শিরোনামঃ-

» ব্যাংকিং সেক্টর এগিয়ে এলে প্রচুর তরুণ উদ্যোক্তা তৈরি হবে: ড. আতিউর

প্রকাশিত: ২৬. জুলাই. ২০১৭ | বুধবার

ইকোনমিক ডেস্কঃ একজন দরিদ্র কৃষকের সন্তান রাখাল বালক থেকে দেশের সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীর পদ অলংকৃত করা তো রূপকথাকেও হার মানায়! তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান।

সততা, মেধা, নিষ্ঠা ও পরিশ্রম দিয়ে গড়া তার জীবন বর্তমান তারুণ্যকে বরাবরই অনুপ্রাণিত করে। ড. আতিউর রহমান তরুণদের নিয়ে তার নানা কার্যক্রম ও ভাবনার কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন-

আমি গ্রামের মানুষ, গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছি। কিন্তু আমার পরম সৌভাগ্য যে, তখনকার দিনে স্কুলে হয়তো ভালো অবকাঠামো ছিল না, এখনকার মতো সুন্দর ভবন ছিল না, কিন্তু ভালো শিক্ষক ছিলেন। সে কারণেই আমরা গ্রাম থেকে লেখাপড়া করেও ভালো ইংরেজি শিখতে পেরেছি, অঙ্ক শিখেছি এবং জাতীয় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হতে পেরেছিলাম। সেখানে দেশের বিভিন্ন পর্যায় থেকে আসা বাছাই করা মেধাবীদের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরেছিলাম।

এই মেধাবীদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নেতৃত্ব দেওয়ার জায়গা অর্জন করাটাও বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল। মানুষ তখনই গড়ে ওঠে, যখন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়। আমার সেই চ্যালেঞ্জটা ছোটবেলা থেকেই ছিল। আমাদের সময়ে লেখাপড়া নিয়ে কোন কম্প্রোমাইজ ছিল না।

আমরা যখন এসএসসি বা এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছি, তখন ফলাফলে সেরা ১০ জনের নাম আসতো। দু’বারই আমার নাম ছিল। আমি বলবো যে, ভালো করার অনুপ্রেরণা সমাজই দিতো, মেধাবীদের মূল্যায়ন করতো।

ইন্টারমিডিয়েট পড়া শেষ করে বের হওয়ার পর আরও একটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলাম। আমার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার কিছু পরেই মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলো। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আমরা একটা অভূতপূর্ব সময় পেলাম। শিল্পসাহিত্য চর্চা শুরু হলো পুরোদমে।

আমার মনে আছে, ১৩৮০ বঙ্গাব্দে ডাকসুর সাহিত্য প্রতিযোগিতায় আমি চ্যাম্পিয়ন হয়ে গোল্ড মেডেল পেয়েছিলাম। আমি গ্রাম থেকে উঠে আসা ছেলে, এই অর্জন আমার জন্য অনুপ্রেরণা ছিল। তখন একটা চমত্কার সময় চলছিল। মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম তখন ভিপি, মাহবুব জামান সাধারণ সম্পাদক, ম হামিদ ছিলেন সাংস্কৃতিক সম্পাদক। বিশ্ববিদ্যালয়ে তখন লেখাপড়ার ফাঁকে ফাঁকে বৈচিত্রপূর্ণ কর্মকাণ্ডে আমরা জড়িত থাকতাম। তখনকার তারুণ্য ছিল চ্যালেঞ্জিং।

আজকাল পড়াশোনার পাশাপাশি ওরকম কর্মকাণ্ড আমরা তেমনটা দেখি না। আমি পড়াই, দেখি ছেলেমেয়েরা ক্লাসে যায়-আসে, কিন্তু আগেকার সময়ের মতো তেমন সাহিত্য প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে তারা সেভাবে যুক্ত থাকে না। আমাদের শিক্ষকেরা আমাদেরকে উত্সাহ দিতেন। নতুন বই পড়তে বলতেন। এখনকার ছেলেমেয়েরা ক্যারিয়ার নিয়ে অনেক বেশি ভাবে, চাকরিবাকরি নিয়ে ভাবে।

