শিরোনামঃ-

» কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তার দিকে দিতে হবে মনোযোগ: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১৯. জানুয়ারি. ২০১৭ | বৃহস্পতিবার

ডেস্ক সংবাদঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ববাসীকে সমন্বিতভাবে কৃষক, জেলে, কারুশিল্পী ও নারীদের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি নিরসনে সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, স্বল্প আয়ের ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে রক্ষা করার জন্য প্যারিস চুক্তিকে অবশ্যই সামনে এগিয়ে নিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় সুইজারল্যান্ডের দাভোসের কংগ্রেস সেন্টারে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ‘লিডিং দ্য ফাইট এগেনস্ট ক্লাইমেট চেঞ্জ‘ শীর্ষক পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে এসব কথা বলেন। খবর বাসসের।

বাংলাদেশ প্যারিস চুক্তি অনুসমর্থন করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ক্ষেত্রে বিশ্বসম্প্রদায় এবং ব্যবসায়ীদেরও ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কৃষক, জেলে, কারুশিল্পী, নারীরা দিনকে দিন অধিকতর ঝুঁকিতে পড়ছে। তাদের জরুরি সহায়তা প্রয়োজন। কৃষি ও খাদ্যনিরাপত্তার দিকে আমাদের ভালোভাবে মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন।’

কৃষিকে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবমুক্ত করার জন্য উন্নত প্রযুক্তি দরিদ্র ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোর কৃষকদের কাছে সহজলভ্য করার প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী চাপসহনশীল জাত উন্নতকরণ ও উদ্ভাবন, পানিসহিষ্ণু ধান উৎপাদন, সৌরবিদ্যুৎভিত্তিক সেচপাম্প চালু করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জীবন, শস্য, কৃষি, সম্পদ রক্ষায় সমাধান খুঁজতে গবেষণা ও বিশ্ববাণিজ্য বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রয়োজন অলাভজনক মডেল উদ্ভাবন, অংশীদারত্বের জন্য এবং আমাদের সমস্যা সমাধানের জন্য।’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, নবায়নযোগ্য এবং ক্লিন এনার্জি, দক্ষ জ্বালানি প্রযুক্তি, যন্ত্র, নিরাপদ উৎপাদন, নগর সেবায় যেতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা “গ্রিন প্রবৃদ্ধি” পথের দিকে যাচ্ছি। কিন্তু প্রতিশ্রুত জলবায়ু অর্থায়ন নিশ্চিত করতে হবে। এই অর্থের অন্তত অর্ধেকটা জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর কাছে যেতে হবে।’

প্রযুক্তি বিনিময়কে পঞ্চম বিষয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের নামে বিশ্ব সুখকর অবস্থানে থাকতে পারে না। স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে সহযোগিতার জন্য জাতিসংঘ প্রযুক্তি ব্যাংক রয়েছে। কৃষি-স্বাস্থ্যে আমরা জীবন রক্ষাকারী প্রযুক্তিতে যেতে চাই।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের অস্তিত্বের বিষয়। বাংলাদেশ সবচেয়ে কম গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ করে অথচ আমাদেরই সবচেয়ে বেশি মূল্য দিতে হয়। লাখ লাখ মানুষ নীরবে স্থানান্তরিত হতে বাধ্য হচ্ছে।’

সমৃদ্ধির জন্য বিশ্বসম্প্রদায় দায়িত্ব ভাগ করে নেবে আশা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বল্প আয়ের ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে রক্ষা করার জন্য প্যারিস চুক্তিকে অবশ্যই সামনে এগিয়ে নিতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলায় বাংলাদেশের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০৯ সালে নিজস্ব সম্পদ থেকে আমরা ৪০০ মিলিয়ন ডলারের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা কম কার্বন নিঃসরণ উন্নয়নের দিকে যাই। আমাদের উৎপাদন ক্ষেত্রকে আমরা “গ্রিন” প্রযুক্তিতে রূপান্তর করি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে গুরুত্ব দিয়েছি। বাংলাদেশে ৪৫ লাখ সোলার হোম সিস্টেম বসানো হয়েছে। ১৫ লাখ মানুষ এখন সৌরবিদ্যুৎ পাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ২০১৮ সাল নাগাদ বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে বড় সোলার জাতি হিসেবে উঠে আসবে।’

সুখী-সমৃদ্ধ বিশ্ব গড়তে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলায় বিশ্বসম্প্রদায়কে দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৩২৩ বার

Share Button

Callender

October 2024
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031