শিরোনামঃ-

» বখাটের নির্মমতা বাঁচতে দেয়নি রিশাকে

প্রকাশিত: ৩০. আগস্ট. ২০১৬ | মঙ্গলবার

সিলেট বাংলা নিউজঃ রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী সুরাইয়া আক্তার  রিশার (১৪) হত্যাকারীকে দ্রুত গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
১৪ বছর বয়সী রিশা উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে ‘বি’ শাখায় পড়ত। ৩ ভাই, ৩ বোনের মধ্যে রিশা চতুর্থ ছিল। তার বাবা রমজান হোসেন কেবল অপারেটের।

রিশার মা তানিয়া বেগমের বরাত দিয়ে রমনা থানার ওসি মশিউর রহমান জানিয়েছিলেন, কয়েক মাস আগে ইস্টার্ন মল্লিকার বৈশাখী টেইলার্সে একটি জামা বানাতে দিয়েছিলেন তিনি। যোগাযোগের জন্য সেখানে তিনি নিজের ফোন নম্বর দিয়েছিলেন।

“ওবায়েদ নামে ওই দোকানের এক কর্মচারী ফোন করে রিশাকে বিরক্ত করছিল। এ কারণে রিশার মা ওই মোবাইল সিমটি বন্ধ করে দেন। তার ধারণা, ওবায়েদই রিশাকে ছুরি মেরেছে।”

হত্যাকারী ওবায়দুল হক ইস্টার্ন মল্লিকা শপিং কমপ্লেক্সের বৈশাখী টেইলার্সের কাটিং মাস্টার, রিশার স্কুলের সামনে প্রায়ই দাঁড়িয়ে থাকতেন। সেদিনও এসে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ফুটওভার ব্রিজে রিশার সঙ্গে কথা বলার এক পর্যায়ে ওবায়দুল পেটে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
বুধবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে আহত অবস্থায় রিশাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হয়। রবিবার (২৮ আগস্ট) সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় রিশা।
রিশার বড় মামা মুন্না সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘টেইলার্সের ছেলেটা বর্তমানে দিনাজপুরে আছে বলে জানতে পেরেছি। ঘটনার পর পুলিশ টেইলার্সের মালিকরে ধইরা ছেড়ে দিলো। আর ওরে গ্রেফতারই করতে পারলো না। এদের খুঁটির জোর কোথায়, সেইটা আপনারা বাইর করেন প্লিজ।’

রিশার মা তানিয়া হোসেন বাদী হয়ে রমনা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন বলেন জানান তিনি।

স্কুলের ছেলেমেয়েরা অনেক কিছু করেছে বলে জানালেন রিশার বাবা রমজান হোসেন। তিনি জানান, রক্ত দেওয়া থেকে শুরু করে অনেক কিছুই করেছে ওরা। রিশার বাবার বিলাপ শুনে ও রিশার মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ে উপস্থিত সহপাঠীরা। সবাই মিলে রিশার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে। এ সময় তারা স্লোগান দেয়- ‘বিচার চাই, রিশা হত্যার বিচার চাই!’

মামলার বিবরণে জানা যায়, প্রায় ৬ মাস আগে মায়ের সঙ্গে ইস্টার্ন মল্লিকার শপিং কমপ্লেক্সের বৈশাখী টেইলার্সে যায় রিশা। সেখানে একটি ড্রেস সেলাই করতে দেয় সে। দোকানের রশিদে বাসার ঠিকানা ও তার মায়ের মোবাইল নম্বর দেয় রিশা। সেই রশিদ থেকে মোবাইল নম্বর নিয়ে টেইলার্সের কাটিং মাস্টার ওবায়দুল খান (২৯) রিশাকে ফোনে উত্ত্যক্ত করতো। পরে ফোন নম্বরটি সে বন্ধ করে দিলে ওবায়দুল স্কুলে যাওয়ার পথে রিশাকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। তার প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় রিশাকে ছুরিকাঘাত করা হয়।

পরে ওই টেইলার্সে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, ওবায়েদ ২ মাস আগে চাকরি ছেড়ে দিয়ে সেখান থেকে চলে গেছে।

সোমবার (২৯ আগস্ট) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া ও পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান জানান, এ ঘটনায় রমনা থানায় একটি মামলা হয়েছে।
আসামি ওবায়দুলের বাড়িতে তল্লাশিও চালানো হয়েছে। তাকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ ও মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। পুলিশ ও ডিবি পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েই এ ঘটনার তদন্ত করছে বলে জানান তিনি।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৩৯০ বার

Share Button

Callender

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930