শিরোনামঃ-

» বরিশালে লঞ্চডুবি, ১৪ লাশ উদ্ধার

প্রকাশিত: ২২. সেপ্টেম্বর. ২০১৬ | বৃহস্পতিবার

সিলেট বাংলা নিউজ ডেস্কঃ বরিশালের বানারীপাড়ায় সন্ধ্যা নদীতে লঞ্চডুবির পর নারী, শিশুসহ ১৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ১৫ জন। পুলিশের ধারণা, ১৫ থেকে ২০ জন যাত্রী নিখোঁজ রয়েছেন।

বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বানারীপাড়া উপজেলার সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের মসজিদবাড়ি গ্রামের দাসেরহাট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

বানারীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউল আহসান বলেন, এম এল ঐশী নামের ছোট আকারের লঞ্চটি বানারীপাড়া থেকে প্রায় ৫০ জন যাত্রী নিয়ে উজিরপুর উপজেলার হারতার দিকে যাচ্ছিল। পথে দাসেরহাট ঘাটে যাত্রী নামাতে গিয়ে তীরের কাছাকাছি ডুবে যায়।

বেঁচে যাওয়া কয়েকজন যাত্রী জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বানারীপাড়া লঞ্চঘাট থেকে এম এল ঐশী নামের ওই লঞ্চটি ৪০-৫০ জন যাত্রী নিয়ে পার্শ্ববর্তী উপজেলা উজিরপুরের হাবিবপুরের উদ্দেশে যাচ্ছিল।
পথে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে লঞ্চটি সন্ধ্যা নদীর ভাঙনকবলিত দাসেরহাট মজিদবাড়ী ঘাটে ভেড়ে। যাত্রী ওঠানামার একপর্যায়ে নদীতীরের একটি বিরাট অংশ ভেঙে লঞ্চের ওপর পড়লে এটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একদিকে কাত হয়ে তীব্র স্রোতে তলিয়ে যায়।
ডুবে যাওয়ার আগমুহূর্তে লঞ্চ থেকে তীরে ওঠা যাত্রী উজিরপুরের সাতলা ইউনিয়নের দক্ষিণ নয়াকান্দি গ্রামের বাসিন্দা আলেয়া বেগম জানান, ঘাটে ভেড়ার পর মাত্র সাত-আটজন যাত্রী তীরে উঠতে পেরেছে। এর পরই লঞ্চটি ডুবে যায়।
খবর পাওয়ার পর পরই ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধারকাজ শুরু করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল। সন্ধ্যা পর্যন্ত পাওয়া সর্বশেষ খবর অনুযায়ী নিমজ্জিত লঞ্চের নিখোঁজ যাত্রীদের মধ্যে ১৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
7উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের পরিচয়:
বিআউডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের উপপরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান উদ্ধার হওয়া ১৪ লাশের পরিচয় দিয়েছেন। তাঁরা হলেন—বানারীপাড়ার মজিবর রহমানের স্ত্রী কহিনুর বেগম (৪০), মজিদ মাস্টারের স্ত্রী সালেহা বেগম (৬০), উজিরপুরের কেশবকাঠি এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক (৭৫), বানারীপাড়ার সাঈদ আলীর স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৪৫), প্রয়াত চান্দু মিয়ার স্ত্রী রাবেয়া বেগম (৪৫), প্রয়াত ইসমাইল মোল্লার ছেলে মুজাম্মেল মোল্লা (৬২), রহিম হাওলাদারের স্ত্রী রেহানা বেগম (৩৫), উজিরপুরের মনীন্দ্রনাথ মল্লিকের ছেলে সুখদেব মল্লিক (৩৫), বানারীপাড়ার আবুল ঘরামীর ছেলে মিলন ঘরামী (৩২), মো. সাগর মীর (১৫), উজিরপুরের সিরাজুল ইসলামের ছেলে জয়নাল হাওলাদার (৫৫), বানারীপাড়ার আবদুল মজিদের স্ত্রী ফিরোজা বেগম (৫৫), উজিরপুরের সিদ্দিকুর রহমানের মেয়েশিশু শান্তা (৭) ও স্বরূপকাঠির কামাল হোসেনের স্ত্রী হিরা বেগম।
8নিখোঁজ লোকজনের পরিচয়:
ঘটনাস্থলে কর্মরত বিআইডব্লিউটিএ ও পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, নিখোঁজ রয়েছে লঞ্চের ১৩ জন যাত্রী।
তাদের মধ্যে ১২ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলো মৃত উদ্ধার হওয়া মিলন ঘরামীর স্ত্রী খুকু মনি (২৫) ও তাঁদের সন্তান সাফওয়ান (৩), উজিরপুরের খলিল হাওলাদারের স্ত্রী হামিদা বেগম (৪০) ও তাঁর ছেলে নাফফি (৯), লাশ উদ্ধার হওয়া রেহানা বেগমের ছেলে রিয়াদ হাওলাদার (৫), বানারীপাড়ার আবদুল মজিদ হাওলাদার (৪৫), হামেদ হাওলাদারের ছেলে জাকির হাওলাদার (৪০), উজিরপুরের মনিশংকরের স্ত্রী আল্পনা রানী (২৫), বানারীপাড়ার মালেক সরদারের ছেলে রুহুল আমিন (৩০), উজিরপুরের সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে রাফি (৭) ও  বানারীপাড়ার আলমগীর হোসেনের মেয়েশিশু মারিয়া বেগম (৩), সাতবাড়িয়ার খলিলুর রহমানের ছেলে জিদান (৮)।
তদন্ত কমিটি:
বরিশালের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ড. গাজী সাইফুজ্জামান জানান, দুর্ঘটনার কারণ তদন্তে বরিশালের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেনকে প্রধান করে ৯ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তিনি জানান, নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়েছে সরকারিভাবে। ডিসি আরো জানান, উদ্ধার অভিযানে অংশ নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট সব বিভাগকে।
বিআইডব্লিউটিএ এর বন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ট্রলারকে কাঠামো পরিবর্তন করে লঞ্চ করা হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ক কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৪৪০ বার

Share Button

Callender

September 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30