শিরোনামঃ-

» সিলেটে ইসলামী আন্দোলনের ইফতার মাহফিল

প্রকাশিত: ২০. এপ্রিল. ২০২২ | বুধবার

স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও দেশ স্থিতিশীল ও ভারসাম্যপূর্ণ হতে পারেনি : আল্লামা নুরুল হুদা ফয়েজি

স্টাফ রিপোর্টারঃ

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়ামের সদস্য আল্লামা নুরুল হুদা ফয়েজি বলেন, যে কোন রাষ্ট্রেরর প্রধান বৈশিষ্ট্য হল স্থিতিশীল ও ভারসাম্যপূর্ণ হওয়া। এই দুইগুন না থাকলে রাষ্ট্রের বিকাশ, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি থমকে যায়। রাষ্ট্রের উন্নয়ন ব্যাহত হয়। বাংলাদেশের ৫০ বছর পরেও বাংলাদেশ আজ স্থিতিশীল ও ভারসাম্যপূর্ণ হতে পারেনি। যার খেসারত দিচ্ছে রক্তে কেনা বাংলাদেশের কোটি জনতা।

বুধবার (২০ এপ্রিল) সিলেট নগরীর ইউনাইটেড সেন্টারে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সিলেট জেলা ও মহানগর শাখার আয়োজিত ইফতার মাহফিলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আল্লামা নুরুল হুদা ফয়েজি উপর্যুক্ত মন্তব্য করেন।

তিনি আরো বলেন, অর্ধশত বছরের একটি দেশ অথচ দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি চুড়ান্ত রকমের অস্থিতিশীল। নির্বাচন কমিশন সহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আজও প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করা যায় নাই। যে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল জনতার ভোটাধিকার প্রয়োগের উৎসব; তা আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তার মহড়ায় পরিণত হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতাকেন্দ্রীক দ্বন্ধ এতটাই বেপরোয়া যে, ৫ বছর পর পর নির্বাচনের সময় দেশে যুদ্ধাবস্থা তৈরি হয়।

অন্যদিকে ভারসাম্যহীনতা সর্বত্র। অর্থনীতিতে একদিকে আকাশচুম্বি জিডিপি অন্যদিকে টিসিবি’র পণ্য কিনতে ট্রাকের পেছনে ছুটছে ক্ষুধাতুর মানুষ। একদিকে কোটিপতির সংখ্যা বাড়ছে অন্যদিকে ৪৪ শতাংশ মানুষ খাবারের বাজেট কমাতে বাধ্য হচ্ছে। ক্ষমতা সংশ্লিষ্টরা রাষ্ট্রের সম্পদ চুরি করে বিদেশে পাচার করছে অন্যদিকে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের তুচ্ছ কারনে জেলে পাঠানো হচ্ছে। ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে যা খুশি করছে আর সাধারণ নাগরিকরা কথা বলার অধিকার থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। একদিকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সংস্কুতির নামে হিন্দুত্ববাদের চর্চা হয় অন্যদিকে ছাত্রীদের নামাজের জায়গা ভেঙ্গে দেয়া হয়। ক্ষমতাসীন নেতাকর্মীদের কথায় ভারসাম্য নাই, পররাষ্ট্রনীতিতে ভারসাম্য নাই, আমদানি-রপ্তানি তথা বৈদেশিক বাণিজ্যে ভারসাম্য নাই, উৎপাদন-বিপনন ও ভোগে ভারসাম্য নাই, বাজারদরে ভারসাম্য নাই। সামগ্রিকভাবে ভারসাম্যহীনতার কারণে টালমাটাল বাংলাদেশ।

তিনি আরো বলেন, এই অস্থিতিশীলতার মূল কারণ ইসলামী অনুশাসন মান্য না করা। ব্যক্তি জীবনে ইসলামের নির্দেশনা মেনে লোভ-লালসা, হিংসা-বিদ্বেষ, পরশ্রীকাতরতা, ক্ষমতার মোহ, দুনিয়ার মোহ দূর করে তাকওয়া, খোদাভীতি, কল্যাণকামিতা, অল্পে তুষ্টি অর্জন করতে পারলে এই পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি হতো।

