শিরোনামঃ-

» কাঁদুনে গ্যাস ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করেছে রামপাল কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র বিরোধী মিছিল

প্রকাশিত: ২৮. জুলাই. ২০১৬ | বৃহস্পতিবার

সিলেট বাংলা নিউজ ডেস্কঃ রামপাল কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ বন্ধের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে মিছিল কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্দেশে তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়েছে। জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি শিশুপার্কের সামনে প্রথম পুলিশি ব্যারিকেডের মুখে পড়ে। ব্যারিকেডে ভেঙে শাহবাগ পেরিয়ে রূপসী বাংলা হোটেলের সামনে পৌঁছলে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে। এ সময় মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। ছত্রভঙ্গ নেতাকর্মীরা পরীবাগের দিককার রাস্তায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখায়।

মিছিলে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ প্রসঙ্গে পুলিশের রমনা জোনের ডিসি মারুফ হাসান, প্রেস ক্লাব থেকে জাতীয় কমিটি মিছিল নিয়ে আসে। আমরা শিশুপার্ক ও শাহবাগে তাদের ব্যারিকেড দিয়ে তাদের থামাতে চেষ্টা করি। কিন্তু তারা না শুনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দিকে এগুতে থাকে। এ জন্য আমরা কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছি।

এদিকে, তীব্র নিন্দা জানিয়ে সুন্দরবন রক্ষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক জোনায়েদ সাকি বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে পুলিশের হামলায় বেশ কয়েবজন আহত হয়েছেন। তারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, হামলা চালিয়ে সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলন থামানো যাবে। এই আন্দোলন সারাদেশের মানুষের আন্দোলন। বাংলাদেশের অস্তিত্ব রক্ষার আন্দোলন।

এর আগে, জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে মিছিলটি শুরু হয়। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র চুক্তি বাতিল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও বাঁশখালী বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন বামপন্থী সংগঠন ও জাতীয় কমিটির নেতাকর্মীরা মিছিলে অংশ নেন।

জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা সাইফুল হক, গণফ্রন্টের সমন্বয়ক টিপু বিশ্বাস, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকিসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী ও বিশিষ্ট জনেরা উপস্থিত ছিলেন।

মিছিল শুরুর আগে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জাতীয় কমিটির সদস্য আনু মুহাম্মদ বলেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে সুপার ক্রিটিক্যাল টেকনোলজি ব্যবহার করা হবে। এর ফলে পরিবেশ দূষণের হার ৮-১০ শতাংশ হ্রাস পাবে। কিন্ত এটা খুবই নগণ্য।

সুন্দরবনের পরিবেশের ব্যাপক দূষণ হবেই। বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড, সালফার, নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড, পারদ, সীসা ও আর্সেনিক মিশ্রিত বিষাক্ত ছাই নির্গত হবে যা সুন্দরবনের জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনবে।

তিনি বলেন, কোম্পানি ও মন্ত্রণালয়ের লোকজন প্রায়ই দাবি করেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রে ২৭৫ মিটার উঁচু চিমনি ব্যবহার করা হবে এবং বছরে মাত্র চারমাস উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে অর্থাৎ সুন্দরবনের দিকে বায়ু প্রবাহিত হবে।

ফলে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না। এর পরিপ্রেক্ষিতে বলতে চাই চিমনির উচ্চতা বাড়লেও দূষণকারী উপাদানের পরিমাণ কমে যায় না। বাতাসের প্রবাহ শক্তিশালী থাকলে বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে কিছুটা দূরে প্রবাহিত হয় আর দুর্বল থাকলে বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাছে প্রবাহিত হয়।

সরকারি পরিবেশ সমীক্ষা অনুযায়ী নভেম্বর–ফেব্রুয়ারি বাতাস উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়। সুন্দরবনকে উজাড় করার জন্য এই চারমাসই যথেষ্ট। প্রধানমন্ত্রীর যদি জনগণ ও দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকে তাহলে তিনি এই চুক্তি বাতিল করবেন।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৫৬০ বার

Share Button

Callender

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930