শিরোনামঃ-

» সিলেটে চাকরী রাজস্ব খাতে স্থানান্তর ও বকেয়া বেতন ভাতার দাবিতে মানবন্ধন

প্রকাশিত: ১৮. জানুয়ারি. ২০২২ | মঙ্গলবার

স্টাফ রিপোর্টারঃ

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনুমোদিত সার-সংক্ষেপের আলোকে “স্কিলস এ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট (ঝঞঊচ)” শীর্ষক সমাপ্ত প্রকল্প থেকে রাজস্ব খাতে প্রক্রিয়াধীন ৭৭৭ জন শিক্ষকের চাকরি রাজস্বখাতে দ্রুত স্থানান্তর ও ১৮ মাসের বকেয়া বেতন ভাতাদির দাবিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণে মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় সিলেট পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বাংলাদেশ পলিটেকনিক টিচার্স ফেডারেশন সিলেট পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট শাখার সভাপতি মো: শরাফত হোসেন এর সভাপতিত্বে মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনের বিষয়বস্থু: কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরাধীন সরকারি ৪৯ পলিটেকনিক/মনােটেকনিক ইনস্টিটিউটে কর্মরত “স্কিলস এ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট শীর্ষক সমাপ্ত প্রকল্প থেকে রাজস্ব খাতে প্রক্রিয়াধীন ৭৭৭ জন শিক্ষকবৃন্দের সংগঠন বাংলাদেশ পলিটেকনিক টিচার্স ফেডারেশন (বিপিটিএফ) এবং আমরা মুক্তিযােদ্ধার সন্তান, কারিগরি শাখা, বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে আপনাদের সবাইকে জানাই স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর শুভেচ্ছা ও সশ্রদ্ধ সালাম।

শুরুতেই শ্রদ্ধাভরে স্বরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী স্বাধীনতার মহান স্থপতি মহাবিজয়ের মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ১৫ আগষ্ট শাহাদাত বরণকারী বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সকল সদস্য, জাতীয় ৪-নেতা, মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ কারী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সকল শহীদদের। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মানবতার জননী শেখ হাসিনার প্রতি বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানসহ সকল শিক্ষক ও তাদের পরিবারের পক্ষ হতে শ্রদ্ধাভরে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। আপনি স্টেপ প্রকল্পের মাধ্যমে ১০১৫ জন বেকারের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন এবং প্রকল্প মেয়াদ শেষে শিক্ষকদের চাকুরি রাজস্ব খাতে স্থানান্থরের প্রস্তাব সদয় অনুমোদন ও সরকারের থােক বরাদ্দ খাত হতে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে বেতন ভাতাদির ব্যবস্থা করেছেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবান ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সােনার বাংলা বিনির্মাণে কারিগরি শিক্ষা আজ একটি অন্যতম হাতিয়ার।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃঢ় নেতৃত্বে কারিগরি শিক্ষার সম্প্রসারণ, মানোন্নয়ন, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং দেশে-বিদেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকারের কারিগরি মহাপরিকল্পনা অত্যন্ত সফলতার সাথে এগিয়ে যাচ্ছে। সরকার দেশের কারিগরি শিক্ষার হার ২০২০ সালে ২০%, ২০৩০ সালে ৩০% এবং ২০৪১ সালে ৪০% উন্নতি করার লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

কারিগরি শিক্ষার সম্প্রসারণ ও মানোন্নয়ণের লক্ষ্যে ২০১২ ও ২০১৪ সালে শিক্ষামন্ত্রনালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের আওতায় কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরাধীন সরকারি ৪৯ পলিটেকনিক/মনােটেকনিক ইনস্টিটিউটে সরকারি চাকুরীর সম্পূর্ন বিধিবিধান (১মও ২য় শুক্ষেণীর চুক্তিভিত্তিক ০৯(নয়) সদস্যের শিক্ষক নিয়োগ কমিটি, জাতীয় পত্রিকায় উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তি, লিখিত পরীক্ষা, মৌখিক পরীক্ষা, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, পুলিশ ভেরিফিকেশন,কোটা পদ্ধতি অনুসরণপূর্বক “স্কিলস এ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট (ঝঞঊচ)” শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর (টেক/নন-টেক),ইনস্ট্রাক্টর (টেক/নন-টেক) ও ওয়ার্কশপ সুপার পদে সর্বমোট ১০১৫ (এক হাজার পনের জন্য শিক্ষককে নিয়োগে প্রদান করা হয় (যার মধ্যে বর্তমান কর্মরত ৭৭৭ জন)।

নিযোগে প্রাপ্ত শিক্ষকদের মধ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে জীবন বাজি রেখে মুক্তি যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, এমনকি স্বাধীনতা যুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য “বীর বিক্রম” খেতাব প্রাপ্ত বীর মুক্তিযােদ্ধার সন্তানও রয়েছে। নিয়োগে প্রাপ্ত শিক্ষকগণ জাতির পিতার আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বুকে লালন করে শিক্ষকতা করে যাচ্ছে। বিগত ১০ বছরে কারিগরি শিক্ষার হার ১% হতে ১৭% -এ উন্নতি হয়েছে, দেশ-বিদেশের সকল জরিপে দেশের কারিগরি শিক্ষার মানোন্ননের তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। ৯ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন শিক্ষকগণ দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষন গ্রহণ করে আজ দেশের সম্পদে পরিণত হয়েছে।

