শিরোনামঃ-

» প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ সিলেট মহানগর শাখার স্মারকলিপি

প্রকাশিত: ০৬. অক্টোবর. ২০২৪ | রবিবার

নিউজ ডেস্কঃ

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ সিলেট মহানগর শাখার পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

রবিবার (৬ অক্টোবর) সিলেট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের গৌরবোজ্জ্বল সফলতার পর গত ৫ আগস্ট থেকে সারা দেশ জুড়ে যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ঘটে ও চলমান থাকে তা বর্তমানে ক্রমহ্রাসমান হলেও তার চূড়ান্ত অবসান হয়নি।

ইতোমধ্যে শারদীয় দুর্গাপূজোকে সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিমা ভাংচুরের সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে। নানান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক উস্কানীও চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ‘ইনসাফ কায়েমকারী ছাত্র-জনতা’ নামে এক কথিত সংগঠন সর্বজনীন দুর্গাপূজোর তীব্র বিরোধীতা করে পূজার্থীদের হুমকি সম্বলিত ১৬ দফা দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে। ভারতবিরোধীতার নামে হিন্দু বিরোধীতাকে এক বিশেষ মহল তাদের রাজনীতির উপজীব্য করে তুলেছে। যদিও সরকার এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার আহ্বান জানানো হচ্ছে।

স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, গত ৪ আগস্ট, ২০২৪ থেকে ২০ আগস্ট, ২০২৪ পর্যন্ত সময়কালে মোট ১৭ দিনে দেশের ৬৮টি জেলা ও মহানগরে সর্বমোট ২০১০টি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় ৩৪টি আদিবাসী পরিবার সহ ১৭০৫টি পরিবারের সদস্যরা সরাসরি আক্রান্ত হয়েছে।

এর মধ্যে ১৫৭টি পরিবার সব হারিয়ে একেবারেই নিঃস্ব হয়ে গেছে। উল্লেখিত এই ১৭ দিনের সহিংসতায় নিহত হয়েছে ৯জন, ৬৯টি উপাসনালয়ে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়েছে, নারী নির্যাতন/ধর্ষণ/গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৪টি যার মধ্যে ১জন বাকপ্রতিবন্ধী। ৯১৫টি বাড়িঘরে ও ৯৫৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে, বসতবাড়ি এবং জমি/ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল হয়েছে ২২টি। পার্বত্য চট্টগ্রামের দিঘীনালা, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে সেপ্টেম্বর মাসের ১৮ ও ১৯ তারিখ যে জাতিগত সহিংসতা চলেছে তাতে অন্তত ৪ জন নিহত হয়েছে, অসংখ্য ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুটপাটে, অগ্নিসংযোগে ধ্বংষ হয়েছে এবং যা এখনও চলমান রয়েছে।

স্মারকলিপিতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় নিহত পরিবারকে এবং আহতদের চিকিৎসার জন্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান, ক্ষতিগ্রস্ত উপাসনালয় সমূহের পুনসংস্কার বা পুননির্মাণ, ক্ষতিগ্রস্ত বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকদের ক্ষতিপূরণ প্রদানপূর্বক পুনর্বাসন এবং সাম্প্রদায়িক সহিংসতা, সাম্প্রদায়িক উচ্চানীদাতা ও সম্প্রীতি বিনষ্টকারী ব্যক্তিদের অনতিবিলম্বে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়। এছাড়া দেশব্যাপী আসন্ন শারদীয় দুর্গাপুজো শাস্ত্রীয় পরিবেশে অনুষ্ঠিত করার লক্ষ্যে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন ও সংখ্যালঘু মন্ত্রনালয় গঠন সহ ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের আট দফা দাবি বাস্তবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার নেতা এ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্তের বিরুদ্ধে ঢাকার যাত্রাবাড়ি ও মিরপুর থানায় রুজুকৃত উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও হয়রানীমূলক মামলা দু’টি অবিলম্বে প্রত্যাহার এবং সারা দেশব্যাপী বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত উদ্দেশ্যমূলক ও হয়রানীমূলক মামলা প্রত্যাহার করার জোর দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।

স্বারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মলয় পুরকায়স্থ, সিলেট মহানগর শাখার সভাপতি এডভোকেট মৃত্যুঞ্জয় ধর ভোলা, জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট বিজয় কৃষ্ণ বিশ্বাস, পুজা উদযাপন পরিষদের জেলা শাখার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোপিকা শ্যাম পুরকায়স্থ, সহসভাপতি ডিকন নিঝুম সাংমা, সহ সভাপতি ফিলিপ সমাদ্দার, জেলা ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কৃপেষ পাল, মহানগর ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার দেব, এড. দয়াল চন্দ্র দাস, সুব্রত দেব, এড. শরদিন্দু পাল, এড. বিপ্লব চক্রবতী, জহুর দাস, বিজয় ভোষন ধর, এড. অরবিন্দু দাসগুপ্ত, এড. নিতু কান্ত দাস, রাজ কুমার পাল রাজু, শ্যামল কপালী, অপন দাস, নিখিল মালাকার, উত্তম ঘোষ, সঞ্জিত দত্ত, মঙ্গল দাস, অমলেন্দু দে, শংকর দাস শংকু, বুলবুল রায়, অর্জুন ঘোষ, হিমেল তালুকদার রাবেল, মুগ্দ দাস, বিকাশ দাস, ডিপন সিংহ প্রমুখ।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৫ বার

Share Button

Callender

October 2024
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031