- জৈন্তাপুরে ছাত্রদলের সাথে হাকিম চৌধুরীর মতবিনিময়
- সোনালী প্রজন্ম মেধাবৃত্তি পরীক্ষা সম্পন্ন
- সিলেট জেলা শ্রমিক দলের কর্মী সভা
- সিলেটে কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে ধানের পোকামাকড় দমন ব্যবস্থাপনা শীর্ষক মাঠ দিবস পালিত
- জুলাই বিপ্লবে জন্ম নেওয়া ‘টিম অনওয়ার্ড’ এর পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা
- মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরীর ইন্তেকালে সিলেট মহানগর জামায়াতের শোক
- জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ সিলেট জেলা উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগর গণসমাবেশ শায়খ জিয়া উদ্দীন
- আগামীকাল ২৪ নভেম্বর জনসভা ও গণমিছিল সফল করুন : বাসদ
- ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাথে প্রবাসী আজমের মতবিনিময়
- সংস্কারের পাশাপাশি নির্বাচনের রোড ম্যাপ ঘোষনা হলে সংশয় দূর হবে
» হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাংলার সমৃদ্ধির প্রতীক ধানের গোলা
প্রকাশিত: ৩০. এপ্রিল. ২০১৬ | শনিবার
সিলেট বাংলা নিউজ ডেস্কঃ আগের নামকরা গেরস্থ বলতে- মাঠ ভরা সোনালি ফসলের ক্ষেত, গোয়াল ভরা গরু, পুকুর ভরা মাছ আর কৃষকের গোলা ভরা ধানকেই বুঝাতো। কিন্তু এসব এখন যেনো প্রবাদ বাক্যে পরিণত হয়েছে। হারিয়ে গেছে গেরস্থের ঐতিহ্যবাহী ধানের গোলা।
দিনাজপুরের গ্রামবাংলার সমৃদ্ধির প্রতীক ধানের গোলা এখন বিলুপ্ত প্রায়। হারিয়ে যাচ্ছে কৃষিক্ষেত ও কৃষকের ঐতিহ্যবাহী গোলা।
মাঠের পর মাঠ ধান ক্ষেত থাকলেও অধিকাংশ কৃষকের বাড়িতে নেই ধান মজুদ করে রাখার বাঁশ বেত ও কাদা দিয়ে তৈরি গোলাঘর।
অথচ এক সময় সমাজের নেতৃত্ব নির্ভর করত কার ক’টি ধানের গোলা আছে এই হিসেব কষে। কন্যা পাত্রস্থ করতেও বর পক্ষের বাড়ী ধানের গোলার খবর নিতো কনে পক্ষের লোকজন। যা এখন শুধু কল্পকাহিনী।
গ্রাম অঞ্চলে বাড়িতে বাড়িতে বাঁশ দিয়ে গোল আকৃতির তৈরী করা ধানের গোলা বসানো হতো উঁচুতে। গোলার মাথায় থাকত টিনের তৈরী মিশরের পিরামিড আকৃতির টাওয়ার। যা দেখা যেত অনেক দুর থেকে।
গ্রাম অঞ্চলে বাড়িতে বাড়িতে বাঁশ, বাঁশের বাতা ও কঞ্চি দিয়ে প্রথমে গোল আকৃতির কাঠামো তৈরি করা হত। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বর্গ অথবা আয়তক্ষেত্র আকারে গোলা তৈরি করা হত। এর পর তার গায়ে ভিতরে ও বাহিরে বেশ পুরু মাটির আস্তরণ লাগানো হত।
এর মুখ বা প্রবেশ পথ রাখা হত বেশ উপরে (ধান বাহির করার জন্য অনেকে নিচে বিশেষ দরজা রাখতেন) যেন চোর/ডাকাতরা চুরি করতে না পারে। ধানের গোলা বসানো হতো উঁচুতে। গোলার মাথায় থাকত বাঁশ ও খড়ের তৈরি বা টিনের তৈরী ছাউনি । যা দেখা যেত অনেক দুর থেকে।