কারিগরি শিক্ষার উন্নয়নে এই প্রকল্পের শিক্ষকদের অবদান ও প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় নিয়ে প্রকল্প শেষে শিক্ষকগণের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্থরের প্রস্তাবনা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২২/০৫/২০১৯ খ্রি: সদয় অনুমােদন করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমােদিত অনুশাসনের আলোকে ৩০ জুন ২০১৯ খ্রি: শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ প্রকল্পে নিয়োজিতাকর্মরত শিক্ষকদের (৭৮৬ জনকে) সাময়িকভাবে বহাল রেখে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য লিখিত নির্দেশনা প্রদান করেন। প্রজ্ঞাপনের আলােকে পলিটেকনিক সমূহের সকল কার্যক্রম অদ্যবদি যথাযথভাবে পালন করে আসছি। প্রকল্প মেয়াদ শেষে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে সরকারের থােক বরাদ্দ খাত হতে ৭৮৬ জন শিক্ষকের বেতন ভাতাদি পরিশােধ করা হয়েছে। ১৮ই-মে-২০২১ খ্রি: ৭৭৭ জন শিক্ষকের চাকরি দ্রুত রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের লক্ষ্যে মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী মহোদয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী বরাবর ডিও পত্র প্রেরণ করেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় শিক্ষা মন্ত্রীর নেতৃত্বে সচিব, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ এবং মহাপরিচালক, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর এর একান্ত প্রচেষ্টায় দেশের কারিগরি অঙ্গনে এক বৈপ্লবিক নবদিগন্তের সূচনা হয়েছে। নতুন পদ সৃজন, দ্রুত নিয়োগে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করণ, পদোন্নতি, দেশ-বিদেশে ট্রেনিং এবং বহুমুখী উন্নয়ন কর্মকান্ডে কারিগরি অঙ্গনে আজ উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। কিন্তু অত্যান্ত দুঃখের বিষয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও রাজস্ব খাতে স্থানান্তর প্রক্রিয়া দীর্ঘসুত্রিতার কারণে শিক্ষকদের মনে চরম হতাশা বিরাজ করছে। তদুপরি জুলাই-২০২০ হতে ডিসেম্বর-২০২১ পর্যন্ত ১৮ মাস যাবত ৭৭৭ জন শিক্ষক বেতন ভাতাদি না পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে চরম অর্থ কষ্টে মানবেতর জীবন যাপন করছে। ১৮ মাস যাবত বেতন বন্ধ থাকায়, আমাদের কয়েকজন সহকর্মী টাকার অভাবে সঠিক সময়ে চিকিৎসা
করাতে পেরে মারা গেছেন, আরো বহু সহকর্মী মানসিক ও শারিরীক অসুস্থতা নিয়ে জীবন অতিবাহিত করছে। বিগত বেতন ভাতাদি সঠিক সময়ে প্রাপ্ত হলে, হয়ত এই পরিস্থিতিগুলাে এড়ানো যেতো। এমতবস্থায় বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ও ৭৭৭ জন শিক্ষকের পরিবারের কথা বিবেচনায় নিয়ে, স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তীতে আমাদের দীর্ঘদিনের অবর্ণনীয় দুর্ভোগের অবসানের জন্য দ্রুত বকেয়া বেতন ভাতাদি প্রদানের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্থক্ষেপ কামনা করছি। প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ, আমাদের মানববন্ধনে উপস্থিত থাকার জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। পাশাপাশি এই মানববন্ধনে উত্থাপিত বিষয়টি আপনাদের মিডিয়ায় প্রকাশ করে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সহ ৭৭৭ জন শিক্ষকের পরিবারের মুখে হাসি ফুটানাের লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের ব্যবস্থা করার জন্য বিনীত অনুরােধ করছি।

উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ পলিটেকনিক শিক্ষক সমিতির সিলেট শাখার সাধারণ সম্পাদক মো: মাহবুবুল আলম, প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, সিলেট পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট শাখার সাধারণ সম্পাদক কাউছার আহমদ, প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন বাস্তবায়ন কমিটি সিলেট পলিটেকনিট ইন্সটিটিউট শাখার আহবায়ক কাজল দেবনাথ, সিলেট পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট, ইলেকট্রনিক্স বিভাগ ইন্সট্রাক্টর মরিয়ম মহল মনি, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান, কারিগরি শাখার সদস্য সৌমিত্র দাস, আরও উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র শিক্ষকবৃন্দ এস. এম. ফারুক হোসেন, মো: হাবিবুর রহমান, সঞ্জীব নারায়ন রায়, মো: আব্দুর রহিম, রাশেদুল হক, বাবুল মিয়া, রাশেদুল হক চৌধুরী, আরিফুল ইসলাম, বশির আলম, আব্দুল্লাহ ইবনে নাজিম, সন্তুস বনিক সহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ ও ছাত্রছাত্রীবৃন্দ।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ২৯১ বার

Share Button

Callender

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930