শিরোনামঃ-

» উন্নয়ন রোডম্যাপ-সিলেট বিভাগীয় সেমিনারে ড. মশিউর রহমান

প্রকাশিত: ১৪. অক্টোবর. ২০১৮ | রবিবার

* সব অঞ্চলের মানুষের মতামত নিয়ে হবে আওয়ামীলীগের নির্বাচনী ইশতেহার

* দেশের উন্নয়নে শেখা হাসিনার নেতৃত্ব ছাড়া কোন বিকল্প নেই : ড. মশিউর

স্টাফ রিপোর্টারঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা উপ কমিটির চেয়ারম্যান ড. মশিউর রহমান বলেছেন, সবকিছুর বিকল্প আছে কিন্তু বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ছাড়া কোন বিকল্প নেই। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার যাদুকরী নেতৃত্বে নির্ধারিত সময়ের চার বছর আগেই দেশ মধ্যম আয়ের দেশের স্বীকৃতি লাভে সক্ষম হয়েছে।

শনিবার (১৩ অক্টোবর ২০১৮) সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র কনফারেন্স হলে উন্নয়ন রোডম্যাপ- সিলেট বিভাগ শীর্ষক বিভাগীয় সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। ভিশন-২০২১ ও ভিশন-২০৪১ এর আলোকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অর্থ ও পরিকল্পনা উপ কমিটির উদ্যোগে ও সিলেট চেম্বারের সহযোগিতায় এই বিভাগীয় সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক এবং অর্থ ও পরিকল্পনা উপ কমিটির সদস্য সচিব টিপু মুন্সী এমপি। সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন- সিলেট সরকারী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর হায়াতুল ইসলাম আকঞ্জী এবং সচিত্র প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক সাইফুল ইসলাম রুমেল। আয়োজকদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সভাপতি খন্দকার সিপার আহমদ।

ড. মশিউর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, সমাজসেবীসহ সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের মতামত নিয়ে আগামী নির্বাচনের মেনিফেস্টো তৈরী করা হবে। এটা নেত্রীর নতুন উদ্যোগ। কেন্দ্রীয় নীতিনির্ধারকদের সাথে সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্খার সমন্বয় ঘটে কিনা সেজন্যেই তৃণমূল থেকে মতামত নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন- তৃণমূল থেকে নেয়া মতামত এর আলোকে উন্নয়নের রোডম্যাপ তৈরী করা হবে। তিনি সেমিনারে উত্থাপিত পরামর্শ আওয়ামী লীগের আগামী নির্বাচনী মেনিফেস্টোতে অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করবেন বলে জানান। সিলেটের উন্নয়নে যা কিছু প্রয়োজন তা অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তিনি সিলেট-চট্টগ্রামের মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগ, সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কন্ট্রোল টাওয়ারের সক্ষমতা বৃদ্ধি, স্থলবন্দর সমূহে ব্যাংকিং সুবিধা স্থাপন, প্রবসাীদের বিনিয়োগে সহায়তা প্রদান, পর্যটন খাতের বিকাশে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও কারিগরী প্রশিক্ষণ সম্প্রসারণের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। সিলেটের প্রবাসীদের রেমিটেন্স দেশে বিনিয়োগ করলে দেশ লাভবান হবে।

এছাড়া বর্তমান প্রজন্মের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত তরুণদের জ্ঞান দেশের কাজে লাগাতে হবে। সরকারের সুযোগ সুবিধাগুলো বাইরে ছড়িয়ে দিতে হবে এবং সরকার যেভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্র সম্প্রসারণ করছে তাও প্রচার করতে হবে।

ড. মশিউর রহমান বলেন- অনেক কাজই বিগত সরকার করেনি, কিন্তু আমরা শুরু করেছি এবং এই কাজ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, রাস্তা ঘাটে হেঁটে যারা বক্তৃতা দেয় তারা বিরোধী দল নয়, আমি কোন বিরোধী দল খুঁজে পাচ্ছিনা। যারা সংসদে গিয়ে বিরোধীতা করে তারাই বিরোধী দল।

তিনি তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, বঙ্গবন্ধু টাকা চিনতেন না। রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে প্রধানমন্ত্রীকে যে ভাতা দেওয়া হয় তা তিনি প্রথমে বিশ্বাসই করেননি। তিনি নিজে স্বাক্ষর দিয়ে টাকা নিতে চাননি, পরে তার পক্ষে আমি স্বাক্ষর দিয়ে টাকা তুলতাম।

সেমিনারে বক্তারা সিলেটের সাথে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের রেল ও সড়ক যোগাযোগ উন্নতকরণ, ফিস প্রসেসিং প্লান্ট, প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রি, সেভেন সিস্টারের সাথে রপ্তানীতে বাঁধা দূরীকরণ, ঢাকা-সিলেট ফোরলেন মহাসড়ক বাস্তবায়ন, সিলেটে আবাসিক গ্যাস সংযোগ প্রদান, সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীতকরণ, ইকোনমিক জোনে সিলেটের ব্যবসায়ীদের প্লট বরাদ্দ, মফস্বল হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নিয়োগ, সিলেট-চট্টগ্রাম ট্রেনে এসি কম্পার্টমেন্ট চালু, শুল্ক স্টেশনগুলোর সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন, প্রবাসীদের বিনিয়োগ নিরাপদ রাখা, সুনামগঞ্জের সব উপজেলার সাথে সড়ক যোগাযোগ স্থাপন, ডলুরা শুল্ক স্টেশন চালু, মৎস্য সংরক্ষণের জন্য হিমাগার স্থাপন এবং সিলেট নগরীতে বিদ্যুতের ভৌতিক বিল ও প্রিপেইড মিটার সমস্যা সমাধান সহ বিভিন্ন দাবী জানান।

