শিরোনামঃ-

» জঙ্গি রিপনের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ; চিঠি পৌঁছেছে সিলেট কারাগারে

প্রকাশিত: ১১. এপ্রিল. ২০১৭ | মঙ্গলবার

ডেস্ক সংবাদঃ সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার দায়ে ফাঁসি কার্যকরের অপেক্ষায় থাকা জঙ্গি দেলোয়ার হোসেন রিপনের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচের চিঠিও পৌঁছেছে কারাগারে। এ নিয়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৩ জঙ্গিরই প্রাণভিক্ষা নামঞ্জুরের চিঠি পৌঁছালো।

জঙ্গি রিপনকে রাখা হয়েছে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে। মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) সকালে রাষ্ট্রপতির প্রাণভিক্ষা নামঞ্জুর সংক্রান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠি পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন ওই কারাগারের জেল সুপার ছগির মিয়া।

এর আগে সোমবার (১০ এপ্রিল) মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য ২ জঙ্গি মামলার প্রধান আসামি নিষিদ্ধ ঘোষিত হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষনেতা ‘মুফতি’ আব্দুল হান্নান ও শরীফ শাহেদুল আলম বিপুলের প্রাণভিক্ষার আবেদন নামঞ্জুরের চিঠি পৌঁছে কারাগারে। ওই দু’জনকে রাখা হয়েছে গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে।

ওই কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মিজানুর রহমান সাংবাদিককে জানান, ‘মুফতি’ হান্নান ও বিপুলকে সময়মতো এ চিঠি পড়ে শোনানো হবে। আর সিলেটের জেল সুপার ছগির মিয়া জানিয়েছেন, মঙ্গলবারই চিঠি পড়ে শোনানো হবে রিপনকে।

কাশিমপুর ও সিলেট- ২ কারা সূত্রই জানিয়েছে, রাষ্ট্রপতির প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচের চিঠি কারাগারে পৌঁছানোর পর আসামিদের পড়ে শোনাতে হয়।  এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ফাঁসি কার্যকরের কার্যনির্বাহী আদেশ পাঠালে চূড়ান্ত  প্রক্রিয়া শুরু হবে। ফাঁসির আগে স্বজনেরা শেষবারের মতো আসামিদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাবেন। তবে তাদের প্রস্তুতি এগিয়ে রাখা আছে।

এদিকে ৩ জঙ্গিরই ফাঁসি কার্যকরের জন্য কারাগারে প্রস্তুতি চলছে বলে রোববার (০৯ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

তবে প্রাণভিক্ষার আবেদন নামঞ্জুর হওয়ার পর ফাঁসি কার্যকরে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা আছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এটাও বলেছেন, ‘জেলকোড অনুসারে ২১ দিনের কমে নয় এবং ২৮ দিনের ঊর্ধ্বে নয়- এ সময়সীমার মধ্যে কার্যাদেশ পালন করতে হবে। আমরা সেজন্যই অপেক্ষা করছি। আমাদের সব প্রস্তুতি রয়েছে। সব ফর্মালিটি শেষ হলেই আমরা রায় কার্যকর করবো’।

তবে রোববার দুপুরের পরে কঠোর গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে এসে রিপনের সঙ্গে একদফা শেষ সাক্ষাৎ করে গেছেন তার চাচা আব্দুন নুর, চাচি আজিজুন্নেছা, চাচাতো বোন রুমেনা, ফুফাতো বোন লুৎফা বেগম ও ফুফাতো ভাই জাবির হোসেন।

মঙ্গলবার ফের শেষবারের মতো দেখা করতে আসতে পারেন তার বাবা-মা সহ আরো আত্মীয়-স্বজনেরা বলেও জানান সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার ছগির মিয়া।

২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটের হযরত শাহজালালের (র.) মাজারে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা হয়। হামলায় আনোয়ার চৌধুরী, সিলেটের জেলা প্রশাসক সহ অর্ধ শতাধিক ব্যক্তি আহত এবং নিহত হন ২ পুলিশ কর্মকর্তা সহ ৩ জন।

মামলার বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ৫ আসামির মধ্যে মুফতি হান্নান, বিপুল ও রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

২০০৯ সালে আসামিরা জেল আপিল করেন। বিচারিক আদালতের দণ্ড বহাল রেখে গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন ২ আসামি মুফতি হান্নান ও বিপুল।

গত বছরের ৭ ডিসেম্বর আসামিদের আপিল খারিজ করে চূড়ান্ত রায় দেন আপিল বিভাগ। আসামিরা এ রায়ের পুনর্বিবেচনা চেয়ে রিভিউ আবেদন জানালেও গত ১৯ মার্চ তা খারিজ করে দেন সর্বোচ্চ আদালত।

রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি ২১ মার্চ প্রকাশিত হলে পরদিন ২২ মার্চ তিন জঙ্গির মৃত্যু পরোয়ানায় স্বাক্ষর করে কারাগারে পাঠান বিচারিক আদালত।

মৃত্যু পরোয়ানা ও সর্বশেষ রায় শোনার পর গত ২৭ মার্চ পৃথকভাবে মুফতি হান্নান, বিপুল ও রিপন স্ব-স্ব কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে রাষ্ট্রপতি বরাবরে প্রাণভিক্ষা চেয়েছিলেন।

শনিবার (৮ এপ্রিল) রাষ্ট্রপতি প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দেওয়ার পর সরকারের সিদ্ধান্তে এখন জেলকোড অনুসারে ফাঁসি কার্যকর করবে স্ব-স্ব কারা কর্তৃপক্ষ।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৪৫৩ বার

Share Button

Callender

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930