শিরোনামঃ-

» ভারত সরকারের আগ্রাসী তৎপরতা কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত : বাম দলসমূহ

প্রকাশিত: ০৪. ডিসেম্বর. ২০২৪ | বুধবার

ডেস্ক নিউজঃ

ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনে হামলা ও জাতীয় পতাকা অবমাননাকারীদের শাস্তি এবং উভয় দেশের জণগনের ঐক্য গড়ে তোল, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও সাম্যবাদী আন্দোল সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বুধবার বিকাল ৪টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে সিটি পয়েন্টে গিয়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সিলেট জেলা বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক, বাসদ জেলা আহ্বায়ক আবু জাফর এর সভাপতিত্বে ও বাসদ সদস্য সচিব প্রণব জ্যোতি পাল এর সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন, সিপিবি সভাপতি সৈয়দ ফরহাদ হোসেন, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজ আহমদ, সিপিবি জেলা সাধারণ সম্পাদক খায়রুল হাসান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আনোয়ার হোসেন সুমন, সাম্যবাদী আন্দোলনের এডভোকেট রণেন সরকার রনি, বাসদ (মার্ক্সবাদী) জেলা নেতা সঞ্জয় কান্ত দাশ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের ডা. হরিধন দাশ, সাম্যবাদী আন্দোলনের এডভোকেট মহীতোষ দেব মলয়, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের আহ্বায়ক মাছুমা খানম, বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা পিনাক রঞ্জন দাস প্রমূখ।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, কোন দেশে বিদেশি দূতাবাসের সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব সে দেশের রাষ্ট্র ও সরকারের। অথচ ভারত সরকার বাংলাদেশ দূতাবাসের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। উপরন্তু ভারত সরকারের আগ্রাসী পররাষ্ট্রনীতি, শাসক দল বিজেপি ও পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের উসকানীমূলক বক্তব্য এ ধরনের অনভিপ্রেত কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করছে। যা কূটনৈতিক শিষ্ঠাচার বর্জিত।

বক্তারা বলেন, এ সমস্ত ঘটনায় দুই দেশের প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিকে পুষ্টি যোগালেও ক্ষতিগ্রস্ত ও বিপদে ফেলছে দুই দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও নিরীহ জনগণকে।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পদত্যাগ ও পলায়নের পর থেকে ভারতের এক শ্রেণির উগ্রবাদী মহল পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের প্রতি ঘৃণা ও বিদ্ধেষ ছড়াচ্ছে। সৎ প্রতিবেশি সুলভ আচরণের বদলে ভারতের গণমাধ্যমে বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলার বিষয়ে প্রকৃত তথ্যের বদলে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে সাম্প্রদায়িক উসকানীমূলক প্রচার চালিয়ে পরিস্থিতিকে উত্তপ্ত করে তুলছে, যা অনভিপ্রেত।

বক্তারা বলেন, গত কয়েকদিনে ভারত সরকারের বক্তব্য এবং ভারতে বাংলাদেশ হাই কমিশনে আক্রমণ, বাংলাদেশের পতাকা অবমাননা বাংলাদেশের জনগণকে ক্ষুব্ধ করেছে। ভারত সরকার এর দায় এড়াতে পারে না। অতীতেও সাম্প্রদায়িকতার বিষময় প্রভাব ভারত-বাংলাদেশসহ উপমহাদেশের জনগণ উপলব্ধি করেছে।

সাম্প্রদায়িক শক্তিকে পৃষ্ঠপোষকতা উপমহাদেশকে অশান্তির আগুনে পোড়াবে। বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে সন্দেহ অবিশ্বাস ও তিক্ততা দুই দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও নিপীড়িত জনগণের জীবনকেই বিপন্ন করবে।ভারতের সাথে সম্পর্ক হবে সমমর্যাদার ও বন্ধুত্বপূর্ণ। প্রভুত্বমূলক আচরণ কারও জন্যই ভালো ফল বয়ে আনবে না।

বক্তারা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরেও যে পরিকল্পিত অসন্তোষ ও অরাজকতা তৈরি করা হচ্ছে তার বিষময় প্রভাব সমাজের দীর্ঘদিনের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ধ্বংস করবে। যে কোন ধরনের সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বন্ধে সরকারের জরুরি উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। দেশের প্রধান সমস্যা শোষণ ও বৈষম্য। এর প্রভাবে শ্রমিক-কৃষক, ছাত্র-নারী সকলের জীবন বিপর্যস্ত।

ফ্যাসিবাদী শাসন এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে বাংলাদেশ যখন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রবর্তনের সংগ্রাম করছে তখন সাম্প্রদায়িক সংঘাত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ধ্বংস করবে, ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে বিপন্ন করবে এবং দেশের জনগণের ঐক্য ও সংহতিকে বিনষ্ট করবে।

বক্তারা বলেন,দেশের অভ্যন্তরে কিছু উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে ধর্মীয় বিভাজনমূলক বক্তব্য, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা এবং ব্যক্তিগত আক্রমণের ঘটনা নিন্দনীয়। রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এসব ঘটনা নিয়ন্ত্রণে জরুরিভাবে কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৪ বার

Share Button

Callender

December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031