কিন্তু আগে আমরা কেবল ভাবতাম, উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে সুন্দর সমাজ গড়ে তুলব। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হবো। আগেকার ও এখনার তারুণ্যের মধ্যে এই পার্থক্যটাই চোখে পড়ে। তবে এটাও বলতে হয়, এখনকার তরুণরা অনেক প্রযুক্তিমনা, বৈশ্বিক। প্রযুক্তি ও বিশ্বকে জানার নতুন নতুন সুযোগও তাদের আছে।

এখনকার মেধাবীরা বিশ্বমানেরও বটে। তবে এখনকার দুর্বলতা হলো, মধ্যবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্তের ছেলেমেয়েদের উচ্চশিক্ষা অর্জনে কিছু সমস্যা তৈরি হচ্ছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন সংকট রয়েছে, সবাই সেখানে পড়ার সুযোগ পায় না। আর্থিক সমস্যার কারণে সবাই ভালো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়তে পারে না। বিভিন্ন জায়গায় পড়াশোনা করে সবাই ডিগ্রি পাচ্ছে হয়তো, কিন্তু মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত হচ্ছে না। এখন শিক্ষার্থীরা বেশি শিখছে সামাজিকমাধ্যম ও অন্যান্য সুযোগ ব্যবহার করে।

অনেকের উদ্যোক্তা হওয়ার আগ্রহ আছে, নতুন কিছু করার আগ্রহ আছে। এটা আগেকার সময়ে ছিল না। এই ছেলেমেয়েদের নেতৃত্ব দিয়ে, উত্সাহ দিয়ে গড়ে তোলাও এখন একটা চ্যালেঞ্জ।

উদ্যোক্তা তৈরির উপায়গুলো শিক্ষামাধ্যমেও আসতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে। নতুন নতুন কাজে অংশ নিতে উত্সাহ দিতে পারে। আমরা দেখি, আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ফেসবুক-গুগলের মতো প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা তৈরি করে দিয়েছে।

আমি বাংলাদেশ ব্যাংকে থাকার সময় উদ্যোক্তা তৈরির জন্য ঢাকা চেম্বার অব কমার্সের সঙ্গে একটা চুক্তি স্বাক্ষর করে এসেছিলাম, এসএমই থেকে ঋণ দেওয়ার কথা ভেবেছিলাম এবং একশো কোটি টাকার একটা ফান্ড তৈরি করেছিলাম। তবে পরে ঢাকা চেম্বার সেভাবে এগোতে পারেনি, কিন্তু সুযোগটা এখনো আছে। নারীদের জন্যও কাজ করেছি। এসএমইয়ের মাধ্যমে অনেক নারী উদ্যোক্তা তৈরির চেষ্টা করেছি। অন্যান্য অনেক উদ্যোগের পাশাপাশি সব ব্যাংককে একটা শর্ত দিয়েছিলাম যে, তাদের প্রত্যেক শাখা থেকে প্রতিবছর অন্তত একজন নারী উদ্যোক্তাকে টাকা দিতে হবে।

এভাবে একধাক্কায় প্রতিবছর ১০ হাজার নতুন নতুন নারী উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছিল। আমাদের কর্মকর্তাদেরকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম। দেশে উদ্যোক্তা তৈরি ব্যাপারে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক নেতৃত্ব দিচ্ছিল, এটা অনেক দেশের কাছে চমকপ্রদ বিষয় ছিল।

এসএমইতে যেভাবে জোর দিচ্ছিলাম, তার সঙ্গে তরুণদের দারুণ সম্পর্ক ছিল। তরুণ উদ্যোক্তারা কেবল নিজেরাই উদ্যোক্তা হয় তা নয়, তারা অনেকের কর্মসংস্থানও তৈরি করে দেয়।

আগে তরুণ প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের বিদেশে কোন লাইসেন্স নিতে চাইলে, আউটসোর্সিং করতে চাইলে কিংবা অনলাইনে কোনকিছু অর্ডার করতে চাইলে ক্রেডিট আদান-প্রদানের সে সুযোগটা ছিল না।

আমরা সেটা তৈরি করলাম, যাতে সহজেই অর্থ লেনদেন করা যায়। তৃণমূল পর্যায়ে অনেকেরই ক্রেডিট কার্ড নেই। ব্যাংকগুলোকে ভার্চুয়াল ক্রেডিট কার্ড করার নির্দেশ দিলাম।

এছাড়া, মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা আছে এখন। এক এটিএমে সব ব্যাংকের টাকা তোলা যাচ্ছে। বড় বিপ্লব ঘটে গেছে ব্যাংকিংয়ে, ই-কমার্সে।

