- জৈন্তাপুরে ছাত্রদলের সাথে হাকিম চৌধুরীর মতবিনিময়
- সোনালী প্রজন্ম মেধাবৃত্তি পরীক্ষা সম্পন্ন
- সিলেট জেলা শ্রমিক দলের কর্মী সভা
- সিলেটে কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে ধানের পোকামাকড় দমন ব্যবস্থাপনা শীর্ষক মাঠ দিবস পালিত
- জুলাই বিপ্লবে জন্ম নেওয়া ‘টিম অনওয়ার্ড’ এর পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা
- মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরীর ইন্তেকালে সিলেট মহানগর জামায়াতের শোক
- জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ সিলেট জেলা উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগর গণসমাবেশ শায়খ জিয়া উদ্দীন
- আগামীকাল ২৪ নভেম্বর জনসভা ও গণমিছিল সফল করুন : বাসদ
- ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাথে প্রবাসী আজমের মতবিনিময়
- সংস্কারের পাশাপাশি নির্বাচনের রোড ম্যাপ ঘোষনা হলে সংশয় দূর হবে
» চালের দাম রেকর্ড ভেঙেছে
প্রকাশিত: ১০. জুন. ২০১৭ | শনিবার
সিলেট বাংলা নিউজ ডেস্কঃ অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে চালের দাম। বাজারে মোটা চালই এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজিতে। সরু চালের কেজি ৬০ টাকা ছাড়িয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে মোটা চালের দাম রেকর্ড ভাঙায় নিম্ন আয়ের মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।
সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যমতে- স্বাধীনতার পর ২০০৭ এবং ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে মোটা চালের কেজি ৪০ টাকা এবং সরু চাল ৫৬ টাকায় উঠেছিল।
এদিকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের চাল-গমের দামবিষয়ক প্রতিবেদন অনুযায়ী- মোটা চালের দাম বিশ্বে এখন বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি। এরপরই আছে পাকিস্তান, যা বাংলাদেশের চেয়ে ১০ টাকা কম।
বর্তমানে বিশ্বে সবচেয়ে সস্তায় চাল বিক্রি করছে ভিয়েতনাম। সেখানে চালের দাম গড়ে প্রতি কেজি ৩৩ টাকা ৬২ পয়সা। প্রতিবেশী দেশ ভারতে প্রতি কেজি চালের দাম ৩৪ টাকা ৪৩ পয়সা, থাইল্যান্ডে ৩৭ টাকা ৮১ পয়সা ও পাকিস্তানে ৩৮ টাকা ৫৪ পয়সা। সরকারি হিসাবেই দেশে প্রতি কেজি চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকায়। চালের এই দরও দেশের মধ্যে নতুন রেকর্ড। এছাড়া বাজারে নতুন বোরো চাল এলেও পুরনো চালের মতো এই চালের দামও চড়া। যদিও আশা করা হয়েছিল নতুন মৌসুমের ধান উঠলে বাজারে চালের দাম কমবে।
আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (ইফপ্রি) হিসাবে- এর আগে ২০১৬ সালের অক্টোবরে দেশে প্রতি কেজি চালের দাম ৩৮ টাকায় উঠেছিল। ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে প্রতি কেজি চাল ছিল ৩৬ টাকা। এরপর ২০০৯ সালে ধানের বাম্পার ফলনের পর দেশে চালের দাম কমতে থাকে। ২০১২ সালে প্রতি কেজি চাল ২৬ টাকায় নেমে আসে। ২০১৪ সালের পর চালের দাম আবারো বাড়তে থাকে। ২০১৪ সালে ৩০ এবং ২০১৫ সালে ৩৩ টাকায় ওঠে চালের দাম। ২০১৬ সালে মোটা চাল ৩৪ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
