শিরোনামঃ-

» বিমানবন্দরে নিরাপত্তা জোরদার সহ হত্যা মামলা দায়ের

প্রকাশিত: ০৮. নভেম্বর. ২০১৬ | মঙ্গলবার

সিলেট বাংলা নিউজ ডেস্কঃ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হামলাকারীর ছুরিকাঘাতে আনসার সদস্য সোহাগ আলী নিহতের ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)।
বুকের বাম পাশে ছুরিকাঘাতের কারণেই আনসার সদস্য সোহাগের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগ। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চত্তরে রোববার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে নিহত আনসার সদস্য সোহাগ আলীর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে।  তাঁর লাশ নিয়ে এরই মধ্যে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছে স্বজনরা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শফিউজ্জামান জানান, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আনসার সদস্য সোহাগের মৃত্যু হয়েছে। অস্ত্রের আঘাত ফুসফুসে গিয়ে লাগে এবং এতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়।  এ ছাড়া তাঁর গলার ডান পাশেও ধারালো অস্ত্রের আঘাত আছে।
তবে এখনো হামলাকারী যুবকের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ । তবে তার বিরুদ্ধে আজ বিমানবন্দর থানায় হত্যা মামলা হয়েছে।
মামলা দায়েরের আগে এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। কমিটিকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এপিবিএন এর অতিরিক্ত ডিআইজি হাসিব আজিজকে তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- এপিবিএন সদর দফতরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম শান্ত এবং ইন্সপেক্টর মতিউর রহমান।
(৬ নভেম্বর) রোববারের ঘটনার পর হামলাকারী যুবককে আটক করে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশাল ইউনিটের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে তারা হামলাকারী যুবককে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করায়। সে বর্তমানে আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক ডা. জেসমিন নাহার।
পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, ওই যুবক কখনো নিজ নাম বলছে শিহাব, কখনো বা ‘ডিজিটাল আকাশ’ বলে পরিচয় দিচ্ছে। তার বাড়ি কোথায়, বাবা-মায়ের নাম কী, এসব বিষয়ে কিছু বলছে না সে।
এ ঘটনার পর থেকে বিমানবন্দরের সবক’টি প্রবেশপথে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ সুপার তানজিনা আক্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন । বিশেষ করে দোতলায় বহির্গমনে এখন কেবল যাত্রীদেরই যেতে দেয়া হচ্ছে। নিচে ক্যানোপির ভেতর বা বাইরে একসাথে কাউকে দাঁড়াতে দেয়া হচ্ছে না।
ঢামেক মর্গে নিহতের  চাচা কামরুজ্জামান জানান, সোহাগ চার বছর ধরে আনসারে কর্মরত ছিলেন। এক ভাই এক বোনের মধ্যে সোহাগ ছোট। তার বাবা মান্দার আলীও আনসার সদস্য ছিলেন।
চাকরি থেকে অবসর নেয়ার পর তিনি বর্তমানে কৃষি কাজ করছেন। সোহাগের পরিবার তেমন স্বচ্ছল নয়। তার বেতনের টাকা দিয়েই পুরো সংসার চলতো। এখন কিভাবে তাদের সংসার চলবে তা নিয়ে চিন্তিত তারা।

এদিকে, এ ঘটনার পর থেকেই সোহাগের গ্রামের বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বলে জানান কামরুজ্জামান।

তিনি জানান, রোববার (৬ নভেম্বর) রাতেই সোহাগের বাবা-মা ও বোন দুর্ঘটনার খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে তারা শোকে পাথর হয়ে গেছেন। তবে এ ঘটনায় গতকাল পর্যন্ত আনসার কর্তৃপক্ষ কিংবা সরকারের পক্ষ থেকে নিহতের পরিবারকে কোন ধরণের সহায়তা করার আশ্বাস দেয়া হয়নি বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, রোববার সন্ধ্যার পরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক যুবক ছুরি হাতে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা চালায়।
এসময় বাধা দিতে গেলে ওই যুবকের ছুরিকাঘাতে নিহত হন আনসার সদস্য সোহাগ আলী। এ ঘটনায় আহত হন আরো ৩ জন। তারা হলেন- আনসার সদস্য সহকারী প্লাটুন কমান্ডার (এপিসি) জিয়াউর রহমান। তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত এপিবিএনের ২ সদস্য কনস্টেবল আশিক ও কনস্টেবল ইশতিয়াককে কুর্মিটোলা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৪১৮ বার

Share Button

Callender

September 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30