সেমিনারে আলোচনায় অংশ নেন- হবিগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল মজিদ খান, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিছবাহ উদ্দিন সিরাজ, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি ড. এ কে আব্দুল মোমেন, সিলেট রেঞ্জ এর ডিআইজি মো. কামরুল আহসান বিপিএম, সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট চেম্বারের সহ সভাপতি মো. এমদাদ হোসেন, পরিচালক মুকির হোসেন চৌধুরী, নভো গ্রুপের চেয়ারম্যান আশরাফুজ্জামান দীপু, সিলেট মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের অর্থ ও পরিকল্পনা উপ কমিটির সদস্য মাছুম বিল্লাহ্ চৌধুরী, যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগ নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবির, জেলা কর আইনজীবি সমিতির সভাপতি মুত্যুঞ্জয় ধর ভোলা, মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি অপূর্ব কান্তি ধর, সিলেট বিভাগ গণদাবী ফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি চৌধুরী আতাউর রহমান আজাদ, সুনামগঞ্জ চেম্বারের পরিচালক নুরুল ইসলাম বজলু ও আইটি উদ্যোক্তা জয়নুল আকতার চৌধুরী।

সেমিনারে অর্থ ও পরিকল্পনা উপ কমিটির সদস্য সচিব টিপু মুন্সী এমপি বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে বদলে দিয়েছেন। কেমন হবে আগামী বাংলাদেশ, তার জন্য সিলেট থেকে আমরা কিভাবে অংশ নিতে পারি সেজন্যেই এই সেমিনারের আয়োজন। সিলেটের উন্নয়ন সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশী। এই অঞ্চলের মানুষের কথা শুনে আগামী বাংলাদেশ বিনির্মানে আওয়ামীলীগের মেনিফেস্টোতে তা অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

সিলেট চেম্বারের সভাপতি খন্দকার সিপার আহমদ বলেন- সরকারের সহযোগী হিসেবে আমরা কাজ করতে চাই। এই লক্ষ্যে সিলেট হাই-টেক পার্ক বাস্তবায়নে সিলেট চেম্বারের অর্থায়নে লন্ডনে আমরা সেমিনারের আয়োজন করেছি, সেখান থেকে বিপুল সাড়াও পাওয়া গিয়েছে। বিনিয়োগের জন্য সিলেট সম্ভাবনাময় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর জন্য সড়ক, রেল ও বিমান যোগাযোগ উন্নত করতে হবে। গ্যাস সংযোগের অভাবে পর্যটনে বিনিয়োগকারীরা আগ্রহ হারাচ্ছে, সেজন্য হোটেল-মোটেলে গ্যাস সংযোগে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তিনি সিলেটে লেবার কোর্ট স্থাপন, এয়ারপোর্টের ওয়াচ আওয়ার বৃদ্ধি ও লোকবল বাড়ানো, নতুন বিসিক শিল্প নগরী গঠন এবং ব্যবসায়ীদের অন্তত তিন মাসের অন এরাইভ্যাল ভিসা দেওয়ার দাবী জানান। তিনি সিলেট চেম্বারের একটি নতুন ভবনের জন্য জমি বরাদ্দের অনুরোধ জানান।

সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী, লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য্য প্রফেসর ড. মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী, এসএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার পরিতোষ ঘোষ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মো. মাহবুবুল আলম, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় অর্থ ও পরিকল্পনা উপ কমিটির সহ-সম্পাদক সাইফুল্লাহ আল মামুন, রাজীব পারভেজ, রাজিউর রেজা খোকন চৌধুরী, জিয়াউল আবেদীন, সদস্য আরশাদ জামাল দীপু, ফৌজিয়া হক, কানিজ আকলিমা সুলতানা, এম এ রিয়াজ কচি, বাংলাদেশ ব্যাংকের জিএম জীবন কৃষ্ণ রায়, সোনালী ব্যাংকের জিএম গোপীনাথ দাস, সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক, সিলেট মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিজিত চৌধুরী, অধ্যাপক জাকির হোসেন ও মো. ফয়জুল আনোয়ার, জালালাবাদ গ্যাস এর উপ-ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. মাহবুব আলম, সিলেট চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাসুদ আহমদ চৌধুরী, পরিচালক মো. ওয়াহিদুজ্জামান (ভূট্টো), মুশফিক জায়গীরদার, এহতেশামুল হক চৌধুরী, আব্দুর রহমান, চন্দন সাহা, ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, মো. আব্দুর রহমান জামিল, সিলেট মহানগর যুবলীগের আহবায়ক আলম খান মুক্তি, সুনামগঞ্জ চেম্বারের পরিচালক জি এম তাশহিজ, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সেক্রেটারী শাহ দিদার আলম নোবেল, সিলেট জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল কাদের মোজাহিদ প্রমুখ।

এছাড়াও সেমিনারে বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, ব্যাংকার ও সরকারী উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৫৬৯ বার

Share Button

Callender

September 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30