শিরোনামঃ-

» জঙ্গি আবদুল্লাহর বাবা-ভাই আটক, লাশ নেবে না পরিবার

প্রকাশিত: ২৮. জুলাই. ২০১৬ | বৃহস্পতিবার

সিলেট বাংলা নিউজ ডেস্কঃ ঢাকার কল্যাণপুরের জাহাজ বাড়িতে নিহত জঙ্গি আব্দুল্লাহ ওরফে  মোতালেবের বাবা ও ভাইকে আটক করেছে পুলিশ। জঙ্গি হওয়ায় আব্দুল্লাহ’র লাশ চায় না তার পরিবার ও এলাকাবাসী।

আজ সরেজমিনে গিয়ে মিলেছে এমনি কথা। আব্দুল্লা’র বাড়িতে চলছে থমথমে অবস্থা। জঙ্গি সম্পৃক্ততা থাকা সে জাতির শত্রু, পাশাপাশি ভঙ্গ করেছে পরিবারের বিশ্বাস। তাই তার লাশ নিতে চায় না পরিবারের সদস্যরা। গ্রামবাসীও চায় না তার লাশের দাফন হোক তাদের এলাকায়।

এদিকে রাতেই নিহত আব্দুল্লাহ’র বাবা সোহবার আলী ও বড় ভাই নূরুল ইসলামকে আটক করে ঢাকায় পাঠিয়েছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, তারা আটক নন, ডিএনএ মিলানোর জন্য তাদেরকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে, আর আব্দুল্লাহ যে জঙ্গি সম্পৃক্তায় জড়িত তার কোন তথ্য ছিল না তাদের কাছে।

২৫শে জুলাই রাজধানীর কল্যাণপুরে জাহাজ বাড়িতে জঙ্গি আস্তানায় হানা দেয় পুলিশ। সেখানে পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহত হয় ৯ জঙ্গি। যাদের মধ্যে আব্দুল্লাহ নামে একজনের বাড়ি দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার বল্লভপুর এলাকায়।

এক বছর বাড়ি থেকে উধাও ছিলেন আব্দুল্লাহ। আব্দুল্লাহ প্রাইমারি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে বল্লভপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এরপরে হাকিমপুর উপজেলার হিলি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করতে করতে নওগা আলাদিপুর হেফজ মাদ্রাসায় চলে যায়। সেখান থেকে সে পরে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দেবই কাজিরবাদ আলিম মাদ্রাসা থেকে ২০১০ সালে জিপিএ-৫ নিয়ে দাখিল পাস করে। একই মাদ্রাসা থেকে ২০১২ সালে জিপিএ-৫ নিয়ে কৃতিত্বে সাথে পাস করে আলিম।

এরপর এক বছর আর বাসায় আসেনি আব্দুল্লাহ। সে ছিলো বাড়ি থেকে উধাও। তবে মাঝে মাঝে বিভিন্ন নম্বর থেকে মোবাইল ফোন করে জানায়, রূপগঞ্জে দেবই কাজিরবাদ আলিম মাদ্রাসাতেই সে ফাজিল পড়ছে। কিন্তু বাস্তবতায় ওই মাদ্রাসায় ফাজিলে পড়ার কোন সুযোগ নেই। আলিম পর্যন্তই পড়ালেখা হয় সেখানে। আব্দুল্লাহ’র মা মোসলেমা খাতুন জানায়, যে সব নম্বর থেকে আব্দুল্লাহ্ ফোন দিতো কথা বলার পর বন্ধ থাকতো ওইসব নম্বর।

বুধবার সকালে র‌্যাব এর একটি বিশেষ দল বাড়িতে আসার পর আব্দুল্লাহ নিহত হওয়ার খবর পান পরিবারের লোকজন। এর আগে তারা জানতেন না আব্দুল্লাহ নিহত হয়েছেন। এক সপ্তাহ আগেও বড় ভাই রাজমিস্ত্রি নূরুল ইসলামের  সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলেছেন আব্দুল্লাহ। আরেক ভাই কাঠমিস্ত্রি আবুল কালাম আজাদ জানান, মাঝে মাঝে ফোন করে মা-বাবা, ভাইদের সাথে আব্দুল্লাহ কথা বললেও আমরা পরে ওই নম্বরে ফোন করলে পেতাম না তাকে।

একই কথা জানালেন, আরেক ভাই রাজমিস্ত্রি আব্দুস সালাম। তিনি জানালেন, বাবা সোহবাব আলী বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন। কানে শুনেন কম। আমাদের সব চেয়ে ছোটভাই মোহাম্মদ আলী শেরপুর পলিটেকনিক কলেজে পড়া-লেখা করেন। একমাত্র বোন মাসুদাকে বিয়ে দিয়েছি দু’বছর আগে পাশ্বের গ্রামেই।

আমরা এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না আমার ভাই জঙ্গি। সে মারা গেছেন। এ নিয়ে তারা আতংকে আছেন।

নিহত জঙ্গি সদস্য আব্দুল্লাহর ভাই আবুল কালাম ও আব্দুস সালাম জানিয়েছে, পড়ালেখার জন্য সে ঢাকায় গিয়ে পরিবারের সাথে ও জাতির সাথে বেঈমানী করেছে। এমন ভাই আর কারও যেন না হয়, তার লাশ গ্রহন করতে চান না তারা।

নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন জানায়, নিহত আব্দুল্লাহর নাম-পরিচয় জানার পরেই তার বাড়িতে গিয়ে তার বাবা ও এক ভাইকে আটক করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

তিনি জানান, এটি আটক নয়, ডিএনএ মিলানোর জন্য তাদেরকে নিয়ে আসা হয়েছে। নবাবগঞ্জে আরও জঙ্গী সদস্য রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আব্দুল্লাহ জঙ্গী ছিল এমন তথ্য তাদের কাছে ছিল না।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৪১৮ বার

Share Button

Callender

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930