শিরোনামঃ-

» ২২ ঘণ্টা যাত্রাবিরতির পর কানাডা সফর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার

প্রকাশিত: ১৪. সেপ্টেম্বর. ২০১৬ | বুধবার

সিলেট বাংলা নিউজ ডেস্ক::  ১৪ই সেপ্টেম্বর বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উত্তর আমেরিকার দুটি দেশ কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে ১১ দিনের সরকারি সফরে ঢাকা ত্যাগ করেন।
প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের বিজি ১৫ ফ্লাইটটি আজ স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

কানাডায় ১৫ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ফিফথ রিপ্লেনিসমেন্ট কনফারেন্স অব দ্য গ্লোবাল ফান্ড (জিএফ)-এ যোগ দেয়ার উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা আজ সকালে ঢাকা ত্যাগ করেন। লন্ডনে ২২ ঘন্টা যাত্রাবিরতির পর তিনি এয়ার কানাডার একটি ফ্লাইটে উত্তর আমেরিকার দুটি দেশ সফরের অংশ হিসেবে কানাডার মন্ট্রিলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবেন।

প্রসঙ্গত, লন্ডনে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার খন্দকার মোহাম্মদ তালহা বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।

প্রথম পর্বে ‘ফিফথ রিপ্লেনিশমেন্ট কনফারেন্স অব দ্য গ্লোবাল ফান্ড (জিএফ)’-এ যোগদানের উদ্দেশ্যে ১৫ থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর প্রথম ৪ দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কানাডা সফর করবেন।

এরপর সফরের দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৮ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশনে যোগদানের উদ্দেশ্যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন।

এইডস, যক্ষ্মা ও ম্যালেরিয়া প্রতিরোধের লক্ষ্যে ১৬ ও ১৭ সেপ্টেম্বর কানাডার মন্ট্রিয়লে ‘জিএফ’-এর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
ব্রিটেনের রাজধানীতে ২২ ঘণ্টা যাত্রাবিরতির পর প্রধানমন্ত্রী আজ ১৫ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টা ৫ মিনিটে (লন্ডন সময়) এয়ার কানাডার একটি ফ্লাইটযোগে লন্ডন থেকে কানাডার মন্ট্রিয়লের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন।
একই দিন প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী ফ্লাইটটি মন্ট্রিয়লের পিয়েরে এলিয়ট ট্রুডো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে (মন্ট্রিয়ল সময়)।
সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাবেন কানাডার কেন্দ্রীয় সরকারের একজন মন্ত্রী এবং অটোয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মিজানুর রহমান।
এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিক মোটর শোভাযাত্রাসহকারে মন্ট্রিয়লের হোটেল ওমনি মন্ট-রয়্যাল-এ নিয়ে যাওয়া হবে। কানাডা সফরকালে তিনি সেখানে অবস্থান করবেন।

প্রধানমন্ত্রী ১৬ সেপ্টেম্বর হায়াত রিজেন্সি মন্ট্রিয়লের অনুষ্ঠেয় এই রিপ্লেনিশমেন্ট সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। পরে বিকেলে তিনি একই হোটেলে অন্যান্য রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের সঙ্গে সম্মেলনের মিনিস্ট্রিয়াল প্লেজিং মোমেন্ট ও আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনায় অংশ নেবেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হায়াত রিজেন্সি মন্ট্রিয়লে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর দেওয়া আনুষ্ঠানিক নৈশভোজে অংশ নেবেন।

১৭ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা কানাডার প্রধানমন্ত্রী ও বিশ্ব তহবিলের নির্বাহী পরিচালক মার্ক দাইবালের সঙ্গে সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।

একই দিনে তিনি ‘রিমুভিং বেরিয়ার্স টু হেল্থ থ্রো এম্পাওয়ারিং উইমেন অ্যান্ড গার্লস অ্যান্ড রিচিং দ্য মোস্ট মার্জিনালাইজড’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনা-১ এবং ‘এনগেজিং অ্যান্ড মোবিলাইজিং ইয়ুথ টু মিট দ্য সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনা ২-এ অংশ নেবেন।
তিনি কানাডার প্রধানমন্ত্রী ও কানাডার গভর্নর জেনারেল ডেভিড জনস্টনের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠেয় আনুষ্ঠানিক মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন। পরে তিনি সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে যোগদান করবেন।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কানাডার জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হবেন।

১৯৭১ সালে জাস্টিন ট্রুডোর বাবা পিয়েরে ট্রুডো প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য সমর্থন ও অবদান রাখেন।

তাঁর প্রতি সম্মান জানাতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ফ্রেন্ডস্ অব লিবারেশন ওয়্যার অনার’ মরণোত্তর পুরস্কার জাস্টিন ট্রুডোর কাছে হস্তান্তর করবেন। তিনি বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের সঙ্গে বিশ্ব তহবিল ও গ্লোবাল সিটিজেন আয়োজিত কনসার্টও উপভোগ করবেন।