ব্যাংকে চাকরির জন্য এখন যারা আবেদন করেন, তাদের কাছ থেকে কোন পয়সা নেওয়া হয় না। আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে একটা সার্কুলার জারি করে বলেছিলাম, যারা ব্যাংকিং সেক্টরে চাকরির আবেদন করবেন, তাদের কাছ থেকে কোন টাকা নেওয়া যাবে না।

নিম্নবিত্ত পরিবারের অনেকেই আছেন, যারা পড়াশোনা শেষ করে চাকরি খোঁজেন, এসময়টায় অর্থকষ্টে ভোগেন, কিন্তু চাকরির আবেদন করতেও তাদেরকে হাজার হাজার টাকা জোগাড় করতে হয়।

আমি বললাম, না, ব্যাংকিং সেক্টরে এটা করা যাবে না। এখন সরকারি-বেসরকারি সব ব্যাংকে বিনা পয়সায় আবেদন করা যায়। দেশের পাবলিক ব্যাংকগুলো যে পরীক্ষা নিচ্ছিল, তার অনেক জায়গায় তদবির-দুর্নীতির খবর ও অভিযোগ শুনেছিলাম।

আমি অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাপ করলাম। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অধীনে সব ব্যাংকের নিয়োগ তদারকির কমিটি করা হলো। বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে পরীক্ষা নেওয়া শুরু হলো। শুরুতে এর বিরোধিতা থাকলেও পরবর্তীতে তরুণেরা উপকৃত হয়েছে।

এখন বাংলাদেশ ব্যাংকে দেশের প্রান্তিক জায়গা থেকেও অনেকে চাকরিতে আসছে মেধার জোরে, কোনো তদবির লাগছে না। তরুণরা এখন আশ্বস্ত বোধ করছেন, এটা বলতে পারি।

ব্যাংকগুলোকে নীতিমালার মাধ্যমে বলা হয়েছে, শিক্ষাখাতে ব্যয় করার জন্য কর্পোরেট সোশ্যাল রেস্পনসিবিলিটি-সিএসআর ফান্ডের এক-তৃতীয়াংশ অর্থ বরাদ্দ রাখতে হবে। বৃত্তি দিতে হবে। হাজার হাজার বৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। খুব সাধারণ ও দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েরা এই টাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে। আমি যখন শুরু করি, তখন সিএসআর ফান্ডে প্রথম বছরে ছিল পঞ্চাশ কোটি টাকা।

আমি যখন বেরিয়ে আসি, তখন তা ছিল ছয়শো কোটি টাকা। তরুণ প্রজন্মের জন্য এটা একটা সহায়ক কর্মকাণ্ড হয়েছে বলে আমি মনে করি।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ল্যাবরেটরি স্থাপনে, কনফারেন্স রুম বা অডিটোরিয়াম তৈরিতে ব্যাংকগুলো সহযোগিতা করছে।

আমরা মেয়েদেরকে ব্যাংকিং সেক্টরে আসার জন্য আগ্রহী করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকগুলোতে জেন্ডার পলিসি দিয়েছি। কোনো নারী যেন নির্যাতিত না হন, সে ব্যাপারে কড়া নির্দেশনা দেওয়া ছিল এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হেল্পলাইন ছিল।

আমরা নির্দেশনা দিয়েছিলাম, সন্ধ্যা ৬টার আগেই নারী কর্মকর্তাদের ছুটি দিতে হবে। এর বাইরেও নিশ্চিতভাবে ছয়মাসের ম্যাটারনিটি লিভ দেওয়াসহ নারী কর্মকর্তাদের ছোট ছোট বাচ্চাদের জন্য বিশ্বমানের ডে-কেয়ার সেন্টার করা হয়েছে।

আমাদের তরুণদের যারা বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগদান করছেন, তাদেরকে মানুষের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার জন্য আমরা ছয়মাসের ফাউন্ডেশন ট্রেনিংয়ের মধ্যে পনেরো দিন থেকে একমাসের জন্য গ্রামে পাঠাতাম। তারা গ্রামাঞ্চলে কৃষি ঋণ, এসএমই ও অন্যান্য ব্যাংকিং কার্যক্রম সম্পর্কে ধারণা দিয়ে আসতেন। শহরের ছেলেমেয়েরা গ্রামে গিয়ে থেকে এসে ইতিবাচকভাবেই কাজ শুরু করত। ফাউন্ডেশন ট্রেনিং শেষে সপ্তাহখানেকের জন্য বিদেশে পাঠানো হতো অন্যান্য দেশের ব্যাংকিং সম্পর্কে সম্যক ধারণা নেওয়ার জন্য। এরকম অনেক উদ্যোগ আছে।