যদিও কম দামে চাল দেয়া ছিল সরকারের অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি। ইফপ্রির ২০১৫ সালের জরিপ অনুযায়ী- বাংলাদেশের মানুষের গড়ে খাদ্যশক্তির (ক্যালরি) ৬৫ শতাংশ আসে চাল বা ভাত থেকে। আর প্রতিদিন তারা খাবারের পেছনে যে অর্থ ব্যয় করে, তার ২৭ শতাংশ যায় চাল কিনতে। সংস্থাটির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী- দাম বাড়লে গরিব মানুষ ভাত খাওয়া কমিয়ে দেয়।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে- চালের দামটা বেশি বেড়েছে গত ৫ মাসে। প্রতি মাসেই সব ধরনের চালে কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ২ থেকে ৩ টাকা করে। দাম বাড়তে বাড়তে তা এখন সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার এবং টিসিবির পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত জানুয়ারিতে মোটা চালের (স্বর্ণা এবং পারিজা) কেজি ছিল ৪০ টাকা। ফেব্রুয়ারিতে তা বেড়ে হয় ৪২ টাকা। এরপর মার্চে ৪৪ টাকা, এপ্রিলে ৪৬ টাকা এবং মে মাসে এসে হয় ৪৭ থেকে ৪৮ টাকা। আর জুন মাসে সেটি ৫০ টাকা ছাড়িয়েছে। অথচ গত বছরের জুনেও এক কেজি মোটা চাল ৩০ থেকে ৩২ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। টিসিবির তথ্যমতে- গত এক বছরে দেশের বাজারে মোটা চালের দাম বেড়েছে ৪২.১৯ শতাংশ।
মোটা চালের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সরু চালের দামও। বাজারে সবচেয়ে ভালো মানের মিনিকেট চালের কেজি এখন ৬৫ টাকায় ঠেকেছে, যা জানুয়ারিতে ছিল ৫৬ টাকা। অর্থাৎ গত পাঁচ মাসে উন্নতমানের মিনিকেট চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা। প্রতি মাসেই কেজিপ্রতি বেড়েছে ২ থেকে ৩ টাকা করে।
আর টিসিবির তথ্য বলছে, গত বছরের এই সময় উন্নতমানের মিনিকেট ও নাজিরশাইল চালের কেজি ছিল গড়ে ৪৮ থেকে ৫২ টাকা। এছাড়া এখন বাজারে সাধারণ মানের মিনিকেট চালের কেজি ৫৬-৬০ টাকা, যা গত জানুয়ারিতে ছিল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। আর টিসিবির তথ্যমতে- সাধারণ মানের মিনিকেট চালের দাম গত বছরের এই সময়ে ছিল ৪৪ থেকে ৪৮ টাকা। এক বছরে বেড়েছে ১৫ শতাংশের বেশি।
মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ বেশি খায় বিআর-২৮ এবং পাইজম চাল। এই দুই প্রকারের চালেও দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক। বাজারে এখন প্রতি কেজি বিআর-২৮ চালের কেজি ৫২ থেকে ৫৬ টাকা। আর পাইজম চালের কেজি ৫০ থেকে ৫৪ টাকা। অথচ জানুয়ারিতেও এই দুই প্রকার চালের দাম ছিল ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা। আর গত বছরের এই সময় দাম ছিল ৪০ থেকে ৪২ টাকা। এক বছরে মাঝারি মানের এ চালে দাম বেড়েছে ১৯.৫১ শতাংশ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, চালের এই উচ্চমূল্যে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে দেশের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। যারা সচ্ছল ও সম্পদশালী, চালের দাম বৃদ্ধিতে হয়তো তাদের গায়ে খুব একটা লাগে না। মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষও লোকলজ্জার ভয়ে কিছু বলতে পারে না বা কোনো না কোনোভাবে সংসার চালিয়ে নিচ্ছেন। কিন্তু রাজধানীসহ সারা দেশের খেটে খাওয়া মানুষ পড়েছে চরম বিপাকে। তাদের সংসারের খরচ বেড়েছে, তাই এখন তারা ভাত খাওয়া কমিয়েছে আগের চেয়ে।
