শিরোনামঃ-

» ভারতের আসামে এনআরসি প্রকাশের পর বিজিবির সিলেট সীমান্তে কড়া নজরদারি

প্রকাশিত: ০১. সেপ্টেম্বর. ২০১৯ | রবিবার

সিলেট বাংলা নিউজ ডেস্কঃ

ভারতে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে নাগরিকদের নামের চূড়ান্ত তালিকা শনিবার (৩১ আগস্ট) প্রকাশ করা হয়েছে। তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন রাজ্যের প্রায় ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জন মানুষ। এ তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর সিলেটের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

জেলার সীমান্তবর্তী থানা এলাকাগুলোতে বিজিবির পাশাপাশি পুলিশও সতর্ক রয়েছে যাতে তালিকায় বাদ পড়াদের কেউ বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে। সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে বসবাসকারীদের বিজিবির পক্ষ থেকে সতর্কতামূলক বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সীমান্ত এলাকায় যেকোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিজিবি সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যাটালিয়নের (১৯ বিজিবি) পরিচালক লে. কর্নেল সাঈদ হোসেন। তিনি জানান, তালিকা আসামের হলেও সিলেট সীমান্তে যাতে এর কোনও প্রভাব না পড়ে সেদিকে লক্ষ্য রেখে ব্যাটালিয়ন-১৯ এর আওতাধীন সীমান্তে থাকা বিজিবিকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া আছে। সেই সঙ্গে সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে বসবাসকারীদের এসব বিষয়ে সর্তক থাকতে বলা হয়েছে।

সূত্র জানায়, সিলেটের ১৩টি উপজেলার মধ্যে সীমান্তবর্তী থানাগুলো হচ্ছে গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ ও কানাইঘাট। সীমান্ত এলাকার পাশাপাশি এই থানাগুলোর সীমান্তে রয়েছে ভারতের চোরাই পথ। বিভিন্ন সময় চোরাকারবারিরা এসব পথ ব্যবহার করে ভারতে অনুপ্রবেশ করে। সেই সঙ্গে অনেক ভারতীয় চোরাকারবারি এসব পথ ব্যবহার করে মানুষও পাচার করে থাকে।

তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, ভারতের আসামের বিষয়ে সিলেটের সীমান্তে তেমন কোনও প্রভাব পড়বে না। সীমান্ত এলাকা কিংবা চোরাই পথে বিএসএফ (ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী) আসামে নাগরিক তালিকা থেকে বাদ পড়াদের সীমান্ত দিয়ে যাতে পুশ-ইন করতে না পারে সেজন্য সর্তকতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম বলেন, এটা রাষ্ট্রীয় বিষয়। এর বাইরে তিনি আর কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ১৯ ব্যাটালিয়নের পরিচালক লে. কর্নেল সাঈদ হোসেন বলেন, ‘আসামের বিষয় মাথায় রেখেই বিজিবিকে সর্বোচ্চ সর্তক থাকার জন্য ইতোমধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমনকি আসামের পরিস্থিতি যদি কোনও সময় অবনতি হয় তাহলে সেদিকেও আমাদের নজরদারি আছে।’ তিনি বলেন, ‘সীমান্ত পথ কিংবা অন্য কোনও অবৈধ পথ দিয়ে যদি কোনও ভারতীয় নাগরিকদের পুশ-ইন করার চেষ্টা করা হয় তাহলে তা মোকাবিলা করার জন্য যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে বিজিবির। এছাড়া সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী বাংলাদেশের নাগরিকদের বলা আছে তারা যাতে সর্তক থাকেন। ভারতীয় বিএসএফ এবং ভারতীয় নাগরিকদের কোনও তৎপরতা দেখার সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিজিবি ক্যাম্পকে অবহিত করার জন্য বলা হয়েছে।’

সিলেট জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘জেলা পুলিশের সীমান্তবর্তী থানাগুলো এমনিতেই সবসময় সর্তক থাকে। সেই সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় তৎপর থাকে বিজিবি।’ তিনি বলেন, ‘ভারতের আসামের বিষয়টা নিয়ে সিলেটের সীমান্ত এলাকাগুলোতে প্রভাব পড়ার কথা নয়। তবুও বিষয়টা পুলিশের মাথায় রয়েছে। কোনও কিছু হলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে সেই ব্যবস্থা পুলিশের সবসময় রয়েছে।’ আসামের ব্যাপারে আলাদা কোনও নির্দেশনা নেই বলে তিনি জানান।

সিলেটের গোয়াইঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ বলেন, আসামের তালিকা থেকে যারা বাদ পড়েছেন তারা যাতে সিলেটের সীমান্ত এলাকাসহ চোরাই পথ ব্যবহার করে বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে সেজন্য সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্তক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সিলেটের সীমান্তবর্তী জকিগঞ্জ থানার ওসি মীর মো. আবু নাসের বলেন, আসামের বিষয় নিয়ে আমাদের কোনও নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। তবে পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সবসময় থাকে। যদি কোনও নির্দেশনা আসে তাহলে সেভাবেই পুলিশ কাজ করবে।

সিলেটের সীমান্তবর্তী গোয়াইনঘাট থানার ওসি আব্দুল আহাদ বলেন, আসামের বিষয়টা আমাদের নজরে রয়েছে। সেই অনুযায়ী আমাদের প্রাথমিক প্রস্তুতিও রয়েছে।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৪৯০ বার

Share Button

Callender

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930