শিরোনামঃ-

» ছাতকে প্রবাসী পরিবারকে একঘর করার মামলায় ১২ জনের পরওয়ানা

প্রকাশিত: ১২. মে. ২০১৮ | শনিবার

ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ ছাতকে গ্রাম্য পঞ্চায়েত কর্তৃক যুক্তরাজ্য এক প্রবাসী পরিবারকে চাঁদা না দেয়ায় পঞ্চায়েত থেকে একঘরে করে দেয়ার মামলায় ১২জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরওয়ানা জারি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৮ মে) তাদের বিরুদ্ধে এ গ্রেফতারি পরওয়ানা জারি করেন। প্রবাসীর আত্মীয় ও উপজেলার ছৈলা আফজলাবাদ ইউনিয়নের শেখপুর গ্রামের মৃত নছিব আলীর পুত্র ফয়ছল আহমদ বাদি হয়ে ১৩ জন আসামির নাম উল্লেখ করে আমলগ্রণকারি জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন।

এর প্রেক্ষিতে ছাতক থানা পুলিশ ও মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা এস আই মো. আমীর খয়রু ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে গেল ১ ফেব্রুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলগ্রহণকারি আদালত ছাতক জোন সুনামগঞ্জ বরাবরে দাখিল করেন। তবে প্রতিবেদনে আসামি একজনের নাম কর্তন করা হয়।

জানা যায়, উপজেলার দোলারবাজার ইউনিয়নের বুরাইয়া পূর্ব পাড়া গ্রামের মৃত আবদুল আলীর পুত্র যুক্তরাজ্য প্রবাসী আবদুল হাসনাত স্ব-পরিবারে দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাজ্যে বসবাস করে আসছেন। তার অনুপস্থিতিতে বাড়ি-ঘর, জমি-জামা সহায় সম্মত্তি দেখাশুনা করে আসছেন একই গ্রামের আশিক আলী ও তারই স্ত্রী সূর্যবান বিবি। প্রবাসী আবদুল হাসনাত গ্রাম ও এলাকার বিভিন্ন সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদরাসায় এবং গরিব অসহায়দের আর্থিক ভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করে আসছেন।

সম্প্রতি গ্রাম পঞ্চায়েত নামে কতিপয় লোকজন মসজিদের অযুখানা বাবদ ওই প্রবাসীর কাছে ৩লাখ টাকাসহ ১০লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। তাদের দাবিকৃত টাকা এককালিন পরিশোধ করতে অপারগতা প্রকাশ করায় প্রবাসীর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে ওই পঞ্চায়েত নামধারিরা। এক পর্যায়ে ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর রাতে গ্রামের কিছু সংখ্যক সহজ-স্মরল মানুষকে বিভিন্ন ভাবে প্রলোভন দেখিয়ে মৃত মদরিছ আলীর পুত্র রইছ আলীর সভাপতিত্বে গ্রামে এক বৈঠক বসে। বৈঠকে প্রবাসী পরিবারকে গ্রাম-পঞ্চায়েত থেকে বাদ দিয়ে একঘরে করে দেয়া হয়।

এ বিষয়ে একটি রেজুলেশন তৈরি করে উল্লেখ করা হয়, প্রবাসী আবদুল হাসনাত ও তার পরিবারের কেউ গ্রামের আসলে করলে গ্রামের আবাসিক এলাকা গেইটে গাড়ি রেখে জুতা হাতে নিয়ে খালি পায়ে বাড়িতে প্রবেশ করবে।

এ পরিবার পূনরায় পঞ্চায়েতে অর্ন্তভূক্ত হতে চাইলে নগদ ১০লাখ পরিধোশ সাপেক্ষে আলোচনা করা যেতে পারে। প্রবাসীর বাড়িতে থাকা কেয়ারটেকার আশিক ও তার স্ত্রী সূর্যবান বিবিকে ১৫দিনের মধ্যে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে নির্দেশ দেয়া হয়।

পঞ্চায়েত নামধারি সাক্ষরিত নির্দেশ ও সিদ্ধান্তনামায় আরো উল্লেখ করা হয়, প্রবাসী আবদুল হাসনাতের অবর্তমানে তার সহায় সম্পত্তি ভোগদখল করবে মৃত আবদুল আজিজের পুত্র আলী আহমদ। এঘটনায় ২০১৭ সালের ৮ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ আদালতে ১৩জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করা হয়।

এদিকে এ মামলার নির্ধারিত প্রথম তারিখ ছিল ৮ মে মঙ্গলবার। এদিন আসামিরা সংশ্লিষ্ট আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় গ্রামের মৃত গোলাম দস্তগিরের পুত্র আইয়ুব আলী, মৃত বাবরু মিয়ার পুত্র সিরাজ মিয়া, মৃত মদরিছ আলীর পুত্র রইছ আলী, মৃত আবদুল মজিদের পুত্র হাবিবুর রহমান, মৃত নুরুল হকের পুত্র তাজ উদ্দিন, মৃত বাবরু মিয়ার পুত্র আবদুল কাইয়ূম, মৃত আবদুল আজিজের পুত্র আলী আহমদ, মৃত আকবর আলীর পুত্র আবদুল মালিক, মৃত আবদুল আজিজের পুত্র রেজাউল করিম, মৃত সিদ্দেক আলীর পুত্র আবদুল কাইয়ুম ও আবদুর রকিব, জমির হোসেনের পুত্র নজর উদ্দিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরওয়ানা জারি করেন। মামলায় গ্রেফতারি পরওয়ানা জারি করায় আসামিরা গ্রাম থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

অপরদিকে যুক্তরাজ্য প্রবাসী আবদুল হাসনাত দেশে এসে বুধবার দুপুরে তার গ্রামের বাড়িতে কিছু সময় অবস্থান শেষে ফের প্রবাসে চলে গেছেন বলে সূত্রে জানিয়েছে।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৫০৩ বার

Share Button

Callender

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930