শিরোনামঃ-

» বরসহ ৩ ভাইয়ের মৃত্যুতে বিয়ে-বাড়ি জুড়ে শোকের মাতম

প্রকাশিত: ১৬. সেপ্টেম্বর. ২০১৬ | শুক্রবার

সিলেট বাংলা নিউজ:: চাচাতো ভাই আবু সুফিয়ানের বিয়ে। ঢাকার নাখালপাড়ায় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা হওয়ার কথা। তাই পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আলী হোসেন বাবার কাছে আবদার করলো এ বিয়েতে সে যাবেই। সঙ্গে বাবাকেও যেতে হবে।

বিয়ে এবং ঢাকা শহর দুটোই একসঙ্গে দেখার শখ ছেলের। এমন আবদার না রেখে পারেননি বাবা মুর্শিদুর রহমান; শেষে পর্যন্ত রাজি হলেন।

শুক্রবার সকালে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রূপসপুর গ্রাম থেকে মাইক্রোবাস রওনা হয় ঢাকার পথে।

মাইক্রোবাসে লোক বেশি হওয়ায় আলী হোসেন তার বাবার কোলে বসেই যাচ্ছিল। শুক্রবার জুম্মার নামাযের পর বিয়ে। সবার মনেই আনন্দের ঢেউ। কিন্তু এ আনন্দ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে এসে রূপ নিল বিষাদে।

বিপরীত দিক থেকে আসা একটি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে মাইক্রোবাসের ৮ যাত্রী নিহত হন। মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই ৭ জনের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনায় সময় নিহত বাবার কোলেই আলী হোসেনেরও মৃত্যু হয়।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া মাইক্রোবাসে বাবার কোল থেকেই শিশু আলী হোসেনের লাশ উদ্ধার করেন। এ দৃশ্য দেখে সেখানে এক হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। মৃত বাবার কোলের ওপর শিশুর লাশ দেখে উদ্ধারকারীরাও চোখে পানি ধরে রাখতে পারেননি।

প্রসঙ্গত, ঢাকার নতুনবাগ মাদ্রাসা থেকে দাওরায়ে হাদিস পাস করা মুফতি ক্লাসের ছাত্র মাওলানা আবু সুফিয়ানের বিয়ে ঠিক হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা ও ঢাকার নাখালপাড়ার একটি মসজিদের ইমাম আবু হানিফার কন্যার সঙ্গে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার শশই এলাকায় শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাস ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সরাইল বিশ্বরোড মোড় হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ূন কবির বলেন, ঘটনাস্থল থেকে সাতজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চারজনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সেখানে চিকিৎসাধীন ১ জন মারা যান। হতাহত ব্যক্তিরা সবাই মাইক্রোবাসের যাত্রী।
বরসহ বরযাত্রী নিয়ে মাইক্রোবাসটি সিলেট থেকে ঢাকায় যাচ্ছিল। এনা পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসটি বিপরীত দিক থেকে আসছিল।
দুর্ঘটনায় বর মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের রুপশপুর গ্রামের আবু সুফিয়ান (২৫), তাঁর মামা হাজি আবদুল হান্নান (৬৫), বরের ২ ভাই কামরান (২০) ও ফয়ছল (২৩), বরযাত্রী মুর্শেদ (২৫), হাবিবুল (২২), আলী হোসেন (২৫) ও মুক্তার মিয়া (৪২) নিহত হন।
আবু সুফিয়ানরা ৩ ভাই। ৩ জনই এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন।
নিহত হাজি আবদুল হান্নানের স্বজন ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলার সাধারণ সম্পাদক আবদুল আহামদ মিনার বলেন, শুধু কান্না ছাড়া আর কিছু নেই। আমরা লাশের অপক্ষোয় আছি। লাশ হস্তান্তরে আইনি প্রক্রিয়া চলছে।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৪৬৪ বার

Share Button

Callender

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930