শিরোনামঃ-

» শামীম ওসমান রাজনীতি থেকে অবসর নিতে চান; নতুনদের নেতৃত্বের সুযোগ দিতে চান

প্রকাশিত: ২৭. অক্টোবর. ২০১৬ | বৃহস্পতিবার

সিলেট বাংলা নিউজ ডেস্কঃ দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনকে ‘গুডবাই’ জানানোর ইঙ্গিত দিলেন, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ আলহাজ্ব একেএম শামীম ওসমান। মূলত নতুন নেতৃত্বকে সুযোগ করে দেয়ার লক্ষে শামীম ওসমান যখন রাজনীতি থেকে শীঘ্রই অবসরে যাওয়ার মনোভাব প্রকাশ করছিলেন, তখন তিনি অনেকটাই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিলেন।

আগামী ২৯ অক্টোবর আয়োজিত নারায়ণগঞ্জে বিশাল জনসমাবেশ সফল করার লক্ষে গত মঙ্গলবার রাতে নারায়ণগঞ্জ রাইফেলস্ ক্লাবে মহানগর আওয়ামীলীগের প্র¯ুÍতি মূলক সভায় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য প্রদান কালে এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন শামীম ওসমান বলে জানান, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতা।

শামীম ওসমান বলেছেন, ইচ্ছে করলে আমি কেন্দ্রীয় অনেক বড় পদ নিতে পারতাম। কিন্তু সেই পদ নিলে হয়তো কেন্দ্রের নির্দেশনা মোতাবেক দলের প্রয়োজনে যেকোন সময় দেশের যেকোন স্থানে যেতে হতো। কিন্তু আমি তা পারবো না। কেননা, আমার অনেক বয়স হয়েছে। চিকিৎসার জন্য অনেকবার বিদেশ গিয়েছি। শরীরে একাধিকবার অস্ত্রোপচার হয়েছে। যেই কারনে এখন আর আগের মত কিছু করতে চাইলেও করতে পারিনা।

তিনি আরো বলেন, এই উপমহাদেশে রাজনীতিতে অবসর বলতে কোন কথা নেই। মৃত্যুর আগ পর্যন্তও মানুষ রাজনীতি করে। কিন্তু আমি একটু ব্যাতিক্রম করতে চাই।

আপনারা দেখবেন, শচীন টেন্ডুলকার যখন সেঞ্চুরী করতো তখন সবাই করতালি দিত। এজন্য তার ফর্ম থাকতেই তিনি ক্রিকেট দুনিয়া থেকে অবসর নিয়েছেন। তাই আমিও চাই যোগ্য নতুন নেতৃত্বের হাতে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে।

শামীম ওসমান বলেন, ৭৫’র পর কখনো ভাবিনি যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে, জাতির পিতার হত্যার বিচার হবে, শেখ হাসিনা বাংলার প্রধানমন্ত্রী হবেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে। কিন্তু আজ সবই হয়েছে।

তিনি বলেন, আমার রাজনৈতিক জীবনের চাওয়া-পাওয়া পূরণ হয়ে গেছে। আমি এখন ক্লান্ত। আগামীতে নতুন নেতৃত্ব আসবে, তাদের হাতেই গড়ে উঠবে সুন্দর নারায়ণগঞ্জ।

সম্প্রতি দেখা গেছে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০তম কাউন্সিলে নতুন নেতৃত্বকে সুযোগ করে দেয়ার লক্ষে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা তার সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার অভিমত প্রকাশ করেছিলেন

কিন্তু নেতাকর্মীরা তাতে অসম্মতি জানিয়ে আজীবন তাকে দলীয় প্রধান হিসেবে থাকার জোরালো অনুরোধ করেন। যেই কারণে পুনরায় টানা ৮ম বারের মত শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী নির্বাচিত হন।

প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে একজন দক্ষ সংগঠক হিসেবে বেশ সুনাম অর্জন করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ আলহাজ্ব একেএম শামীম ওসমান।

বিগত ১৯৯৬ সালে প্রথম সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর যাকে সন্ত্রাসীরা বানিয়েছিল তাদের ‘গডফাদার’। এখন দ্বিতীয় মেয়াদে সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর ২০১৬ সালে তিনি হয়ে গেছেন নারায়ণগঞ্জের রাজনীতির ‘কিং খান’

যিনি ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে যৌবনকাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ছিলেন নিবেদিত প্রাণ। তাই আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার খুবই আস্থাভাজন হয়ে যান শামীম ওসমান।

ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মরহুম ভাষা সৈনিক একেএম শামসুজ্জোহার আদর্শ বুকে ধারন ১৯৭৮ সালে সরকারী তোলারাম কলেজে ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হওয়ার পর ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে শুরু হয় শামীম ওসমানের রাজনৈতিক জীবনে পথচলা।

৯০’ সালে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ব্যানের স্বৈরাচারী এরশাদ সরকার পতনের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ১৯৯১ সালে বিএনপি-জামায়াত চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর জন্মস্থান নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব বিলীন হতে থাকে।

তৎকালীন সময়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মতিন চৌধুরীর মদদে নারায়ণগঞ্জে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে ক্রসফায়ারে নিহত দুধর্ষ সন্ত্রাসী মমিন উল্লাহ ডেভিড, সাঈদসহ আরো অনেকে। তখন তাদের অত্যাচারে এমন কোন নেতা ছিলেন না যিনি আওয়ামী লীগের হাল ধরবেন।

কিন্তু ছিলেন একজন বীরপুরুষ শামীম ওসমান। যিনি ৯১’ থেকে ৯৬’ সাল পর্যন্ত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তার কর্মী বাহিনী নিয়ে নারায়ণগঞ্জের মাটিতে আওয়ামী লীগের পতাকা সমুন্নত রাখতে বিএনপির সেই সকল সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে গেছেন।

গুটি কয়েকজন নেতাকর্মী নিয়ে নারায়ণগঞ্জে প্রবেশ মুখে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার লং মার্চের গাড়ী আটকে দিয়ে দেশব্যাপী আলোচনায় আসেন এই শামীম ওসমান।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৪৮৮ বার

Share Button

Callender

September 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30