১৮ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে (মন্ট্রিয়ল সময়) এয়ার কানাডার একটি ফ্লাইটযোগে নিউইয়র্কের উদ্দেশে মন্ট্রিয়ল ত্যাগ করবেন। এই ফ্লাইটটি নিউইয়র্কের লা গার্ডিয়া বিমানবন্দরে বিকেল ৩টায় (নিউইয়র্ক সময়) পৌঁছার কথা।

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন।

পরে প্রধানমন্ত্রীকে মোটর শোভাযাত্রা সহকারে নিউইয়র্কের হোটেল ওয়ার্ল্ডোফ অ্যাস্টোরিয়ায় নিয়ে যাওয়া হবে। নিউইয়র্কে অবস্থানকালে তিনি এ হোটেলেই থাকবেন।
শেখ হাসিনা ১৯ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সদর দপ্তরে উদ্বাস্তু ও অভিবাসনের ওপর সাধারণ পরিষদের উচ্চপর্যায়ের প্লেনারি বৈঠকে ভাষণ দেবেন। তিনি ‘গ্লোবাল কমপেক্ট ফর সেফ, রেগুলার অ্যান্ড অর্ডারলি মাইগ্রেশন : টেকসই উন্নয়নবিষয়ক এজেন্ডা-২০৩০ বাস্তবায়ন এবং অভিবাসীদের মানবাধিকারের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা অর্জন বিষয়ক রাউন্ড টেবিল ৫-এ’ যৌথভাবে সভাপতিত্ব করবেন।

প্রধানমন্ত্রী ২০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশনের সাধারণ আলোচনার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। তিনি পরে হোটেল ম্যারিয়ট ইস্টসাইডে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে আয়োজিত কাউন্টার টেররিজমের ওপর এশিয়ান লিডার্স ফোরামের বৈঠকে যোগ দেবেন।

প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সদর দপ্তরের কনফারেন্স রুম ২-তে সাউথ সাউথ বিষয়ক জাতিসংঘ অফিসে বাংলাদেশ আয়োজিত পাবলিক সার্ভিস ডেলিভারিতে ‘স্কেলিং আপ ইনোভেশনে সাউথ সাউথ অ্যান্ড ট্রিয়াঙ্গুলার কো-অপারেশন’ বিষয়ক বৈঠকে যোগ দেবেন।

শেখ হাসিনা মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আয়োজিত উদ্বাস্তু বিষয়ক এক বেঠকে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তিনি ২১ সেপ্টেম্বর সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন লো ভেশ আয়োজিত ‘ডিসেন্ট ওয়ার্ক অ্যান্ড ইনক্লুসিভ গ্রোথ’ বিষয়ক সোশ্যাল ডায়ালগ সংক্রান্ত গ্লোবাল ডিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বলে কথা রয়েছে। তিনি জাতিসংঘ সদর দপ্তরের কনফারেন্স রুমে পানিবিষয়ক উচ্চপযার্য়ের এক প্যানেল বৈঠকে যোগ দেবেন।

প্রধানমন্ত্রী ওই দিন বিকেলে জেনারেল অ্যাসেম্বলি হলে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশনের সাধারণ আলোচনায় বক্তব্য রাখবেন। তিনি জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনের দেওয়া এক সংবর্ধনা সভায় এবং হোটেল ওয়ার্ল্ডোফ অ্যাস্টোরিয়ায় বিজনেস কাউন্সিল অব ইন্টারন্যাশনাল আন্ডারস্ট্যান্ডিং (বিসিআইইউ) আয়োজিত এক ভোজসভায় যোগ দেবেন।

শেখ হাসিনা ২১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে হোটেল গ্রান্ড হায়াতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন এবং ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখবেন।

প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অং সান সুচি, সুইস প্রেসিডেন্ট জোহান সেনিডার আম্মান এবং কমনওয়েলথ মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া জ্যানেট স্কটল্যান্ড ও ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) নির্বাহী চেয়ারম্যান ক্লাউস শোয়াব এবং বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিমসহ বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।

প্রধানমন্ত্রী ২২ সেপ্টেম্বর সড়কপথে ভার্জিনিয়ার উদ্দেশ্যে নিউইয়র্ক ত্যাগ করবেন এবং ২৫ সেপ্টেম্বর এমিরেটস এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে দেশের উদ্দেশ্যে ওয়াশিংটন ডিসির ডুলেস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবেন।

শেখ হাসিনাকে বহনকারী ফ্লাইটটি দুবাই হয়ে ২৬ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময়) ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৪৮০ বার

Share Button

Callender

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930