গোলা নির্মাণ করার জন্য বিভিন্ন এলাকায় আগে দক্ষ শ্রমিক ছিল। এখন আর দেশের বিভিন্ন জেলা শহর থেকে আসা গোলা নির্মাণ শ্রমিকদের দেখা মেলে না। পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় নিয়োজিত হয়ে জীবন জীবিকা নির্বাহ করছেন তারা। গোলা নির্মাণের জন্য তাদের সংবাদ দিয়ে আনতে হত।
তারা এসে নানা পরামর্শ করে (মাটি পর্যবেক্ষণ, জায়গা নির্ধারণ) নির্মাণ কাজে হাত দিত। একেকটা গোলা নির্মাণ খরচ পড়ত তার আকার ও শ্রমিক কত লাগবে তার উপর নির্ভর করে। তবে একেকটা গোলা নির্মাণ খরচ পড়ত সেই সময়কার ১০-৩০ হাজার টাকা।
বর্ষার পানি আর ইঁদুর তা স্পর্শ করতে পারত না। মই বেয়ে গেলায় উঠে তাতে ফসল রাখতে হতো। এই সুদৃশ্য গোলা ছিল সম্ভ্রান্ত কৃষক পরিবারের ঐতিহ্য। সে সময় ভাদ্র মাসে কাঁদা পানিতে ধান শুকাতে না পেরে কৃষকরা ভেজা আউশ ধান রেখে দিতো গোলা ভর্তি করে।
গোলায় শুকানো ভেজা ধানের চাল হত শক্ত। কিন্তু সম্প্রতি রাসায়নিক সার, কীটনাশক ও আধুনিক কলের লাঙ্গল যেন উল্টে পাল্টে দিয়েছে গ্রাম অঞ্চলের চালচিত্র। গোলায় তোলার মত ধান আর তাদের থাকে না।
গোলার পরিবর্তে কৃষকরা ধান রাখা শুরু করে বাঁশের তৈরী ক্ষুদ্রাকৃতি ডোলায়। ধান আবাদের উপকরণ কিনতেই কৃষকের বিস্তর টাকা ফুরায়। কৃষকের ধানের গোলা ও ডোলা এখন শহরের বিত্তশালীদের গুদাম ঘরে পরিণত হয়েছে।
কৃষকের ধান চলে যাচ্ছে একশ্রেণীর অসাধু মুনাফালোভী ফড়িয়া ও আড়ত ব্যবসায়ীর দখলে। ইট বালু সিমেন্ট দিয়ে পাকা ইমারত গুদাম ঘরে মজুদ করে রাখা হচ্ছে হাজার হাজার টন ধান-চাল। অনেক ক্ষুদ্র কৃষক বস্তা ও বেরেল ভর্তি করে রাখছে আউশ, আমন ও বোরো মৌসুমে উৎপাদিত ধান-চাল।
দিনাজপুরের তাজু সরকার জমিদার ছিলেন। দান করেছেন অনেক সম্পত্তি। দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ঐতিহ্যবাহী খোসাল ডাঙ্গার হাটটি’র সম্পত্তি তারই দেয়া। সেখানে এখন স্কুল-মাদ্রাসা আর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি স্তম্ভ গড়ে উঠেছে। ওই সম্পত্তি অপব্যবহার করে ‘পরের ধনে পোদ্দারী’ করেছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা।
তবে গ্রাম এলাকায় এখনো বাপ-দাদার ঐতিহ্যবাহী গোলা রক্ষায় ধনী শ্রেণীর কৃষকরা বাঁশের তৈরি গোলা ধরে রেখেছেন।
বাস্তবতা বড়ই নিষ্ঠুর। আগামী প্রজন্মের কাছে গোলা ঘর একটি স্মৃতিতে পরিণত হয়েছে। আধুনিক গুদাম ঘর ধানচাল রাখার জায়গা দখল করছে। ফলে গোলা ঘরের ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে।
এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৭৫০ বার
সর্বাধিক পঠিত খবর
- হত্যা না করেও ২৬ জনের উপর হত্যা মামলার করলো আওয়ামী লীগ
- সুনামগঞ্জ জেলায় নির্বাচনী হাওয়া; সরেজমিন প্রতিবেদন
- জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শাহীন আলী গ্রেফতার; উত্তাল দক্ষিণ সুরমা
- তালাকনামা জালিয়াতির দায়ে বিশ্বনাথে কাজী গ্রেফতার; ৭ জন আসামীর উপর গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী
- কিডনী রোগীদের জরুরী তথ্য কণিকা জানা আবশ্যক