলের সঙ্গে দেশের অন্য অংশের ব্রিজ বন্ধ করে দেয়।

সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, এখন থেকে একটি ‘পিস কাউন্সিল’ দেশ পরিচালনা করবে। দেশে কারফিউ এবং মার্শাল ল জারি করা হয়েছে। তবে বিদ্রোহের পেছনে সেনাবাহিনীর কে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তা এখনো জানা যায়নি।

রাতে ইস্তাম্বুলের গুরুত্বপূর্ণ অংশে সেনাদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে। আঙ্কারায় অনেক নিচ দিয়ে জঙ্গিবিমান উড়ে গেছে। এ ছাড়া ইস্তাম্বুলের তাকসিম স্কয়ারে দুটি বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে। সম্প্রচার মাধ্যম সিএনএন তুর্ক ভবন সেনাবাহিনী দখল করে নেয় এবং এর লাইভ সম্প্রচারও বন্ধ করে দেয়।

অভ্যুত্থানকারী সেনারা পুলিশের স্পেশাল ফোর্সের সদর দপ্তরে হেলিকপ্টার দিয়ে হামলা চালালে নিহত হয়েছে ১৭ পুলিশ কর্মকর্তা। তবে প্রেসিডেন্টের সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, এফ-১৬ যুদ্ধবিমান থেকে গুলি ছুড়ে ওই হেলিকপ্টারটি ভূপাতিত করা হয়েছে।

এদিকে ইস্তাম্বুলের রাস্তায় নেমে আসা এরদোগান সমর্থকদের লক্ষ্য করে সেনাবাহিনী গুলি ছুড়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

আহতদের অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে বার্তা সংস্থাটির এক চিত্রসাংবাদিক জানিয়েছেন। তুরস্কে পার্লামেন্ট ভবনেও বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে ট্যাংক মোতায়েন করেছে বিদ্রোহীরা।

সেই ট্যাংক থেকেই গোলাবর্ষণ করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, এমপিরা নিরাপদ স্থানে লুকাতে সক্ষম হয়েছেন।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৫৪২ বার

Share Button

Callender

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930