শিরোনামঃ-

» টেংরাটিলায় এখনো মাটির নীচ থেকে গ্যাস বেরুচ্ছে

প্রকাশিত: ০৩. জানুয়ারি. ২০১৭ | মঙ্গলবার

চান মিয়া, ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:: সুনামগঞ্জ দোয়ারাবাজারের টেংরাটিলায় অবস্থিত ছাতক পশ্চিম গ্যাস ক্ষেত্রে মাঠির নীচ থেকে এখনো গ্যাস বেরুচ্ছে।

এগুলো অব্যাহত অপচয় হলেও কাজে লাগানোর সরকারী কোন উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি। ২০০৫ সালে টেংরাটিলা গ্যাস ক্ষেত্রে পরপর দু’দফা ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনার পর থেকে খননকাজ বন্ধ রয়েছে।

খননকারী প্রতিষ্ঠান কানাডিয়ান কোম্পানী নাইকো দু’দফা অগ্নিকান্ডের মাধ্যমে মজুদ গ্যাসের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছে। যে ক্ষতি কখনো পূরণ হবার নয়।

প্রায় একযুগ হলেও গ্যাস ক্ষেত্রে অগ্নিকান্ডের সেই ক্ষত চি‎হ্ন এখনও বয়ে বেড়াচ্ছে স্থানীয়রা। টেংরাটিলা এলাকায় এখনও বুদবুদ করে গ্যাস বেরুচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে দৃশ্যমান হয় চর্তুদিকে এক কিলোমিটারের অধিক এলাকা জুড়ে বুদবুদ করে মাঠির নীচ থেকে গ্যাস বের হবার চিত্র। শুষ্ক মৌসুমে গ্যাসের বিকট গন্ধে চারদিকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে।

এ পরিস্থিতিতে মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রাও ব্যাহত হয়ে পড়ছে। টেংরাটিলা দাবি আদায় সংগ্রাম পরিষদ সিলেটের সভাপতি নুরুল আমিন ১ জানুয়ারী সিলেট নগরীর শাহী ঈদগাস্থ পরিষদ অস্থায়ী কার্যালয়ে সভাপতির বক্তব্যে তিনি অনতিবিলম্বে এলাকাবাসীর ক্ষতি পুরণ দিয়ে পূনরায় গ্যাস খনন শুরু করার দাবি জানিয়ে বলেন, অন্যথায় সংগ্রাম পরিষদ কঠোর থেকে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবে।

সংগ্রাম পরিষদের নেতা আলমগীর হোসেনের পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন, টেংরাটিলা দাবি আদায় সংগ্রাম পরিষদ সিলেটের নেতা আবদুল আহাদ এলিছ, রফিকুল ইসলাম, আমির আলী, রিপন হাওলাদার, সানি আলম সাগর, ওসমান আলী, নাসির উদ্দিন, নাদিম আমিন নাইম, আলী হোসেন, লিটন আহমদ, ইসমাইল হোসেন, ফারুক হাসান, ইকবাল হোসেন, নিশিকান্ত পাল, সুবর্ণা সিনহা, সাদিয়া আমিম, শান্তা আকতার, সামিয়া আকতার, কামাল মিয়া, আবদুল করিম বাবলু, মির্জা আলমগীর প্রমূখ।

বক্তারা বলেন, টেংরাটিলা এলাকায় বিগত ২০০৫ সালে ৭ জানুয়ারী ও ২৪ জুন টেংরাটিলায় অগ্নিকান্ডের ঘটনাগুলাকে টেংরাটিলা ট্র্যাজেডি হিসেবে অভিহিত করা হয়।

টেংরাটিলাবাসীর কাছে অত্যন্ত ভয়াবহও বিভীষিকাময় ছিল এ দু’টি দিনের কথা কেউ ভূলতে পারবে না। নাইকোর চরম অদক্ষতায় গ্যাস ভান্ডার খ্যাত টেংরাটিলায় দু’দফা এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।

দু’বারে কমপক্ষে ৬ মাস আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে। দ্বিতীয় দফা রিলিফ কুপে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। পরপর দু’বারের আগুনে টেংরাটিলা পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।

প্রকৃতিঘেরা টেংরাটিলা পরিনত হয় বিরান ভূমিতে। এখানের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়ে পড়ে। টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্র এলাকার মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে যাযাবর জীবন যাপন শুরু করেন।

তারা আরো বলেন, এ অগ্নিকান্ডে টেংরাটিলা, আজবপুর, খইয়াজুরি, শান্তিপুর ও গিরিশ নগরের ৬শ’ ১৬টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ।

এ ৫টি গ্রাম টেংরাটিলা গ্যাসকুপের চর্তুদিকের এক কিলোমিটার এলাকায় অবস্থিত।

পরবর্তীতে সরকার একাধিক তদন্ টিমের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্থ হিসেবে ৬শ’ ১টি পরিবারের নাম তালিকা চুড়ান্ত করেন। পরিবারগুলো এখনো অসহায়ও মানবেতর জীবন যাপন করছে।

এক যূগ অতিবাহিত হলেও তারা ক্ষতিপুরণে কোন স্বাধ ভোগ করতে পারেনি। প্রথমে অনাহারে, অর্ধাহারে জীবন যাপন করলেও এখন কিছুটা ঘুরে দাড়াতে শুরু করেছে এলাকার মানুষ। তবে এখনও ক্ষতিপুরনের আশায় পথ চেয়ে বসে আছে এলাকাবাসী।

নাইকো অগ্নিকান্ডের সময় সিঙ্গাপুর থেকে বীমার টাকা আদায় করলেও বাংলাদেশ সরকার কিংবা ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোকে কোন ক্ষতিপুরন না দিয়েই পর্যায়ক্রমে টেংরাটিলা থেকে চলে যায়। তারা নাইকোর কাছ থেকে ক্ষতিপুরন আদায় করার দাবি জােিয় বলেন, তদের দৃঢ় ধারনা হচ্ছে যে, টেংরাটিলায় নাইকো পরিকল্পিতভাবে অগ্নিকান্ড ঘটিয়েছে।

এজন্যে তারা দু’দফা অগ্নিকান্ডের পর নিরবেই চলে গেছে। এখনো অফুরন্ত প্রাকৃতিক সম্পদ টেংরাটিলায় মজুদ আছে।

এব্যাপারে পেট্রোবাংলার মাধ্যমে পূনরায় গ্যাসকূপ খননে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন নেতৃবৃন্দ।

আবারো গ্যাসক্ষেত্র সচল করতে ১১ বছর পুর্তিতে নেতৃবৃন্দ ৫ জানুয়ারী প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেয়া সহ টেংরাটিলা ট্র্যাজেডি হিসেবে ওই দিন সিলেট শহরে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

 

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৭৩৭ বার

Share Button

Callender

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930