শিরোনামঃ-

» যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে আলোচিত বাঙালি প্রার্থীরা

প্রকাশিত: ০৮. জুন. ২০১৭ | বৃহস্পতিবার

সিলেট বাংলা নিউজ ডেস্কঃ বৃহস্পতিবার (৮ জুন) ব্রিটেনের আগাম নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন দেশটির সাধারণ জনগণ। নির্বাচনে প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল বলতে গেলে সব কটি আসনেই প্রার্থী দিয়েছে। প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টি থেকে ৮ জন বাঙালি মনোনয়ন পেয়েছেন। এদের মধ্যে গত নির্বাচনে জয়ী হওয়া তিনজন বাঙালি এমপি রয়েছেন। তারা হলেন- রুশনারা আলী, টিউলিপ সিদ্দিক ও রুপা হক।

ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি ২০১৫ সালে একজন বাঙালি প্রার্থী দাঁড় করালেও এবার তারা কোনো বাঙালি প্রার্থি দেয়নি। আরেক বিরোধী দল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে দু’জন বাঙালি প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। আরও দু’জন প্রার্থী স্বতন্ত্রভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এবারের নির্বাচনে মোট ১৫ জন বাঙালি প্রার্থী হয়েছেন। সবাই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। তবে আগের যে তিনজন বাঙালি এমপি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ছিলেন তাদেরই পুনর্নির্বাচিত হওয়ার আশা পরিলক্ষিত হচ্ছে। গত নির্বাচনে বাঙালি প্রার্থী ছিলেন ১১ জন। গতবারের নির্বাচনে জয়ী হওয়া বাঙালি প্রার্থীরা এবার নিজ দল থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন।

টিউলিপ সিদ্দিক: বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি টিউলিপ লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন নির্বাচনী আসন থেকে লড়ছেন। শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে শেখ রেহানার বড় মেয়ে টিউলিপ। তিনি গতবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন ক্ষমতাসীন দলের এক ক্ষুরধার প্রার্থীকে পরাজিত করে। আসনটি কনজারভেটিভ দলেরই ছিল, গতবার টিউলিপ লেবার পার্টি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন। অবশ্য তার ভোটের ব্যবধান ছিল সামান্য। টিউলিপ ১ হাজার ১৩৮ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হন। তিনি ভোট পেয়েছিলেন ২৩ হাজার ৯৭৭টি। নির্বাচিত হওয়ার পর লেবার পার্টির শ্যাডো মন্ত্রিসভায় তিনি স্থান করে নিয়েছিলেন। পরে দলীয় বিভিন্ন সিদ্ধান্তে একমত হতে না পেরে সে পদ থেকে পদত্যাগ করেন। বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে তিনি পার্লামেন্টের ভেতরে এবং বাহিরে বেশ জোরালো ভূমিকা রাখায় দেশব্যাপী তার নিজস্ব একটি পরিচিতি করে নিয়েছেন।

রুশনারা আলী : ২০১০ সালে ব্রিটেনের পার্লামেন্টে প্রথম বাঙালি হিসেবে নির্বাচিত হন রুশনারা। তিনি পূর্ব লন্ডনের বাঙালি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেট এলাকার বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো এলাকা থেকে নির্বাচিত হন। ২০১৫ সালের নির্বাচনেও তিনি এ আসন থেকে পুনরায় বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী থেকে তার ভোটের ব্যবধান ছিল প্রায় ২৫ হাজার। কিন্তু এবার তার সঙ্গে আরেক বাঙালি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনি হলেন টিভি ব্যক্তিত্ব আজমল মাশরুর। দুই বাঙালির একই আসনে লড়াই কিছুটা হলেও ভাবিয়ে রেখেছে রুশনারাকে।

আজমল এর আগেও একবার এই আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হয়ে। টাওয়ার হ্যামলেটের আরেক অংশে কেনিং টাউন লাইম হাউসে লড়ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আরেক বাঙালি ওলিউর রহমান। তিনি আগে লেবার পার্টির কাউন্সিলর ছিলেন। পরে জজ গেলওয়ের নবগঠিত রেসপেক্ট পার্টিতে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লেবার পার্টির বর্ষীয়ান নেতা জিম পেট পেট্রিকের সঙ্গে লড়বেন।

