শিরোনামঃ-

» মানুষের তৈরি সবচেয়ে গভীর গর্ত

প্রকাশিত: ২৮. জুলাই. ২০১৬ | বৃহস্পতিবার

সিলেট বাংলা নিউজ ডেস্কঃ পৃথিবী এমন একটা গ্রহ যার বিস্ময়ের শেষ নেই। এর সৃষ্টিলগ্ন থেকে আজ অবধি বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন ঘটছে প্রতিনিয়ত। আর এর সঙ্গে সঙ্গে রহস্যময় অনেক সৃষ্টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হচ্ছে।

এমন রহস্যময় জায়গা আছে যেখানে এখন পর্যন্ত মানুষ পৌঁছাতে পারে নাই বা মানষের আওতার বাইরে। রহস্যময় এসব কিছুই প্রাকৃতিক যাকে আমরা বিস্ময়করও বলে থাকি।

কিন্তু এসব প্রাকৃতিক রহস্যময় জায়গা বা সৃষ্টির বাইরে আরো অনেক আশ্চর্যজনক জায়গা রয়েছে যা মানুষের সৃষ্টি। এমনই একটা মানব সৃষ্ট আশ্চর্যজনক জায়গা হলো, কোলা সুপারডিপ বোরহোল যা পৃথিবীর কৃত্রিম গভীরতম স্থান হিসেবে পরিচিত।

কোলা সুপারডিপ বোরহোল রাশিয়ার পেচেংস্কি জেলার কোলা উপদ্বীপে অবস্থিত যা একটি বৈজ্ঞানিক খনন প্রকল্প হিসেবে খনন করা হয়েছিল। এই খনন এর উদ্দেশ্য ছিল কৃত্রিমভাবে যতদূর সম্ভব হয় পৃথিবীর কেন্দ্রের দিকে খনন করা।

১৯৭০ সালের ২৪ মে এর খনন কাজ শুরু করা হয় ১৫,০০০ মিটার (৪৯,০০০ ফুট) খননের লক্ষ্যে। ১৯৭৯ সালের ৬ জুন ৯,৫৮৩ মিটার (৩১,৪৪০ ফুট) গভীরতার বিশ্ব রেকর্ডটি ভেঙ্গে যায় কারণ এর আগ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশহিতা কাউন্টির বের্থা রোজার হোল ছিল শীর্ষ স্থানে।

১৯৮৩ সালে কোলা সুপারডিপ বোরহোলের খনন কাজ ১২,০০০ মিটার পর্যন্ত করা হয় এবং এক বছরের জন্য বন্ধ রাখা হয় এটি উদযাপনের জন্য। এরপর ২৭ সেপ্টেম্বর ১৯৮৪ সালে ১২,০৬৬ মিটার (৩৯,৫৮৭ ফুট) খননের পর হঠাৎ করেই ৫,০০০ মিটার (১৬,০০০ ফুট) সেকশনের ড্রিলিং স্ট্রিংটি কুপের মধ্যে পড়ে যাওয়ায় কুপের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। আর এর জন্য পরবর্তীতে ৭,০০০ মিটার (২৩,০০০ ফুট) থেকে আবার খনন করতে হয়েছিল।

১৯৮৯ সাল নাগাদ গর্তটি ১২,২৬২ মিটার (৪০,২৩০ ফুট) পর্যন্ত খনন করা হয়। ধারণা করা হয়েছিল ১৯৯০ সাল নাগাদ ১৩,৫০০ মিটার (৪৪,৩০০ ফুট) এবং ১৯৯৩ সাল নাগাদ ১৫,০০০ মিটার (৪৯,০০০ ফুট) খনন করে লক্ষ্যে পৌঁছাবে।

কিন্তু পৃথিবীর কেন্দ্রের দিকে ক্রমশ তাপমাত্রা বাড়তে থাকে যার ফলে ১২,২৬২ মিটার (৪০,২৩০ ফুট) এর গভীরে খনন করা সম্ভব হয়নি। কারণ ১৫,০০০ মিটার (৪৯,০০০ ফুট) পর্যন্ত খনন করতে প্রায় ৩০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা মোকাবিলা করতে হতো যেখানে ড্রিলিং বিট অচল হয়ে যেত। অবশেষে ১৯৯২ সালে খনন কাজটি বন্ধ হয়ে যায়।

এই খনন কাজে প্রথমে উরালমাস-৪ই ড্রিলিং রিগ ব্যবহার করা হয়েছিল। তারপর উরালমাস-১৫০০০ সিরিজের রিগ ব্যবহার করা হয়।

২০০৮ সাল পর্যন্ত গভীরতার পরিমাপে এবং বোরের বিচারে এটিই ছিল মানুষের তৈরি পৃথিবীর সর্ববৃহৎ বোরহোল, কিন্তু ২০০৮ সালে কাতারের আল শাহীন তেল খনির গভীরতা পরিমাপ করা হয় ১২,২৮৯ মিটার (৪০,৩১৮ ফুট) দৈর্ঘ এবং পরবর্তীতে এর তিন বছর পর রাশিয়ারই শাখালিন দ্বীপের উপকূলবর্তী শাখালিন-আই ওডোপ্টু ওপি-১১ এর দৈর্ঘ পরিমাপ করা হয় ১২,৩৪৫ মিটার (৪০,৫০২ ফুট)।

 

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৪৮২ বার

Share Button

Callender

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930