রাজধানীর কাওরানবাজার ও রেলগেট এলাকায় রিকশা চালান মোকছেদ আলী। বাড়ি গাইবান্ধায়। তিনি বলেন- পরিবারের সদস্য ৪ জন। তিনবেলাই ভাত খেতে হয়। প্রতিদিন আড়াই কেজি চাল কিনতে হয়। এক বছর আগে প্রতিদিন চাল কিনতে আমার খরচ হতো ৮০ টাকা (৩২ টাকা কেজি দরে), এখন খরচ হচ্ছে ১২০ টাকা। ৪০ টাকা বেশি। তার মতে- আমাদের তো আয় বাড়েনি। এত টাকা দিয়ে চাল কিনে আমরা কী করে বাঁচবো। তিনি বলেন- দিন তো আর থেমে থাকে না। দিন ঠিকই পার হচ্ছে, তবে খুব কষ্টে। ভাত খাওয়া কমিয়েছি। আগে একবেলায় দুই প্লেট ভাত খেতাম। এখন এক প্লেট।
রাজধানীর কাওরানবাজারের মতলব ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী চাল ব্যবসায়ী সমিতির সেক্রেটারি এমএ রায়হান জগলু বলেন- চালের বাজার এত বেসামাল আগে কখনো দেখেনি। আর দাম বৃদ্ধির কারণে ক্রেতার সঙ্গে প্রতিদিনই বাহাস করতে হচ্ছে। তিনি বলেন- আগে যেখানে এক বস্তা (৫০ কেজির) মোটা চাল ৩৮ টাকা কেজি দরে ১ হাজার ৯০০ টাকায় কিনেছি, এখন সেটা কিনতে হচ্ছে ৪৬ টাকা কেজিতে ২ হাজার ৩০০ টাকায়। বস্তা প্রতি ৪০০ টাকা বেশি বিনিয়োগ করতে হচ্ছে। লাভও কমেছে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলেন- দফায় দফায় চালের দাম বৃদ্ধি পেলেও বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের তরফ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেই।
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন- চালের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। আর সরকার তো স্বীকারই করতে চায় না যে চালের দাম ক্রেতার নাগালের বাইরে গেছে।
এদিকে হাওর অঞ্চলের ৭টি জেলায় এ বছর আগাম বন্যায় ব্যাপক ফসলহানি হয়েছে। আর ১৯টি জেলায় ধানক্ষেতে ছত্রাকের আক্রমণে (ব্লাস্ট রোগ) উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই দুই কারণে এ বছর ১০ লাখ টনের বেশি বোরো ধান নষ্ট হয়েছে।
এ অবস্থায় ভিয়েতনাম থেকে জরুরি ভিত্তিতে ৩ লাখ টন চাল আমদানির সমঝোতা স্মারক নবায়ন করেছে সরকার। ২০১১ সালে ভিয়েতনামের সঙ্গে ওই সমঝোতা স্মারকটি করেছিল বাংলাদেশ।
এটা ছাড়াও আরো দেড় লাখ টন চাল আমদানি করতে গত দুই সপ্তাহের মধ্যে তিনটি আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করেছে বাংলাদেশ।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৫৮৬ বার
সর্বাধিক পঠিত খবর
- হত্যা না করেও ২৬ জনের উপর হত্যা মামলার করলো আওয়ামী লীগ
- সুনামগঞ্জ জেলায় নির্বাচনী হাওয়া; সরেজমিন প্রতিবেদন
- জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শাহীন আলী গ্রেফতার; উত্তাল দক্ষিণ সুরমা
- তালাকনামা জালিয়াতির দায়ে বিশ্বনাথে কাজী গ্রেফতার; ৭ জন আসামীর উপর গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী
- কিডনী রোগীদের জরুরী তথ্য কণিকা জানা আবশ্যক
এই বিভাগের আরো খবর
- দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা খুলে দেওয়ার দাবিতে সিলেট মহানগর সংবাদপত্র হকার্স সমিতির মানববন্ধন
- ফুলবাড়ী চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন দাবি
- বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় জেলা ও মহানগর বিএনপির দোয়া মাহফিল
- গোয়াইনঘাটের বিছনাকান্দিতে বিএনপির দোয়া মাহফিল সম্পন্ন
- দিনার খান হাসুর নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীদের অবস্থান কর্মসূচী পালন