শিরোনামঃ-

» শ্রীপুর কোয়ারীর দখল নেওয়াকে কেন্দ্র করে জৈন্তাপুরে আ.লীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ৫০

প্রকাশিত: ০৪. ডিসেম্বর. ২০১৭ | সোমবার

জৈন্তাপুর থেকে শোয়েব উদ্দিনঃ সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার শ্রীপুর (শ্রীপুর, আসামপাড়া, খড়মপুর) কোয়ারীর দখলকে কেন্দ্র করে সকাল ১১টায় পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগের দুই গ্র“পের মোখামুখি অবস্থান নেয়। এসময় স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ঘটনাস্থলে অবস্থান করলেও তাৎক্ষনিক কোন প্রতিরোধের ব্যবস্থা গ্রহন করেননি। দু গ্রুপের প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছে। বিভিন্ন দাবীতে সিলেট তামাবিল মহাসড়ক দুপুর ১টা ৩০ মিনিট হতে অবরোধ করে রাখে কামাল গ্রুপের লোকজন।

জানা যায়- শ্রীপুর পাথর কোয়ারী দখল নিয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি কামাল আহমদ ও সাধারন সম্পাদক লিয়াকত আলীর লোকজন বেশ কয়েকদিন থেকে কোয়ারীর পাথর উত্তোলন করা নিয়ে একে অন্যের প্রতি দোষারুপ করে আসছে।

স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন সময় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পতির লক্ষ্যে কয়েক দফা বৈঠক হয়। কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি হয়নি। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের নজরে পড়লে সংঘর্ষ এড়াতে রবিবার সকাল ১১টায় ১৪৪ ধারা জারি করে। এরই মধ্যে উভয় পক্ষের লোকজন পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে সকাল ১১টায় মধ্যেই কোয়ারীতে নেমে পড়ে।

একে অন্যের মধ্যে দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় আহত হয় প্রায় অর্ধশত শ্রমিক ও ব্যবসায়ী। আহতরা হলো- উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি ফারুক আহমদ, আনোয়ার হোসেন, সারমিন, হোসাইন আহমদ, নজরুল মিয়া, অহিদ মিয়া, আব্বাস মিয়া, আমিন আহমদ, কালা মিয়া, দেলোয়ার, আব্দুর রশিদ, গোপাল, মোস্তাক আহমদ, সালেহ আহমদ, আমিন উদ্দিন, মোহন মিয়া, তাজ উদ্দিন, আব্দুল খালেক, জমশেদ মিয়া, আব্দরি রহিম, আকবর আলী, আব্দুস শুকুর, বাহার, আখলাকুল আম্বিয়া, সাজিদুর রহমান, নুর উদ্দিন, আব্দুন নুর।

অন্যদের নাম জানা যায়নি। গুরুতর আহতদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যরা স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ীতে চলে যান।

এদিকে, জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি শ্রীপুর,আসামপাড়া, খড়মপুর পাথর কোয়ারির মালিকানা দাবীদার কামাল আহমদ বলেন- আমার মলিকানা ভূমি চিহ্নিত করার জন্য ইতোপূর্বে উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত দাবী জানাই, প্রশাসন মাঠ জরিপ করার পরেও অবৈধভাবে দখলদার বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় ও টেলিভিশনে প্রকাশিত পাথর খেকো ভুমি দখলকারী লিয়াকত আলী ও ফয়েজ আহমদ বাবরের নেতৃত্বে আমার খরিদা ভুমি হতে পুলিশ ও বিজিবির সহযোগিতায় এস্কেভেটর, পেলুডার ও শ্রমিক ব্যবহারের মাধ্যমে পাথর উত্তোলন করে আসছে।

রবিবার (৩ ডিসেম্বর) সকালে কোয়ারীতে লামার পর পরই লিয়াকত গ্রুপের অনুসারীদের নেতৃত্বে পুলিশ বিজিবির সম্মুখে লাঠিয়াল বাহিনী আমার সদস্যদের উপর হামলা চালায় এবং পাথর কোয়ারী তাদের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে নেয়।

এ ঘটনার সুষ্ট বিচারের দাবীতে দুপুর ১টায় হতে জৈন্তাপুর বাজার, দরবস্ত বাজার এবং হরিপুর বাজরে সিলেট তামাবিল মহা সড়কে অবরোধ করে রাখে। জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সহ সকল কর্মকর্তাদের এবং শ্রীপুর বিজিবির সকল সদস্যদের অপসারনের দাবী জানিয়ে অবরোধ অব্যাহৃত রাখে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অবরোধ চলছে।

অপরদিকে লিয়াকত গ্রুপের একাধিক সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা কিছু বলেতে রাজি হননি। শুধু জানান, লিডার এ বিষয়ে বলবেন আপনারা লিডারের সাথে যোগাযোগ করেন। লিয়াকত আলীর একাধিক বার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি তবে কোয়ারীর লীজ গ্রহীতা বলে দাবী করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌরীন করিম জানান- যোগদানের পর থেকে কোয়ারীর বিরুধ নিয়ে উভয় পক্ষের লোকজনের সাথে উপজেলা পরিষদে কয়েক দফা বৈঠক করেছি। কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি নয়। কোয়ারী এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে স্বার্থে এবং সাধারণ শ্রমিকদের জান মালের নিরাপত্তার জন্য শ্রীপুর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারী করা হয় এবং উভয় পক্ষের লোকজন ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে পড়ে। যারা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৩৮৯ বার

Share Button

Callender

September 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30