শিরোনামঃ-

» মাওলানা নিজামীর মৃত্যুদণ্ড বাতিলের আহ্বান অ্যামনেস্টির

প্রকাশিত: ০৮. মে. ২০১৬ | রবিবার

সিলেট বাংলা নিউজ ডেস্কঃ জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ড বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

নিজামীর চূড়ান্ত মৃত্যুদণ্ড রায়ের পর সংস্থার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ আহ্বান জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের উচিত মতিউর রহমান নিজামীর আসন্ন মৃত্যুদণ্ড স্থগিত রাখা এবং মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ব্যাপারে স্থগিতাদেশ আরোপ করা। দেশটির সুপ্রিম কোর্ট আজ নিজামীর চূড়ান্ত আবেদন নাকচ করে দেয়।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীর বর্তমান প্রধান মতিউর রহমান নিজামীকে অক্টোবর ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি), বাংলাদেশ, মৃত্যুদণ্ড প্রদান করে। তাকে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে সংঘটিত হত্যা, ধর্ষণ এবং বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ার অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রচারাভিযান পরিচালক, জামিন কর বলেন, “সুপ্রীম কোর্টের মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে এ মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার সিদ্ধান্তে আমরা ভীত। একাত্তরের ভয়াবহ মুক্তিযুদ্ধে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি ন্যায়বিচার তাদের প্রাপ্য। কিন্তু এর সাথে সাথে আমরা এটাও বিশ্বাস করি যে মৃত্যুদণ্ড কিছুতেই এই অন্যায়ের জবাব হতে পারে না।“ “আরেকটা জীবন নিয়ে নেয়া মানে সহিংসতার এ চক্রকে চিরস্থায়ী করা।

আমরা বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি পরবর্তী সংকটের কথা বিবেচনায় রেখে অবিলম্বে এই মৃত্যুদণ্ড আরোপে স্থগিতাদেশ ঘোষণা করা হোক।“ সরকারের দায়িত্ব যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে জবাবদিহি নিশ্চিত করা। এটি অবশ্যই ইতিবাচক সবার জন্য যে এ পথে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে অগ্রসর হয়েছে।

কিন্তু অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং জাতিসংঘসহ বেশ কিছু বিশ্বাসযোগ্য প্রতিষ্ঠান আইসিটির বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতার ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দেহ প্রকাশ করেছে। অথচ বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি সম্পূর্ণ এড়িয়ে গেছে।

জামিন কর আরো বলেন, “অতীতের নৃশংসতায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের এ ত্রুটিপূর্ণ বিচারপ্রক্রিয়া দিয়ে ভোলানো ঠিক হবে না। আজকের সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যে বাংলাদেশ জুড়ে বিক্ষোভের আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সবার উচিত কোন রকম সহিংসতার সৃষ্টি যেন না হয় সে ব্যাপারে সজাগ থাকা।

নিরাপত্তা বাহিনীর শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করার অধিকারকে সম্মান করতে হবে এবং একই সাথে সব পক্ষের রাজনৈতিক নেতাদের নিশ্চিত করতে হবে মানবাধিকার লংঘন করা থেকে তাদের সমর্থকেরা যাতে বিরত থাকে।“

“অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল মৃত্যুদণ্ডের বিরোধীতা করে সর্বাবস্থায়। অপরাধ বা অপরাধীর চরিত্র যাই হোক না কেন এ মনোভাবের কোন পরিবর্তন হবে না।”

এর আগে কমপক্ষে ১৯৭ জনকে ২০১৫ সালে বাংলাদেশ মৃত্যুদণ্ডে দন্ডিত করেছে। এর মধ্যে চারজন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) মৃত্যুদণ্ডের সাজা পেয়েছে।

২০১৫ সালে বাংলাদেশ চারজনের মৃত্যুদণ্ডের কার্যক্রম সম্পাদন করেছে এদের তিন জন আইসিটি দ্বারা দন্ডিত হয়েছে। ২০১০ সালে বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশ যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে ১৯৭১ সালে সংগঠিত মানবাধিকার বিরোধী সকল অপরাধের সাজা প্রদানের জন্য।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সরকারের এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানালেও স্বচ্ছ বিচারপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে যাতে আসল অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয় সে বিষয়ে গুরুত্ব দেয়ার ব্যাপারে বলেছিল। তারপরও ট্রাইব্যুনালের বিচারকার্যের বিরুদ্ধে বিগত মামলাগুলোয় গুরুতর অনিয়ম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ জানা গেছে।

এই সংবাদটি পড়া হয়েছে ৪৭৯ বার

Share Button

Callender

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930