শিরোনামঃ-

» ত্রিপুরার বিজেপি নেতার অনৈতিক কার্যকলাপ তোলপাড়

প্রকাশিত: ০৪. জুলাই. ২০১৭ | মঙ্গলবার

সিলেট বাংলা নিউজ আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে নির্বাচনের আগেই ফাঁস হল বিজেপির বড় ধরনের কেলেঙ্কারি।

দলের রাজ্য স্তরের নেত্রীকে বিয়ের নামে শারীরিক সম্পর্ক ও প্রতারণার অভিযোগ উঠল দলেরই গুরুত্বপূর্ণ নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ব্যক্তি গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে লড়াই করেছিলেন।

অন্যদিকে, স্বচ্ছ ভাবমূর্তি নিয়ে রাজ্যের ক্ষমতায় বসতে চায় বিজেপি। তাই নির্বাচনের আগে দলের গায়ে কোনও দাগ লাগুক সেটা একেবারেই না পছন্দ ত্রিপুরা বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের। সেই কারণেই নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িত নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করল রাজ্য নেতৃত্ব।

অভিযুক্ত ব্যক্তি হচ্ছেন ত্রিপুরার বিজেপি নেতা আইনজীবী বিদ্যুৎ ঘোষ। ২০১৩ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির হয়ে পশ্চিম ত্রিপুরার রামনগর কেন্দ্র থেকে লড়াই করেছিলেন আইনজীবী বিদ্যুৎ ঘোষ। একাধিক ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত এই বিজেপি প্রার্থীকে সিপিএমের রতন ঘোষের কাছে পরাস্ত হতে হয়।

৪৪ বছর বয়সী বিদ্যুৎ ঘোষের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ২০১১ সালে লুকিয়ে দলেরই রাজ্য স্তরের এক নেত্রীকে বিয়ে করেন। সমাজ এবং প্রথম পক্ষের স্ত্রীর কাছে সম্পূর্ণ বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন। দ্বিতীয় পক্ষের এই স্ত্রীর নাম দীপা দাস। তিনি আবার ত্রিপুরা রাজ্য বিজেপির এসসি মোর্চার সাধারণ সম্পাদিকা।

রাজধানী আগরতলা সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি রয়েছে অভিযুক্ত বিদ্যুৎ ঘোষের। সেই সকল স্থানে বিভিন্ন সময়ে তারা একসঙ্গে দাম্পত্য জীবন কাটিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন দীপা দেবী। কিন্তু, কখনই সামাজিকভাবে স্ত্রীর স্বীকৃতি মেলেনি। তার কথায়, “আমরা কসবা কালী মন্দিরে বিয়ে করেছিলাম। বিয়ের সময় বিদ্যুৎ ঘোষ আমায় বলেছিল যে ২০১৩ সালে ভোটে জেতার পর আমায় প্রকাশ্যে স্ত্রীর মর্যাদা দেবে।’ কিন্তু তা আর হয়নি।”

এখানেই শেষ নয় বিজেপি নেতানেত্রীর প্রেম কাহিনী। কাহিনীর শুরুটাও বেশ জটিল। জানা গিয়েছে, অভিযোগকারী দীপা দাস পূর্বে বিবাহিতা ছিলেন। তার ডিভোর্সের মামলা লড়েছিলেন বিদ্যুৎ ঘোষ। সেই সময়েই আলাপ হয় বিদ্যুৎ-দীপার। ২০১১ সালের বিয়ের সময় বিদ্যুৎ ঘোষ বলেছিলেন যে তার পত্নী বিয়োগ হয়েছে। সেই কারণেই তিনি দীপা দেবীকে বিয়ে করছেন। পরে দীপা বিষয়টি জানতে পারলে তাকে বোঝানো হয় যে প্রথম স্ত্রী সুতপার সঙ্গে বিদ্যুতের কোনও যোগাযোগ নেই। প্রথম স্ত্রী সুতপা ছেলেকে নিয়ে দিল্লিতে থাকে।

দীপা দেবীর আরও অভিযোগ, ২০১৩ সালে নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি চেপে যেতে থাকেন আইনজীবি বিদ্যুৎ ঘোষ। ত্রিপুরা রাজ্য বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন করেন দীপাকে। ২০১৮ বিধানসভা নির্বাচনে জিতলে দ্বিতীয় বিয়ে এবং স্ত্রীর বিষয়টি প্রকাশ্যে নিয়ে আসবেন। এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিপার মুখ বন্ধ করে রেখেছিলেন বিদ্যুৎ। ২০১৮ বিধানসভা নির্বাচনের আশাতেই দিন কাটাচ্ছিলেন দীপা দাস।

কিন্তু, তাল কাটল চলতি মাসের মাঝামাঝি। আচমকা ত্রিপুরা রাজ্য বিজেপির এসসি মোর্চার সাধারণ সম্পাদিকার পদ থেকে দীপা দেবীকে সরিয়ে প্রথম স্ত্রী সুতপাকে বসান বিদ্যুৎ ঘোষ। একইসঙ্গে দীপার প্রথম বিয়ের ডিভোর্সের সময় খরপোষ বাবদ পাওয়া লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করে বিদ্যুৎ এবং সুতপা। নিজেদের কৃতকর্মের কথা কবুল করে দীপাকে বলে সমগ্র বিষয়টি চেপে যেতে। কারণ ভোটের আগের এই কেলেঙ্কারি ফাঁস হলে টিকিট পাওয়া যাবে না। ভাগ্যক্রমে তা পেলেও কখনই জয় হাসিল হবে না।

প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় নিজেদের বাড়িতে ডেকে দীপার উপরে চড়াও হয় বিদ্যুৎ ও সুতপা। ওই সময় দীপাকে চিনতেও অস্বীকার করেন বিদ্যুৎ। সেই সঙ্গে বাইরে মুখ খুললে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেয় বলে অভিযোগ করেছেন দীপা। বিদ্যুৎ ঘোষের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক শোষণ ও নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন দীপা দাস। একইসঙ্গে সুতপা সহ তাদের এক সাগরেদের বিরুদ্ধে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকির অভিযোগও দায়ের করেছেন তিনি। সমগ্র ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ত্রিপুরার খোয়াই জেলার তেলিয়ামুড়া থানার পুলিশ।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৪৩৭ বার

Share Button

Callender

September 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30