রুপা হক : লন্ডনের ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড একটন এলাকা থেকে ২০১৫ সালে লেবার পার্টির প্রার্থী হয়ে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। মাত্র ২৭৪টি ভোট বেশি পেয়ে তিনি জয়ী হন। তার এ আসনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ লেবার পার্টির জন্য। এখানে ক্ষমতাসীন দলের একজন শক্ত প্রার্থীর সঙ্গে তাকে লড়তে হবে। তবে গতবার নির্বাচনে থাকা গ্রিন পার্টি এবার এ আসনে কোনো প্রার্থী না দেয়ায় রুপা হকের জন্য এটি খুশির খবর হতে পারে। কারণ গতবার গ্রিন পার্টির প্রার্থী এ আসনে ১ হাজার ১৮১টি ভোট পেয়েছিল। এবার তারা রুপাকে সমর্থন দিয়েছে।

আনোয়ার বাবুল মিয়া : ইংল্যান্ডের ওয়েলউইন অ্যান্ড হ্যাটফিলড আসন থেকে লেবার পার্টির মনোনয়ন পেয়ে লড়ছেন। তিনি ২০১৫ সালের নির্বাচনে লেবার পার্টির প্রার্থী ছিলেন। তার এ আসনটি কনজারভেটিভ পার্টির নিরাপদ আসন। টিভি ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন চ্যারেটি সংগঠনের সঙ্গে তিনি জড়িত। পেশায় তিনি আইনজীবী।

রওশন আরা : লেবার পার্টি থেকে তিনি প্রথম মনোনয়ন পান এবারের নির্বাচনে লড়ার। তার নির্বাচনী এলাকা সাউথ থেনেড। ব্রিটেনের কট্টরপন্থী দল ইউকিপ এ এলাকার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ইউকিপ স্থানীয় কাউন্সিল দখল করে রেখেছে। এখানে তাদেরই জয়জয়কার। এ অবস্থায় রওশন লেবার পার্টির প্রার্থিতা পেয়ে প্রথম কোনো এশীয় হিসেবে ভোটে লড়ছেন। রাজনীতির পাশাপাশি সামাজিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ডে তিনি জড়িত রয়েছেন।

ফয়সাল চৌধুরী : স্কটল্যান্ডের এডিনবারা সাউথ ওয়েস্ট এলাকা থেকে লেবার পার্টির মনোনয়ন পেয়ে ফয়সাল চৌধুরী এমবিই নির্বাচনে লড়ছেন। সামাজিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ছাড়াও তিনি ক্যাটারিং ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তিনি এডিনবারা অ্যান্ড লথেইন্স রিজিওনাল ইকুয়েলিটি কাউন্সিলের চেয়ারম্যান। তাছাড়া এডিনবারা বাংলাদেশ সমিতির চেয়ারম্যানও তিনি। লেবার পার্টির রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘদিন জড়িত। তার আসনটি লেবার পার্টির কাছে নেই দীর্ঘ সময় থেকে। ফয়সল চৌধুরী নির্বাচনে জয়ী হতে পারলে আসনটি লেবারের দখলে আসবে। আর ইংল্যান্ডের বাহিরে তিনি হতে পারেন প্রথম কোনো বাংলাদেশি এমপি।

সাজু মিয়া : লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন সাজু মিয়া। তার নির্বাচনী আসন হচ্ছে ওয়াইর ফরেস্ট। তিনি ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলর। পেশায় একজন আইনজীবী। বিভিন্ন সামাজিক ইস্যুতে তিনি সব সময় সক্রিয় ভূমিকা রেখে আসছেন। ২০১৬ সালের কাউন্সিলর নির্বাচনে তিনি জয়ী হন।

অন্যান্য : আবদুল্লাহ রুমাল খান ব্রিটেনের পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। লেবার পার্টি থেকে বাঙালিদের মধ্যে মনোনয়ন পেয়েছেন আমরান হোসেইন।মেরিনা আহমদ মনোনয়ন পেয়েছেন ইংল্যান্ডের বেকেনহ্যাম এলাকা থেকে। এটি কনজারভেটিভ পার্টির নিরাপদ আসন। লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে আরও যারা বাঙালি প্রার্থী হয়েছেন-

আসুক আহমদ লুটন সাউথ থেকে প্রার্থী হয়েছেন। প্রিন্স সাদিক চৌধুরী নর্দাম্পটন আসন থেকে লিবারেল ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী। মুহাম্মদ সুলতান ওয়েলস আর্ফস থেকে লিবারেল ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী হয়েছেন।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৩৭৪ বার

Share Button

Callender

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930