শিরোনামঃ-

» কাউন্সিলর শানুর প্রতারণা; ৫ম তলা বাসা এক তলা দেখিয়ে বিক্রি!

প্রকাশিত: ০৬. নভেম্বর. ২০১৯ | বুধবার

প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি মহিলা কাউন্সিলরের

স্টাফ রিপোর্টারঃ
সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে নগরীর খুলিয়াটুলায় ৫ম তলা একটি বাসাকে এক তলা দেখিয়ে বিক্রির মাধ্যমে চরম প্রতারণা করা হয়েছে। এই ঘটনায় সরকার যেমন বিপুল অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে তেমনি একটি অসাধু চক্র হাতিয়ে নিয়েছে কয়েক লাখ টাকা। আর এই প্রতারণায় সরাসরি জড়িত সিলেট সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান ১৩.১৪ ও ১৫ নং ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর শাহানা বেগম শানু। তিনি নিজেই প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বাসাটি বিক্রি করেছেন বলে জানা গেছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, নগরীর খুলিয়াটুলায় জেএল নং-৯১, আরএসবিএস ৭৬, খতিয়ান নং- ১৪৩ ও ৮৪১, নামজারীকৃত ১৪৬০৯, ডিপি-১২৯১৭, দাগ নং- এসএ- ৩৭৮৩-৩৮৫৩, বিএস ২৬০৬৩ নং দাগ হতে মোয়াজি ০.০১০১ বা এক ডিসিমেল ১ পয়েন্ট বাড়ি রকম ভূমি এবং ঐ মৌজার খতিয়ান নং ছাপা ঐ বিএস ডিপি ১২৩২৬ ও ১২৯১৭ নামজারী ১৪৩৭৩ দাগ নং এসএ ৩৭৮৮ বিএস ২৬০৬৩ হতে মোয়াজি ০.০১৬৪ বা ১ ডিসিমেল ৬৪ পয়েন্ট একত্রে দ্বয় দাগে মোট ২ ডিসিমেল ৬৫ পয়েন্ট ভূমি ৩৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা দামে ২০১৮ সালের ১৭ জুলাই সিলেট সদর সাব-রেজিষ্ট্রারী অফিসে কাউন্সিলর শাহানা বেগম শানু ও তার ছেলে রায়হান আহমদ প্রতারণার মধ্যমে ৫৯০২ নং দলিলে তার স্বামী তাজুলের নামে ক্রয়কৃত জায়গার উপর নির্মিত ৫ম তলার একটি বাসাকে এক তলা দেখিয়ে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট উত্তর গ্রামের মৃত মুনছুর আলীর পুত্র মোজাহিদ উদ্দিন আহমেদের কাছে বিক্রি করেন। এতে করে সরকার একটি বড় অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়।

প্রতারণার মাধ্যমে ৫ম তলা বাসাকে এক তলা দেখিয়ে বিক্রি ও দলিল সৃজন করার ঘটনায় কাউন্সিলর শাহানা বেগম শানুর সাথে সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসের একটি দুর্নীতিবাজ চক্র জড়িত ছিল বলে জানা গেছে। তারা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে টাকার একটি অংশ নিজেরা ভাগবাটোয়ারা করে নিয়ে যায় বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। শুধু তাই নয় কাউন্সিলর থাকা অবস্থায় শানু ৫ম তলা ঐ বাড়িটি নির্মাণ করলেও সরকারের সংশ্লিষ্ট কোন দপ্তরকেই তার আয়ের উৎস সম্পর্কে জ্ঞাত করেননি।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, কাউন্সিলর শানুর ঐ সময়ে বৈধ কোন ব্যবসা বাণিজ্য ছিল না। তাহলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন দেখা দেয় শানু কি করে বিশাল অংকের টাকা ব্যয়ে এই ৫ম তলা বাড়িটি নির্মাণ করলেন।

এদিকে ৫ম তলা ঐ বাড়ি সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক অনুমোদন নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে কি না এ সম্পর্কেও জানা নেই সিটি কর্পোরেশনের। এ ব্যাপারে সিটি কর্পোরেশনের ১৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শান্তুনু দত্ত শন্তু বলেন- বাড়ি নির্মাণে অনুমোদন রয়েছে কি না আমার জানা নেই। আর ৫ম তলা বাড়িকে এক তলা দেখিয়ে বিক্রি ও দলিল সৃজন করার বিষয়ে সদর সাব-রেজিষ্ট্রার পারভিন আক্তারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে শানুর দায়েরকৃত একটি মামলার আসামী জানান, বাড়িটি ১ কোটি টাকার উপরে বিক্রি হয়েছে এবং এই টাকা প্রথমে কাউন্সিলর শানুর নিজ নামীয় একাউন্ট ইউসিবিএল ব্যাংক, লামাবাজার শাখায় জমা হয় তবে পরে তা কৌশলে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়।

তাছাড়া কাউন্সিলর থাকার সময় শাহানা বেগম শানুর স্বামী তাজুলের নামে বিভিন্ন জায়গায় নামে-বেনামে প্রচুর সম্পদ রয়েছে। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশে দেশব্যাপী চলমান শুদ্ধি অভিযানে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ ব্যাপারে অনুসন্ধান করলে শানুর নানা প্রতারণা, অবৈধ সম্পদ অর্জন সহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থাকে ফাঁকি দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে বাসা বিক্রির ঘটনাটি বেরিয়ে আসবে বলে শানুর এলাকার স্থানীয় লোকজনের অভিমত।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৪৮২ বার

Share Button

Callender

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930