শিরোনামঃ-

» বাবা-মায়ের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে রাজীবকে

প্রকাশিত: ১৮. এপ্রিল. ২০১৮ | বুধবার

সিলেট বাংলা নিউজ ডেস্কঃ বাবা-মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে রাজীবকে। বুধবার(১৬ এপ্রিল)  সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হাছান আলী চৌকিদার বাড়ির কবরস্থানে দাফন করা হয় তাকে।

এ আগে সকাল সোয়া ১০টায় দাশপাড়া পুরাতন জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে তার তৃতীয় ও সকাল ৯টায় বাউফল পাবলিক মাঠে তার দ্বিতীয় জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আ.স.ম ফিরোজ, জেলা প্রশাসক ড. মো. মাছুমুর রহমান, পুলিশ সুপার মো. মইনুল হাসান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল্লাহ্ আল মাহমুদ জামানসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তার জানাজার নামাজে অংশ নেন।

উল্লেখ্য,  মঙ্গলবার  (৩ এপ্রিল) বিআরটিসির একটি দ্বীতল বাসের পেছনের গেটে দাঁড়িয়ে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন তিতুমীর কলেজের ওই ছাত্র। তার হাতটি সামান্য বাইরে বেরিয়ে ছিল। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে হঠাৎই পেছন থেকে স্বজন পরিবহনের একটি বাস বিআরটিসি বাসটিকে ওভারটেক করার জন্য বাম দিকে গা ঘেঁষে পড়ে। এতে দুই বাসের চাপে রাজীবের হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। দু’তিনজন পথচারী দ্রুত তাকে পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসকেরা চেষ্টা করেও বিচ্ছিন্ন হাতটি রাজীবের শরীরে আর জুড়ে দিতে পারেননি।

শমরিতা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর রাজীবকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু সাময়িক উন্নতির পর সোমবার(৯ এপ্রিল) থেকে তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। রাজীবের মস্তিষ্ক অসাড় হয়ে যায়। সেই থেকে আর জ্ঞান ফেরেনি তার। ১৩ দিন পরে সোমবার (১৬ এপ্রিল) রাত ১২টা ৪০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে তিনি মারা যান। মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে জোহর নামাজের পর হাইকোর্ট মসজিদে রাজীবের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

পরে ঢাকা থেকে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজীবের মরদেহ পটুয়াখালীর বাউফলে পৌঁছায়। এ সময় নিহতের স্বজনদের আহাজারিতে আশপাশের পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে।

রাজীবের বাবা হেলাল উদ্দিন দাশপাড়া গ্রামের ওই বাড়িতে প্রায় ২৫ বছর আগে জমি কিনে ওখানেই বসতি গড়েন। হেলাল উদ্দিনের মূল বাড়ি ওই উপজেলার ইন্দ্রোকূল গ্রামে। তিন ভাইয়ের মধ্যে রাজীব সবার বড়। এছাড়া ছোট দুই ভাই বাপ্পি ৮ম শ্রেণি এবং হৃদয় ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে লেখাপড়া করে।

রাজীবের তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় মা এবং অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাবা মারা যায়। তাদের মৃত্যুর পর বড় খালা জাহানারা বেগম বোনের তিন ছেলেকে ঢাকায় নিয়ে যান। ঢাকায় খালার বাড়িতে থেকেই তিন ভাই লেখাপড়া করে আসছিলেন। ঢাকার মতিঝিলে খালার বাসায় থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করে স্নাতকে ভর্তি হন রাজীব।

পড়ালেখার ফাঁকে একটি কম্পিউটারের দোকানে কাজ করে নিজের আর দুই ভাইয়ের খরচ চালানোর সংগ্রাম করে আসছিলেন রাজীব।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৪৫০ বার

Share Button

Callender

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930