সিলেট বাংলা নিউজ ডেস্কঃ বিয়ের ভোজে বসেছেন বরপক্ষের শতাধিক লোক। খানিক পরই মেয়েটি চলে যাবে শ্বশুরবাড়ি। সে যে নিতান্ত বালিকা, এ নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। মর্মব্যথা যার হলো, সে তারই বান্ধবী, সপ্তম শ্রেণিতে পড়া আরেকটি মেয়ে। শেষে তারই চেষ্টায় থেমে গেল এ বিয়ে। বাল্যবিবাহের কবল থেকে রক্ষা পেল বালিকা।
সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রী নাটোর প্রেসক্লাবে গিয়ে সাংবাদিকদের জানায় এ বাল্যবিবাহের কথা। পরে সে খবর পৌঁছে যায় নাটোর সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী হাকিম শামীম ভূঁইয়ার কাছে। তিনি গিয়ে বর-কনের অভিভাবকদের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে এ বিয়ে বন্ধ করেন।
নির্বাহী হাকিমের ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (১১ মে) রাত ১০টার দিকে নাটোর জেলা প্রেসক্লাবে যায় শহরের নববিধান বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রী। সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের মেয়েটি বলে, তার বান্ধবীর বাল্যবিবাহ হচ্ছে। তাঁরা যেন এ বিয়ে বন্ধ করার উদ্যোগ নেন। বিষয়টি নির্বাহী হাকিমকে জানান একজন গণমাধ্যমকর্মী।
নির্বাহী হাকিম ভ্রাম্যমাণ আদালত নিয়ে শহরের কাপুড়িয়াপট্টিতে ওই নাবালিকা মেয়ের বাড়িতে যান তিনি। সে সময় কনের বাড়িতে বিয়ের উৎসব চলছিল। নির্বাহী হাকিমের নির্দেশে এ বিয়ে বন্ধ হয়ে যায়।
সংবাদদাতা ও গণমাধ্যমকর্মীদের ধন্যবাদ দিয়ে নির্বাহী হাকিম শামীম ভূঁইয়া বলেন, ‘গ্রামগঞ্জে এখনো কিছু বাল্যবিবাহ হয়। কিন্তু খোদ শহরের মধ্যে সপ্তম শ্রেণির এক মেয়ের বিয়ে হয়ে যাচ্ছে—এটা ভাবতে পারিনি। ভাবতে পারিনি যে এ খবর আশপাশের কেউ জানাবেন না। তবে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রী এ খবর দেওয়ার জন্য যে রাত ১০টায় প্রেসক্লাব পর্যন্ত ছুটে গেছে, তাতে খুশি হয়েছি। ওই ছাত্রীকে অভিনন্দন। অভিভাবকেরা মুচলেকা দিয়ে নাবালিকা মেয়ের বিয়ে না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আশা করি, তাঁরা আইন ভঙ্গ করবেন না।’