শিরোনামঃ-

» ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসে সম্প্রীতি বাংলাদেশের আলোচনায়; মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাগুলো নতুন প্রজন্মের নিকট তুলে ধরার আহবান

প্রকাশিত: ১৭. এপ্রিল. ২০২৩ | সোমবার

 

ডেস্ক নিউজঃ

ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস যথাযথ মর্যাদায় পালন করেছে সম্প্রীতি বাংলাদেশ।

দিবসের আলোচনায় মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাগুলো রাষ্ট্রীয়ভাবে নতুন প্রজন্মের নিকট তুলে ধরার আহবান জানানো হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষে সোমবার (১৭ এপ্রিল) দুপরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ মিলনায়তনে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস ‘অবিস্মরণীয় এক দিন’ শীর্ষক আলোচনাসভা আয়োজন করে সম্প্রীতি বাংলাদেশ।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বীরবিক্রম বলেন, মুজিবনগর সরকারের কথা বলতে গেলে ৭ মার্চের কথা আসবে, সেই ৭ই মার্চের স্বাধীনতার ডাক পৌঁছে গিয়েছিল তখনকার অজপাড়াগাঁয়ে মেহেরপুরে।

সেকারণেই আজকের ১৭ এপ্রিল। মার্চের ৩০ তারিখ থেকে ১৭ এপ্রিলের আগ পর্যন্ত দেশের মুক্তিকামী মানুষের কোনো প্রকার স্বীকৃতি ছিল না।

তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে বড় গুণ ছিলো তিনি মানুষকে খুব তাড়াতাড়ি কাছে নিতে পারতেন। এটা তাঁর্ কোন রাজনৈতিক কৌশল ছিলোনা। আমি মনে করি আমরাও যদি মানুষের কাছে থাকি তাহলে আমরা মানুষের সমস্যা এবং সুখ দুঃখকে ভালো করে বুঝতে পারবো।

বাংলাদেশ আজকে যে পর্যায় এসেছে তার জন্য অনেকেই বাংলাদেশের প্রশংসা করছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় পশ্চিমারা প্রচুর রক্তচক্ষু দেখিয়েছিলো। কিন্তু আমরা আমাদের নৈতিকতা, উৎসাহ ও উদ্দীপনা দ্বারা সে সমস্ত রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে জয় নিয়ে এসেছি। আজকেও বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন রক্তচক্ষু রাঙ্গাবেন। আমাদের সেদিকে তাকিয়ে লাভ নেই। আমরা আমাদের দেশের জন্য কাজ করলে এরাই থামতে বাধ্য হবে। আমরা সে কাজই করে যাচ্ছি। ইনশাআল্লাহ এবারও আমরা বিজয়ী হবো।

উপদেষ্টা বলেন, ‘সাধারণ মানুষের প্রতি ভালোবাসার ধারাবাহিকতায় আমরা একটি সমাজ গড়ে তুলবো যে সমাজে সবাই সুযোগ পাবে এবং আমরা পুরোপুরি দারিদ্র্য বিমোচন করতে পারবো। আমাদের নতুন প্রজন্মকে এগুলো জানাতে হবে। পাশাপাশি তাঁদের ইতিহাস সম্পর্কেও সুস্পষ্ট ধারণা দিতে হবে। আমাদের পূর্ব পুরুষদেরকে নতুন প্রজন্মকে বুঝতে হবে। আমরা সবাই মিলে-মিশে যদি দেশটাকে সামনে নিয়ে যেতে চাই অনেক অর্জন আমাদের পক্ষে সম্ভব।’

আলোচনা সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্য স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, মুক্তিযুদ্ধ না হলে বাংলা ও বাঙালির স্বপ্ন কখনই পূরন হতো না। জাতির পিতার জন্ম না হলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছর পরেও স্বাধীনতা টিকিয়ে রাখতে শংকা দু:খজনক। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগ্রত রাখতে সামাজিক-সাংস্কৃতিক শক্তি যথেষ্ট ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে।

নতুন প্রজন্মকে ইতিহাস সচেতন করার তাগিদ দেন প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্রাচার্য।

তিনি আশংকা প্রকাশ করে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস যথাযথভাবে নতুন প্রজন্মের কাছে বিশ্বাসযোগ্যভাবে তুলে ধরতে না পারলে আগামী দিনের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে না।

সভায় বক্তারা মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাগুলো রাষ্ট্রীয়ভাবে নতুন প্রজন্মের নিকট তুলে ধরার উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন,১৯৭১ সালের ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ডাক, ২৬ মার্চ স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষনা, ১০ এপ্রিল নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সরকার গঠন ও ১৭ এপ্রিল মুজিব নগরে যে শপথ গ্রহন অনুষ্ঠান হয়েছিল তারই সবই ছিল স্বাধীনতার পথে ধারবাহিক ঘটনা।

এ সময় বক্তারা আরও বলেন, ‘বাঙ্গালি জাতির জীবনে মুজিবনগর সরকারের গুরুত্ব অপরিসীম, সেদিন সেখানে অনেক বিদেশি সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন।

সব সাম্প্রদায়িক শক্তিকে পরাজিত করে আমাদের দেশ গঠিত হয়েছে। সেসময় বি‌দে‌শি সাংবা‌দিক‌দের কার‌ণে মু‌জিবনগর সরকা‌রের ব‌্যাপক প্রচার হ‌য়ে‌ছিল।

ফ‌লে আন্তর্জা‌তিক অঙ্গ‌নে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফে‌লে‌ছিল। আলোচকরা বলেন, ‘যারা জন্মসনদকে স্বীকার করে না, তাঁরা এদেশের সন্তান হয় কিভাবে? তাঁরা বাংলাদেশে রাজনীতি করতে পারে কিভাবে? এই প্রশ্নের সমাধান হওয়া দরকার। স্বাধীনতার ৫২ বছর পরেও আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির ষড়যন্ত্র চলছে। যা সত্যি জাতি হিসেবে আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন, সম্প্রীতি বাংলাদেশর আহবায়ক ও নাট্য ব্যক্তিত্ব পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়।

সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালের ১৭ই এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে বিদেশি সাংবাদিক ও বিভিন্ন সংগঠনের ব্যক্তিদের কলকাতা থেকে আসার জন্য ৪০টি গাড়ি ব্যবহৃত হয়। গাড়িগুলোর ব্যবস্থা করেছিলেন নিহার চক্রবর্তী। তিনি সাংবাদিক বা রাজনৈতিক ব্যক্তি কেউই নন। কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য তিনি কাজ করে গেছেন। এই ৪০টি গাড়ি যাঁদের কাছ থেকে তিনি নিয়েছিলেন তাঁদেরকে তিনি বলে দিয়েছিলেন দয়া করে ট্যাংকি ভরে তেল দিও যেন সারাদিন গাড়িটি চলতে পারে। ১৬ এপ্রিল রাতে কলকাতা প্রেসক্লাবে এই গাড়ির ব্যবস্থা করেছিলেন তিনি।

তিনি আরো বলেন যে, নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের জেতনা এবং বঙ্গবন্ধুর দর্শন সম্পর্কে সচেতন করতে পারলে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়া কঠিন হবে না।

সম্প্রীতি বাংলাদেশ-এর সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলের সঞ্চালনায় অনুষ্টিত আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আলী শিকদার, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. রাশিদ আফসারী, সিনিয়র সাংবাদিক শোয়েব চৌধুরী, ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ১৩৩ বার

Share Button

Callender

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930