একই সাথে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ইসলামের অনুশাসন মেনে দেশ পরিচালনার বিষয়কে ক্ষমতা মনে না করে দায়িত্ব মনে করলে, জনতা ও আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করার মনোভাব রাখলে, হযরত আবু বকর রাদি. এর মত দায়িত্ববান হলে, হযরত ওমর রাদি. এর মত স্বচ্ছ হলে হযরত ওসমান রাদি. এর মত কল্যাণকামী হলে এবং হযরত আলী রাদি. এর মত ন্যায়পরায়ন হলে বাংলাদেশ আজ স্থিতিশীলতা অর্জন করতে পারত, ভারসাম্যপূর্ণ হত রক্তে কেনা বাংলাদেশ।

মহানগর সেক্রেটারী হাফিজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান ও জেলা সেক্রেটারী মাওলানা ইমাদ উদ্দীন এর যৌথ সঞ্চালনায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা সভাপতি মুফতি সাঈদ আহমদ বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানের যেসব মূলনীতি গ্রহণ করা হয়েছে তা মানুষ্য চিন্তা ও দর্শণ নির্মিত। যার ব্যাখ্যা সর্বদাই আপেক্ষিক, ব্যক্তির বিবেচনার উপরেও প্রয়োগ নির্ভর করে। এমন মূলনীতি দিয়ে দেশকে কখনোই স্থিতিশীল ও ভারসাম্যপূর্ণ করা সম্ভব না। যা বিভিন্ন সংশোধনীর কারনে আমরা প্রতিনিয়ত দেখতে পাই। সেজন্য আমরা বলব, আমাদের সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ তা’আলা মানুষের জীবন পরিচালনার জন্য যে মূলনীতি দিয়েছেন যা স্থান-কাল-পাত্র ও ব্যক্তি সাপেক্ষ নয়, যা সবধরণের আপেক্ষিকতার ঊর্ধ্বে সার্বজনীন, যা সর্বোচ্চ স্থিতিশীল ও ভারসাম্যপূর্ণ তাকে দেশের মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করুন। তবেই দেশে স্থিতিশীলতা আসবে, ভারসাম্য আসবে, আসবে বিনিয়োগ, উন্নতি, সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তা। প্রতিষ্ঠিত হবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদ প্রফেসর ডা. মুয়াজ্জেম হোসাইন খান।

এছাড়া বক্তব্য রাখেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ সিলেট মহানগরীর সভাপতি মাওলানা খলিলুর রহমান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস সিলেট মহানগর সভাপতি মাওলানা গাজী রহমতুল্লাহ, খেলাফত মজলিস সিলেট জেলা সহ সভাপতি মাওলানা শামসুদ্দিন মুহাম্মদ ইলিয়াস,বিএনপি সিলেট মহানগর সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকী, নগর খেলাফত মজলিস সেক্রেটারি হা. মাওলানা তাজুল ইসলাম, নগর বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস সাধারণ সম্পাদক মাওলনা এমরান আলম, প্রচার ও অফিস সম্পাদক মুহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন।

উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সিলেট মহানগর সভাপতি আলহাজ্ব নজির আহমদ, জেলা সহসভাপতি মাওলানা আমীর উদ্দীন, নগর সহসভাপতি ডাঃ রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ, মহানগর জয়েন্ট সেক্রেটারী মাওলানা আব্দুশ শহীদ, জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মুফতি শিহাব উদ্দীন, মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মতিউর রহমান খান, ইসলামী যুব আন্দোলন সিলেট জেলা সভাপতি মুফতী ফয়জুল হাসান চৌধুরী, মহানগর সভাপতি মাওলানা জহিরুল ইসলাম, শ্রমিক আন্দোলন জেলা সভাপতি আলহাজ্ব ফজলুল হক, মহানগর সভাপতি আলহাজ্ব মাইদুল ইসলাম, ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় উপসম্পাদক (সাংগঠনিক) মুহাম্মাদ আবু তাহের মিসবাহ, কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য মুহা. নূর উদ্দিন, জেলা সভাপতি মুহাম্মাদ মকবুল হোসেন, নগর সভাপতি মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আরাফাত প্রমূখ।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ২৫৫ বার

Share Button

Callender

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930