শিরোনামঃ-

» ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট আর ফেরত নেবে না ভারত

প্রকাশিত: ১১. ফেব্রুয়ারি. ২০১৮ | রবিবার

সিলেট বাংলা নিউজ ডেস্কঃ বাতিল হওয়া পুরোনো ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট আর ফেরত নেবে না ভারত। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের হাতে থাকা ৫০ কোটি রুপি এখন অচল হয়ে গেল। গত বৃহস্পতিবারের দর অনুযায়ী, এক রুপির বিপরীতে ১ টাকা ৩০ পয়সা পাওয়া যায়। সেই হিসাবে, বাংলাদেশের হাতে থাকা ৬৫ কোটি টাকার সমমূল্যের রুপি মূল্যহীন হয়ে গেছে।

সম্প্রতি ভারতের রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই) বাংলাদেশ ব্যাংককে জানিয়েছে, বর্তমান আইনে এ ধরনের বাতিল নোট বিদেশি কোনো ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তর কিংবা তাদের কাছ থেকে গ্রহণ করার সুযোগ নেই।

এর আগে ২০১৬ সালের ২১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির এসব নোট ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য আরবিআই গভর্নরকে চিঠি দেন। এই বিষয়ে চিঠিতে তিনি আরবিআই গভর্নরের ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপ কামনা করেছিলেন। চিঠিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে থাকা সব মিলিয়ে ৫০ কোটি রুপির সমমূল্যের ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট আছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের দেওয়া চিঠির এক বছর পর সম্প্রতি জবাব দিয়েছে আরবিআই। তাতে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাতিল হওয়া নোট ফিরিয়ে না নেওয়ার কথা জানিয়েছে।

২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর দিবাগত মধ্যরাত থেকে ভারতে ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট নিষিদ্ধ করা হয়। এটি ছিল আর্থিক খাতে ভারতের বর্তমান মোদি সরকারের অন্যতম বড় সিদ্ধান্ত। নোট নিষিদ্ধ ঘোষণার পর দেশটির মানুষের হাতে থাকা এসব নোট বদলের জন্য ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংকের হাতে থাকা ৫০ কোটি রুপির সমপরিমাণ ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট নিয়ে কী হবে কিংবা ভারতের বাইরে থাকা নোটগুলোর কী হবে, তা নিয়ে কোনো দিকনির্দেশনা ছিল না।

ভারতের অর্থনীতিকে নতুন কাঠামোতে দাঁড় করাতেই মোদি সরকার নোট বাতিলের এই উদ্যোগ নিয়েছিল। নোট নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সে সময় নরেন্দ্র মোদি বলেন, সন্ত্রাস-দুর্নীতির কারণে দেশের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। দুর্নীতি ও কালোটাকা দেশে গভীর শিকড় গেড়ে বসেছে। এ ছাড়া সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়নের উদ্দেশে সীমান্তের ওপার থেকে (পার্শ্ববর্তী দেশ পাকিস্তান) জাল নোট আসছে।

এদিকে, ৭ ও ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিত দুই দেশের বাণিজ্যসচিব পর্যায়ের বৈঠকে বাতিল নোট ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি আবারও উত্থাপন করে বাংলাদেশ। তখন ভারতীয় প্রতিনিধিরা সর্বশেষ হালনাগাদ অবস্থা জানিয়ে বলেন, আরবিআই ইতিমধ্যে চিঠি দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানিয়েছে, বর্তমান আইন অনুযায়ী বিদেশি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছে থাকা বাতিল নোট হস্তান্তর কিংবা গ্রহণ করার সুযোগ নেই। তখন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিষয়টি বিবেচনার জন্য অনুরোধ করা হয়। সভায় বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন বাণিজ্যসচিব শুভাশীষ বসু এবং ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেন ওই দেশের বাণিজ্যসচিব রিতা টেওয়াটিয়া।

ভারতে কালোটাকার প্রভাব কমাতে প্রথমবারের মতো মোদি সরকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু ভারতে প্রথম হলেও বাংলাদেশে ১৯৭৫ সালে এমন একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। সেই সময় ১০০ টাকার নোটের লেনদেন বন্ধ করে দিয়েছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সরকার। তখন ১০০ টাকার নোটই ছিল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ মুদ্রা। ওই সময় অর্থমন্ত্রী ছিলেন এ আর মল্লিক।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন সময়ে বিমানবন্দর ও স্থলবন্দর ব্যবহারকারী যাত্রীর কাছ থেকে অবৈধভাবে বহন করা রুপি জব্দ করেছে শুল্ক কর্তৃপক্ষ, যা পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের ট্রেজারিতে জমা হয়। এর মধ্যে ৫০ কোটি রুপির সমপরিমাণ ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট আছে।

অন্যদিকে দেশের বিভিন্ন স্থানের বর্ডার হাটে রুপিতে লেনদেন করা যায়। বর্ডার হাটে অস্থায়ীভাবে বসানো স্থানীয় সোনালী ব্যাংক শাখার বুথ থেকে রুপি জমা দিয়ে টাকা নেন স্থানীয় অধিবাসীরা ও বিক্রেতারা। এভাবে ৫০০ ও ১০০০ রুপির বেশ কিছু নোটও সোনালী ব্যাংকে জমা হয়। জানা গেছে, বর্তমানে সোনালী ব্যাংকের হাতে প্রায় ৫ লাখ ৩৪ হাজার ৫০০ রুপি রয়েছে।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৬৬৪ বার

Share Button

Callender

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930