উচ্চশিক্ষারও অনেক সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। যারা বিদেশে পড়ার সুযোগ পেত তাদেরকে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা করে দেওয়া হতো। এআইটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজসহ বিভিন্ন বিষয়ে মাস্টার্সের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। প্রতিবছরই বিদেশে ছোট ছোট নানা প্রশিক্ষণে যাওয়ার সুযোগ থাকে। বাংলাদেশ ব্যাংক এখন অনেক অগ্রসর, এজন্য এমনও হয়েছে যে, আমাদের নবীন কর্মকর্তাদের অনেকে বিসিএস উত্তীর্ণ হয়েও বাংলাদেশ ব্যাংক ছেড়ে যাননি। অনেকে বিসিএস বা অন্য চাকরিতে যাওয়ার জন্য দোটানায় ভুগতেন, তখন তাদেরকে একবছরের ছুটি দেওয়া হতো। অন্য চাকরি ভালো না লাগলে পুনরায় বাংলাদেশ ব্যাংকে ফেরত আসার সুযোগ পেয়েছেন তারা। এখন  সেন্ট্রাল ব্যাংকিংকে একটা মর্যাদাপূর্ণ পেশা হিসেবে দাঁড় করানো হয়েছে।

তরুণ প্রজন্মকে উত্সাহিত করার জন্য আরও অনেক কাজ করেছি। আমাদের ছেলেমেয়েরা শিক্ষার শুরু থেকেই যদি আর্থিক শিক্ষা না পায়, তবে তো বড় হলে ভালো উদ্যোক্তা কেমন করে হবে? আমরা স্কুল পর্যায়েও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম।

এমনকি, ৬ থেকে ১৮ বছর বয়সের শিশুশিক্ষার্থীরাও অ্যাকাউন্ট করেছে। একটি পত্রিকার প্রতিবেদনে এসেছে, এরইমধ্যে এমন ১২ লক্ষ অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। ১ হাজার ২১ কোটি টাকা তারা ব্যাংকে জমিয়েছে।

এই জমানো টাকা তারা ভবিষ্যতে বড় হয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার কাজে ব্যয় করতে পারবে। আমি বর্তমান গভর্নরের সঙ্গে এসব প্রসঙ্গে আলাপ করলাম। তিনি শিক্ষাসচিবের কাছে চিঠি লিখেছেন, যেন পাঠ্যক্রমে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত আর্থিক শিক্ষা সংযোজন করা হয়। এরকমভাবেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক নানা ইতিবাচক কাজ করছে।

যাদের কথা কেউ ভাবে না, সেই পথশিশুদের জন্যও আমরা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করেছি। শুরুতে অনেকে সায় দেননি, কারণ অনেকেই বললেন এই শিশুদের অভিভাবক নেই, বাবা-মা নেই, তাদের হয়ে কে দাঁড়াবে। আইনজীবীর কাছে পাঠাতে বলায় একজন আইনজীবীও শুরুতে সম্মতি দিলেন না। আমি নিজে অন্য একজন আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে বললাম, আমি যদি অভিভাবক হই তাদের?

লিখে দিন, যে কেউ তাদের অভিভাবকত্ব গ্রহণ করলে তাদের অ্যাকাউন্ট করা যাবে। সেভ দ্য চিল্ড্রেন বা এরকম কিছু প্রতিষ্ঠানকে বললাম, আপনারা পথশিশুদের নিয়ে কাজ করছেন যেহেতু তাই তাদের অভিভাবকত্বের দায়িত্ব নিন। আমাদের তরুণরা আউটসোর্সিংয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে বলে জানলাম।

আমরা পে-পল সেবা দেশে চালু করার উদ্যোগ নিয়েছি। যেখানে ব্যাংক নেই, সেখানে এজেন্ট ব্যাংকিং আছে, মোবাইল ব্যাংকিং আছে। অর্থনৈতিক উন্নতিতে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা। আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংক দারুণ মানবিক উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, যার সুফল আমরা পাচ্ছি এবং তা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৮৮৯ বার

Share Button

Callender

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930